করোনাভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে থাকায় আগেই হাসপাতাল নির্মাণের ঘোষণা দিয়েছিল চীন। সে অনুযায়ী রাতারাতি হাসপাতাল তৈরির কাজও শেষ করে ফেলেছে তারা। একটি খালি ভবনে দুই দিন টানা কাজ করে এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট একটি মেডিকেল সেন্টারে রূপান্তর করা হয়েছে।
Advertisement
উহান শহরের কাছেই অবস্থিত ওই হাসপাতালটি চালু করা হয়েছে। করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের ডেবি মাউন্টেন রিজিওনাল মেডিকেল সেন্টারে স্থানান্তর করা হবে বলে স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে জানানো হয়েছে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এই কাজে সহযোগিতা করায় লোকজনকে ধন্যবাদ জানিয়েছে। এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ৪৮ ঘণ্টার দীর্ঘ পরিশ্রমে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। নির্মাণ সংস্থা, ইউটিলিটি কোম্পানি এবং আধাসামরিক পুলিশ কর্মকর্তারা যৌথভাবে এই কাজে সহায়তা করায় তাদের ধন্যবাদ।
হুয়াংঝু জেলায় নির্মিত ওই হাসপাতাল ভবনটি মূলত হুয়ানগ্যাং সেন্ট্রাল হাসপাতালের একটি নতুন শাখা। এটি আগামী মে মাসে চালু করার কথা ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষ ওই হাসপাতালকে এখন করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার জন্য ব্যবহারের চিন্তা করেছে।
Advertisement
ওই ভবনের কাজ ইতোমধ্যেই শেষ হয়ে গেলেও তা খালিই পড়ে ছিল। গত শুক্রবার স্থানীয় কর্তৃপক্ষ সেখানে শুধুমাত্র করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসার নির্দেশ দিয়েছে।
সোমবার স্বেচ্ছাসেবিরা সেখানে এক হাজার শয্যা স্থাপন করেছেন। এছাড়া পানি, বিদ্যুৎ এবং ইন্টারনেট সংযোগ দেওয়া হয়েছে। পাঁচ শতাধিক শ্রমিক এবং কয়েক ডজন ভারী যানবাহন দিয়ে গত দুই দিন টানা কাজ করে হাসপাতালের কাজ শেষ করা হয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা নতুন এই ভাইরাসের নাম দিয়েছে ২০১৯ নভেল করোনাভাইরাস। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা গেছে চীনে সফর করেছেন এমন লোকজনের মাধ্যমেই এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ছে। সে কারণে অনেক দেশই এই ভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে চীন সফরে নাগরিকদের ওপর নিষেধাজ্ঞা এনেছে।
এই ভাইরাস বিপজ্জনক হয়ে উঠছে কারণ এ বিষয়ে এখনও ভালোভাবে জানা সম্ভব হয়নি। বিশেষ করে এই ভাইরাস কতটা বিপজ্জনক এবং এটা একজন থেকে আরেকজনের শরীরে কীভাবে ছড়িয়ে পড়ছে এ বিষয়গুলো এখনও পরিষ্কার নয়।
Advertisement
এখন পর্যন্ত এটা জানা সম্ভব হয়েছে যে, এই ভাইরাস থেকে নিউমোনিয়া হবার আশঙ্কা রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই এটা অনেক ভয়াবহ হতে পারে। অপরদিকে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের ক্ষমতা আরও প্রবল হচ্ছে এবং সংক্রমণ আরও বাড়তে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছে চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন।
মূলত চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে গত বছরের ডিসেম্বরে প্রথম এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়। সামুদ্রিক খাবারের একটি বাজার থেকেই এই ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়েছে বলে ধারণা করা হয়। এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ১৩২ জন মারা গেছে। আক্রান্ত হয়েছে প্রায় ছয় হাজার মানুষ।
চীনের গণমাধ্যম সিনহুয়ায় এক বিশেষজ্ঞের বরাতে বলা হয়েছে, আগামী ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা সর্বোচ্চ আকার ধারণ করতে পারে। চীন ছাড়াও ১৮ টি দেশের ৭৮ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
টিটিএন/জেআইএম