সমসাময়িক সমস্যা ও সম্ভাবনা নিয়ে সমাধান আর বাস্তবতা মাথায় রেখেই কাজ করেন সমাজের অগ্রগামী কিছু মানুষ। সমাজ সংস্কারক, নির্দেশক, চিত্রশিল্পী, লেখক তথা সকল শিল্পী। এমনকি কিছু ব্যবসায়ীও। তাদের চিন্তাকে তারা মানুষের কাছে পৌঁছানোর সব ধরনের চেষ্টা করেন। আরও উন্নত সমাজ প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে।
Advertisement
আসলে প্রকৃতিগতভাবেই কিছু মানুষ আলাদা বৈশিষ্ট্য নিয়ে আসেন পৃথিবীতে। সমাজের কোনায় কোনায় কিংবা পৃথিবীর প্রান্তে প্রান্তে আলাদা প্রগতিশীল চিন্তার কারণেই পৃথিবী সামনের দিকে এগিয়ে চলেছে। যখনই ভালো চিন্তার সাথে সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ শামিল হয়, তখনই সামাজিক বিপ্লব ঘটে।
ইউরোপে বিপ্লব শুরুর আগে মানুষ যেখানে সেখানে বই পড়তে শুরু করেছিল। আমাদের শিল্পমাধ্যমেও এই মুহুর্তে দারুণ কিছু মঞ্চনাটক মঞ্চায়িত হচ্ছে। তেমনি কিছু মঞ্চনাটকের মধ্যে হৃদি হকের ‘আকাছে ফুইটেছে ফুল’, পান্থ শাহরিয়ারের ‘ধলেশ্বরী অপেরা’, মাসুম রেজার ‘জলবাসর’, মুক্তনীলের ‘হিমুর কল্পিত ডায়েরি’- এই ধরনের কাজ নিকুল কুমার মন্ডলকে ‘ফানুস’ গল্পটা বলবার জন্য সাহস যুগিয়েছে।
আসছে মার্চ মাসে মঞ্চে আসবে ‘ফানুস’। এটি রচনা, সংলাপ, চিত্রনাট্য রচনার পাশাপাশি পরিচালনাও করেছেন নিকুল কুমার মন্ডল। গেল ২৪ জানুয়ারি বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ১ নম্বর মহড়া কক্ষে কলাকুশলীদের নিয়ে মহড়ায় অংশ নিয়েছেন তিনি।
Advertisement
নির্দেশকের ভাষায় এটি মঞ্চ সিনেমা। তিনি বলেন, ‘‘ফানুস’ গল্পটা সমসাময়িক সমস্যা ও বাস্তবতার ফিউশানে উপস্থাপিত। মানুষ মানুষকে ক্ষমা করে আবার মালিক যিনি অদৃশ্য ঈশ্বর বা ভগবান বা আল্লাহ তিনিও মানুষকে ক্ষমা করেন। কিন্তু প্রকৃতি মানুষকে ক্ষমা করে না। এমনই এক ভাবনাকে আঁকড়ে ধরে এর গল্প।’
‘ফানুস, যে আগুনে আত্মহারা আনন্দে ফুলেফেঁপে দূর আকাশে পুড়ে হয় ছাই, মানুষ তার জ্ঞানত/অজ্ঞানত ভুলের বেড়াজালে আবদ্ধ রয়’- এই বক্তব্যকে উপজীব্য করেই নির্মিত ‘ফানুস’। নির্দেশকের ভাষায়, ‘জনগণই যে সমাজ সংস্কারের মূল হাতিয়ার সে কথাই বলতে চেষ্টা করেছি এখানে।’
তিনি আরও বলেন, ‘মঞ্চ -নাটকের প্রায়োগিক ভাষা কৌশল, উপস্থাপন সবকিছুই আধুনিক মানুষের কাছাকাছি যাবার জন্য যথেষ্ট নয়। কিন্তু আমার চিন্তার দৃশ্যমান উপস্থাপনের জন্য মঞ্চই উত্তম। তাই ‘ফ্রাইডে থিয়েটার’ নিয়ে চেষ্টা করে যাচ্ছি ‘ফানুস’ গল্পটি মঞ্চায়নের ক্ষেত্রে আধুনিক সরঞ্জামের বাঙলা, হিন্দি, ইংরেজি নাচ-গান, প্রজেক্টর সবকিছুর সর্বাধিক ব্যবহারের মাধ্যমে বাণিজ্যিকভাবে দর্শকের সামনে তুলে ধরতে।
সেজন্য আমরা ভাষাগত দিকেও ‘ফানুস’ গল্পটিকে বলছি, লিখছি মঞ্চ-সিনেমা। আমরা স্বল্প সময়ে সর্বাধিক মানুষের কাছাকাছি যেতে চাই সহজভাবে। ‘ফানুস’ নাচগানে ভরপুর বাণিজ্যিক ধারার গল্প। মঞ্চে প্রদর্শন হলেও এটি অনুভবে বাণিজ্যিক সিনেমা।’
Advertisement
‘ফানুস’ মঞ্চ-সিনেমায় কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন চৈতী চক্রবর্তী। আরও আছেন তারেক, পাইলট, সাকিব, আলি নূর, আপন, শাওন, কাউছার, সোহান, সাগর, রাহাত, জাহিদ, সাগর রেইন, ইতিশা, জীবন, আহমেদ জীবন, এলিন, রাজুসহ অনেকে।
এর সঙ্গীত করেছেন শান স্বপন, পোশাকে আছেন ফারজানা এনি, আলোকসজ্জায় তানজিল, রূপসজ্জায় তন্ময়, প্রজেকশনে মোহাম্মদ সাগর, প্রকাশনায় বিজয় খান হাসু, মঞ্চ-ব্যবস্থাপনায় সজীব ও প্রযোজনায় ফ্রাইডে থিয়েটার।
প্রসঙ্গত, ‘ফানুস’ ১৮ বছরের বেশি বয়সীদের জন্য প্রদর্শনী'র বিনিময়ে প্রদর্শিত হবে।
এলএ/এমকেএইচ