জাতীয়

শাহজালালে বিশেষ পর্যবেক্ষণে চীনফেরত যাত্রীরা

উহানের প্রাণঘাতী নভেল করোনাভাইরাসটি এখন বিশ্ববাসীর কাছে নতুন আতঙ্কের নাম। চীনে উৎপিত্ত লাভ করা এই ভাইরাস চীনের নাগরিক ও পর্যটকদের মাধ্যমে ইতোমধ্যে অন্য দেশেও ছড়িয়েছে। বাণিজ্য, শিক্ষা, পর্যটনসহ নানা ক্ষেত্রে চীনের সঙ্গে যোগাযোগ বেশি থাকায় বাংলাদেশও এ ভাইরাসের ঝুঁকির বাইরে নয়। সঙ্গত কারণেই চীন থেকে বাংলাদেশে আসা সব যাত্রীকে বিমানবন্দরে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। ভাইরাস শনাক্তকরণে বিশেষ উপায়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে।

Advertisement

সতর্কতা হিসেবে দেশের সব আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, প্রধান স্থলবন্দর ও সমুদ্রবন্দরে চীনফেরত যাত্রীদের পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এদিকে চীনে আটকে পড়া বাংলাদেশিদের ফিরিয়ে আনতে প্রয়োজনে বিমানের বিশেষ ফ্লাইট পাঠানোর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম।

স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ এ রোগ সংক্রমণের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তবে সতর্কতা হিসেবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থেকে, নাক-মুখ ঢেকে হাঁচি-কাশি দেয়া ও ফ্লু আক্রান্তদের থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসকরা।

করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রধান লক্ষণ শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও কাশি। ভাইরাস সংক্রমণের পর দেহে বিস্তার ঘটতে পাঁচ-সাত দিন সময় লাগে। প্রথমে আক্রান্তের জ্বর হয় এরপর শুকনা কাশি ও এক সপ্তাহ পর শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। ভাইরাসটি নতুন হওয়ায় এখনও এর প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। তাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থেকে এবং ভিড় এড়িয়ে চলার পরামর্শ চিকিৎসকদের।

Advertisement

বিষয়টি নিয়ে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদি সাবরিনা ফ্লোরা বলেন, চীন থেকে আগত বিমানগুলোকে আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। বিমানবন্দরে যখন বিমান অবতরণ করে ওই মুহূর্তে যাত্রীদের লক্ষণীয় কোনো উপসর্গ আছে কিনা তা দেখি। যদি ওই মুহূর্তে কিছু ধরা না পড়ে, পরে বাসায় গিয়ে যদি কোনো লক্ষণীয় উপসর্গ দেখা দেয়, বোঝার জন্য আমরা তাদের স্বাস্থ্য তথ্য কার্ড দেই।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সতর্কতা হিসেবে মাস্ক ব্যবহার, পরিচ্ছন্ন থাকা ও নিয়মিত হাত ধোয়ার পরামর্শ দিয়েছে। হাঁচি-কাশির সময় নাক-মুখ ঢেকে রাখতে হবে, দূরে থাকতে হবে ঠান্ডা ও ফ্লু আক্রান্তদের থেকে।

এ বিষয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন তৌহিদ উল আহসান জাগো নিউজকে বলেন, বিমানবন্দরের সর্বাত্মক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। চীন থেকে আসা যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে বিশেষ একটি প্রক্রিয়ায়। আমাদের পদক্ষেপগুলো এখন কার্যকর। তাই এই ভাইরাস সম্পর্কে ভয় পাওয়ার কারণ নেই।

চীনের উহান শহরের একটি মাছের বাজার থেকে এ ভাইরাসটি ছড়িয়েছে। নিউমোনিয়াসদৃশ এ ভাইরাসটি নতুন এক ধরনের করোনা ভাইরাস। নভেল করোনাভাইরাস, উহান করোনাভাইরাস, উহান ফ্লু, উহান সি ফুড মার্কেট নিউমোনিয়া ভাইরাস ও উহান নিউমোনিয়া নামে বিশ্বব্যাপী পরিচিত হয়েছে ভাইরাসটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা একে বলছে 2019-nCoV।

Advertisement

আরএম/এনএফ/এমএস