বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম যশোর পৌরসভার মেয়র মারুফুল ইসলামসহ বিএনপির গুরুত্বপূর্ণ ৩৪ নেতার নামে যশোরে নাশকতার আরেকটি মামলা হয়েছে। এই মামলায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুকে আটক দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আটক জেলা সাধারণ সম্পাদকের কাছ থেকে পাঁচটি বোমা উদ্ধার দেখানো হয়েছে। মামলার আসামিদের মধ্যে একজন কারাগারে আটক রয়েছেন। আর তরিকুল ইসলাম, জেলা সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকনসহ বেশ কয়েকজন রয়েছেন ঢাকায়।রোববার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে আটটি গাড়িতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিশাল বহর ঘিরে ফেলে যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবুর উপশহরের বাসভবন। তারা ওই বাড়ি থেকে সাবুকে আটক করে নিয়ে আসে বলে রাতেই মিডিয়া কর্মীদের জানান তার স্ত্রী হেলেন আফরোজা। রাত সোয়া দুইটার সময় কোতয়ালি থানা পুলিশের ওসি শিকদার আককাছ আলী অ্যাডভোকেট সাবুকে আটকের কথা স্বীকার করেন।ওই রাত এবং সোমবার দিনভর অ্যাডভোকেট সাবুকে কোতয়ালি থানা হেফাজতে রাখা হয়। উপশহর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই ইউছুফ হোসেন বিকেল তিনটার দিকে কোতয়ালি থানায় অ্যাডভোকেট সাবুসহ বিএনপির ৩৪ জন নেতাকর্মী এবং অজ্ঞাত আরও কিছু ব্যক্তির নামে কোতয়ালি থানায় একটি মামলা করেন। ১৯৭৪ সালের স্পেশাল পাওয়ার্স অ্যাক্টের ১৫(৩)/২৫-ডিসহ ১৯০৮ সালের বিস্ফোরক উপাদানাবলী আইনের ৪/৬ ধারায় রুজু করা মামলার এজাহারে দাবি করা হয়েছে, ‘আসামিরা বর্তমান গণতান্ত্রিক সরকারের গণমুখী কার্যক্রমের বিরোধিতা করিয়া অগণতান্ত্রিক পথে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করার পাঁয়তারা করিয়া আসিতেছে। বিভিন্ন সময় তাহারা আন্দোলনের নামে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উপর আক্রমণ, বোমাবাজি, দোকানপাট, পেট্রোলপাম্প, বৈদ্যুতিক স্থাপনাসহ সরকারি-বেসরকারি বহু গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় অগ্নিসংযোগসহ মানুষের জীবন এবং সম্পদের ব্যাপক ক্ষতিসাধন করিয়া আসিতেছে। আসামিরা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড করার উদ্দেশ্যে উপশহর পার্কের প্রধান গেটের সামনে পাকা রাস্তার পাশে মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্র, হাতবোমা, পেট্রোলবোমা, লাঠিসোটা ইত্যাদিতে সজ্জিত দেখিয়া সঙ্গীয় ফোর্সসহ ধাওয়া করে। এজাহারে দাবি করা হয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, আবদুল জলিল ও মাসুদ রানাকে আটক করা হয়। উদ্ধার হয় পাঁচটি বোমা ও বাঁশের লাঠি।বিকেলে অ্যাডভোকেট সাবেরুল হক সাবুসহ তিনজনকে যশোরের অতিরিক্ত চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মৃত্যুঞ্জয় মিস্ত্রির আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাদের জামিনের আবেদন নাকচ করে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।মামলায় যাদের আসামি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, নগর বিএনপির সভাপতি ও পৌরসভার মেয়র মারুফুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মুনির আহমেদ সিদ্দিকী বাচ্চু, জেলা কমিটির সহ-সভাপতি রফিকুর রহমান তোতন, অ্যাডভোকেট জাফর সাদিক, সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, প্রচার সম্পাদক ও পৌরসভার কাউন্সিলর হাজী আনিসুর রহমান মুকুল, তরিকুল ইসলামের ছেলে ও জেলা কমিটির সদস্য অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সদর উপজেলা কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ নূরুন্নবী, প্রয়াত সভাপতি চৌধুরী শহিদুল ইসলাম নয়নের ছেলে রফিকুল ইসলাম ওরফে মুল্লুক চান, তার ভাই রিপন চৌধুরী, জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের জেলা সভাপতি কলেজ শিক্ষক ফিরোজা বুলবুল কলি, জেলা যুবদল সভাপতি এহসানুল হক মুন্না, সহ-সভাপতি ও নগর সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান ধনী, যুগ্ম সম্পাদক তমাল আহমেদ, পৌরসভার কাউন্সিলর আজিজুল কামাল সুইট, নগর বিএনপির সাত নম্বর ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন প্রমুখ।মিলন রহমান/এমএএস/আরআইপি
Advertisement