রাজধানীসহ সারাদেশে পানিবাহিত কলেরা রোগে বছরে লক্ষাধিক নারী-পুরুষ-শিশু আক্রান্ত হচ্ছে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা যাচ্ছে সাড়ে চার হাজার মানুষ। সারাদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে কলেরায় আক্রান্ত রোগী পাওয়া গেলেও ঘনবসতিপূর্ণ রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন এলাকা কলেরার উচ্চ ঝুঁকিপ্রবণ।
Advertisement
নগর বাসিন্দাদের কলেরা আক্রান্ত হওয়া ও মৃত্যু ঝুঁকি থেকে রক্ষা করতে কলেরা ভ্যাকসিন চালুর চিন্তাভাবনা করছে সরকার। স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে অধিদফতরের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, রাজধানীসহ সারাদেশে বছরে প্রায় ২৪ লাখ মানুষ পানিবাহিত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়। ডায়রিয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেশি বলে ডায়রিয়া রোগী নিয়ে বেশি আলোচনা হয়। সে তুলনায় কলেরার ঝুঁকি নিয়ে আলোচনা অপেক্ষাকৃত কম হয়। অথচ ডায়রিয়ার তুলনায় কলেরায় মৃত্যুঝুঁকি বেশি বলে ওই কর্মকর্তা জানান।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) এবং পরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) সংক্রমণ ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ অধ্যাপক ডা. সানিয়া তহমিনা জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে জানান, নগরের বাসিন্দাদের কলেরায় আক্রান্ত হওয়া ও মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি প্রকল্পের আওতায় উত্তর এবং দক্ষিণ ঢাকা সিটি করপোরেশনের তিনটি করে ছয়টি এলাকায় মোট ২৫ হাজার মানুষকে বিনামূল্যে কলেরা ভ্যাকসিন দেয়ার চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। ভ্যাকসিন প্রদানের ক্ষেত্রে শিশু ও অপেক্ষাকৃত বৃদ্ধদের প্রাধান্য দেয়া হবে।
Advertisement
কলেরা ভ্যাকসিন প্রদান প্রকল্পটি কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে অদূর ভবিষ্যতে সারাদেশে সরকারিভাবে কলেরা ভ্যাকসিন প্রবর্তন করা হতে পারে। তিনি বলেন, ইতোমধ্যে কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের কলেরা ভ্যাকসিন প্রদানের ফলে সে এলাকায় কলেরা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বহুলাংশে কমে গেছে।
আইসিডিডিআরবির সিনিয়র সাইন্টিস্ট ড. ফেরদৌসি কাদরী বলেন, ঢাকা মহানগরীর মোট এলাকার ৪০ শতাংশ কলেরা ঝুঁকিপ্রবণ। বিশেষ করে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এ রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। তিনি জানান, ২৮ থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে টাইফয়েড, কলেরা, অপুষ্টি এবং অন্ত্রের অন্যান্য রোগের চ্যালেঞ্জ ও সমাধান নিয়ে ডায়রিয়া এবং পুষ্টিবিষয়ক সম্মেলন (অ্যাসকড) শুরু হচ্ছে। সম্মেলনে ১৮টি দেশের ৮১ জন চিকিৎসক ও জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞসহ সাড়ে ৪০০ মানুষ অংশ নেবে। সেখানে কলেরা রোগটি নিয়ে আলোচনা হবে।
এমইউ/এনএফ/পিআর
Advertisement