আন্তর্জাতিক

চীন থেকে দূতাবাস কর্মকর্তাদের ফিরিয়ে নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র

চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের মার্কিন দূতাবাস থেকে কর্মকর্তাদের ফিরিয়ে নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দফতর। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একটি বিশেষ বিমানে করে ওই মার্কিন কর্মকর্তাদের দেশে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।

Advertisement

রোববার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সীমিত আসনের একটি বিমানের ফ্লাইটে উহান থেকে দূতাবাস কর্মকর্তাদের ফিরিয়ে আনা হবে। তাদের সঙ্গে বেশ কয়েকজন সাধারণ নাগরিককেও ফিরিয়ে আনা হবে বলে জানানো হয়েছে।

গত ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরেই প্রথম এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটে। তারপর থেকেই চীনের বিভিন্ন শহরে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশই উহানের বাসিন্দা।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ওই বিবৃতিতে জানিয়েছে, আগামী ২৮ জুন উহান থেকে সান ফ্রান্সিসকোর উদ্দেশে ছেড়ে যাবে বিমানের একটি সিংগেল ফ্লাইট। ওই ফ্লাইটে করে অল্প সংখ্যক সাধারণ নাগরিকও দেশে ফিরতে পারবেন। ওই নাগরিকরা ইতোমধ্যেই বেইজিংয়ে মার্কিন দূতাবাসে যোগাযোগ করেছেন।

Advertisement

ওই বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, ওই বিমানের ধারণ ক্ষমতা কম। যদি সবাইকে এক সঙ্গে নিয়ে যাওয়া সম্ভব না হয় তবে এক্ষেত্রে করোনাভাইরাসের বেশি ঝুঁকিতে আছে এমন লোকজনকে আগে প্রাধান্য দেওয়া হবে।

উহানে এক কোটি ১০ লাখ মানুষের বাস। সেখান থেকে এই ভাইরাস খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। তবে সরকার যতটা বলছে তার চেয়েও পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে পড়েছে। এখন পর্যন্ত সেখানে প্রায় এক লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে এক চিকিৎসা কর্মী দাবি করেছেন। উহান থেকে এই ভাইরাসের বিস্তার রোধ করতে গণপরিবহন, বিমান চলাচল ও রেল সেবা বাতিল করা হয়েছে।

উহান শহরের হাসপাতালে কর্মরত এক নার্সের দাবি, সেখানে ইতোমধ্যেই এক লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মাস্ক পরে হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত রয়েছেন ওই নার্স। তিনি বলছেন, সরকারিভাবে যে সংখ্যা বলা হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে আক্রান্তের সংখ্যা আরও কয়েক গুণ বেশি।

চীনে প্রাদুর্ভাব ঘটলেও বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া, নেপাল, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, ফ্রান্স এবং যুক্তরাষ্ট্রেও লোকজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। সম্প্রতি ইসরায়েলে এক ব্যক্তি এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে সন্দেহ করছে কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলো হলো জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট। সেভার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম (সার্স) ঘরানার এই ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়। এ ভাইরাসে আক্রান্ত হলে শুরুতে জ্বর ও শুষ্ক কাশি হতে পারে। এর সপ্তাহখানেক পর শ্বাসকষ্টও দেখা দেয়। অনেক সময় নিউমোনিয়াও হতে পারে।

ফ্রান্স এবং অস্ট্রেলিয়াসহ অন্যান্য দেশও তাদের নাগরিকদের উহান থেকে দেশে ফিরিয়ে নিচ্ছে। এদিকে, চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী শনিবার এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, তারা যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে সব ধরনের সহায়তা প্রদান করবে।

টিটিএন/এমএস