আন্তর্জাতিক

করোনাভাইরাস : জাপানে মিষ্টির দোকানে চীনা পর্যটকদের প্রবেশে বাধা

করোনাভাইরাসের আতঙ্কে জাপানের একটি মিষ্টির দোকানে চীনা নাগরিকদের প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছে। ওই দোকানের মালিক এই ভাইরাস থেকে নিজেকে রক্ষা করতে কোনো চীনা পর্যটককে সেখানে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন না বলে ডেইলি মেইলের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

Advertisement

দোকানের বাইরে তিনি একটি ব্যানার ঝুলিয়ে রেখেছেন যেখানে লেখা রয়েছে, কোনো চীনা নাগরিকের প্রবেশের অনুমতি নেই। এই ঘটনা জাপানের কানাগাওয়ার হাকোন এলাকার। তবে ওই দোকানের মালিকের নাম জানা যায়নি।

চীনা নববর্ষে লোকজনের জাপানে ঘুরতে যাওয়ার হিরিক পড়ে। চীনা নাগরিকদের কাছে ছুটি কাটানোর জন্য জাপান বেশ জনপ্রিয়। এখন পর্যন্ত জাপানে দুইজনের করোনাভাইরাসে আক্রান্তের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।

মিষ্টির দোকানের ওই মালিক একটি স্থানীয় গণমাধ্যমকে বলেন, আমি করোনাভাইরাস থেকে নিজেকে রক্ষা করতে চাই। আমি চাই না কোনো চীনা পর্যটক এখানে আসুক। চীনের উহান শহরে প্রথমবারের মতো এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটে। বর্তমানে অস্ট্রেলিয়া, নেপাল, মালয়েশিয়া, ভিয়েতনাম, সিঙ্গাপুর, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, থাইল্যান্ড, ফ্রান্স এবং যুক্তরাষ্ট্রেও লোকজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে।

Advertisement

চীনে এখন পর্যন্ত এই ভাইরাসে ৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। অপরদিকে, করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসা দিতে গিয়ে উহান শহরে এক চিকিৎসকের মৃত্যু হয়েছে। সেখানকার পরিস্থিতি খারাপের দিকেই যাচ্ছে। উহানের একটি সামুদ্রিক খাবারের বাজার থেকেই এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

চীনের উহান শহরে প্রায় এক কোটি ১০ লাখ মানুষ বসবাস করে। বৃহস্পতিবার থেকে শহরটি কার্যত বন্ধ হয়ে আছে। ওই শহরের সঙ্গে অন্যান্য শহরের যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সেখানকার বিমানের সব ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। হুবেই প্রদেশে সব ধরনের যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা আনা হয়েছে।

সরকার যতটা বলছে তার চেয়েও পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে পড়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত সেখানে প্রায় এক লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে এক চিকিৎসা কর্মী দাবি করেছেন।

উহান শহরের হাসপাতালে কর্মরত এক নার্সের দাবি, সেখানে ইতোমধ্যেই এক লাখ মানুষ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মাস্ক পরে হাসপাতালে রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত রয়েছেন ওই নার্স। তিনি বলছেন, সরকারিভাবে যে সংখ্যা বলা হচ্ছে প্রকৃতপক্ষে আক্রান্তের সংখ্যা আরও কয়েক গুণ বেশি।

Advertisement

এরই মধ্যে যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষকরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, এই ভাইরাসের সংক্রমণ চীনের পক্ষে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে না। একাধিক শহরে ঢোকা এবং শহর থেকে বের হওয়ার ব্যাপারে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হলেও ইতোমধ্যেই অনেক শহরেই এই ভাইরাসের বিস্তার ঘটেছে।

চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম পিপল'স ডেইলি জানিয়েছে, জরুরি সেবাদানের লক্ষ্যে ১৩শ শয্যাবিশিষ্ট দ্বিতীয় একটি হাসপাতালের নির্মাণকাজ শুরু করা হবে এ সপ্তাহের মধ্যেই। এক হাজার শয্যাবিশিষ্ট একটি হাসপাতালের নির্মাণকাজ ইতোমধ্যেই শুরু হয়েছে

টিটিএন/এমএস