চীনে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে বেনাপোল স্থলবন্দরের চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে সতর্কতা জারি করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। এ পথে ভারত থেকে আগত বিদেশি নাগরিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শুরু করেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা।
Advertisement
শনিবার (২৫ জানুয়ারি) ভারত থেকে বাংলাদেশে আসার পথে এক আইরিশ, চারজন অস্ট্রেলিয়ান, দুজন কানাডিয়ান ও একজন আমেরিকানসহ আটজন বিদেশির করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয়। এসব বিদেশির করোনাভাইরাস পরীক্ষা করেন বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে দায়িত্বরত স্বাস্থ্য বিভাগের চিকিৎসক হাসানুজ্জামান।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের উহান শহরে একটি নতুন ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দেয়। ভাইরাসটি চীনের পূর্বাঞ্চলের একটি মাছের বাজার থেকে ছড়িয়েছে। জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে ভাইরাসটি ভয়াবহ সার্স ভাইরাসের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত। গত ৩১ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ৪১ জন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। মারাও গেছেন কয়েকজন। এজন্য এটি নিয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগেশনে কর্মরত উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ বলেন, চীনে করোনাভাইরাস ব্যাপকহারে ছড়িয়ে পড়ছে। ইতোমধ্যে আক্রান্ত হয়ে অনেকেই মারা গেছেন। বাংলাদেশে এই ভাইরাস যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সেজন্য দেশের সব ইমিগ্রেশন চেকপোস্টে চিঠি দিয়ে সতর্কতা জারি করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। বাংলাদেশে আসা বিদেশিদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছি আমরা। ভাইরাসের লক্ষণ সম্পর্কেও সচেতন করছি তাদের।
Advertisement
ভারত থেকে আগত বিদেশি নাগরিকদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা
এই রোগের লক্ষণ কি জানতে চাইলে মেডিকেল কর্মকর্তা আব্দুল মজিদ বলেন, সাধারণত জ্বর, মাথা ব্যথা, ঠান্ডা কাশি, সমস্ত শরীর ব্যথা অনুভবসহ নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দিতে পারে। যা থেকে নিউমোনিয়ার মতো গুরুতর রোগ মৃত্যুর কারণ হতে পারে। এ রোগের কোনো ওষুধ নেই। নিবিড় পরিচর্যার মাধ্যেমে করোনাভাইরাসের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। চীন থেকে বাংলাদেশে আসা সব যাত্রীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর প্রবেশের অনুমতি দিতে সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আক্রান্ত রোগীর অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি।
বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খোরশেদ আলম বলেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত কোনো পাসপোর্টযাত্রী যাতে দেশে প্রবেশ করতে না পারেন সেজন্য স্বাস্থ্য কর্মীদেরকে সহযোগিতা করছে ইমিগ্রেশন পুলিশ। বিশেষ করে বিদেশি নাগরিকরা এ পথে বাংলাদেশে প্রবেশ করলে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য বিভাগকে অবহিত করছি আমরা।
এরই মধ্যে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চীনে ৪১ জন মারা গেছেন। ইতোমধ্যে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে যুক্তরাষ্ট্র, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপানসহ বিভিন্ন দেশে। চীনে থাকা ভারতীয়রা এই ভাইরাসে ভুগছেন। যেহেতু বাণিজ্যসহ বিভিন্ন কাজে চীনসহ আক্রান্ত দেশের নাগরিকরা বাংলাদেশে আসে, সেজন্য আশঙ্কায় রয়েছে বাংলাদেশও।
Advertisement
জামাল হোসেন/এএম/পিআর