চীনের করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। কারণ চীনে প্রাদুর্ভাব ঘটা এই ভাইরাস এখন অন্যান্য দেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। সম্প্রতি ভারত এবং মালেয়েশিয়াতেও এই ভাইরাস শনাক্ত করা গেছে।
Advertisement
এর আগে জাপান, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান, ম্যাকাও, ইউরোপের বিভিন্ন দেশ, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও অস্ট্রেলিয়াতেও এই রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। অপরদিকে ফ্রান্সে তিনজনের এই ভাইরাসে আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে। শুক্রবার রাতে ফ্রান্সের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বোরডেক্সে প্রথম একজন এবং প্যারিসে দু'জনের এই ভাইরাসে আক্রান্তের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এদিকে মালয়েশিয়াতে অন্তত তিনজনের শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জুলকিফল আহমাদ। এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাসের কোনো প্রতিষেধক পাওয়া যায়নি। যার ফলে আতঙ্ক আরও বাড়ছে।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে মালয়েশিয়ায় হানা দিল প্রাণঘাতি নতুন ভাইরাসটি। শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস আক্রান্ত তিনজনই চীনা নাগরিক। তাদের মধ্যে একজন ৬৫ বছর বয়সী নারী। ওই নারীর স্বামীর দেহেও এই ভাইরাস ধরা পড়েছে যিনি বর্তমানে সিঙ্গাপুরে আছেন। বাকি দু’জন হচ্ছে ১১ ও দুই বছর বয়সী তাদের দুই নাতি। ভাইরাস আক্রান্ত তিনজনকেই কুয়ালালামপুরের সুঙ্গাই বুলোহ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
Advertisement
নতুন এই করোনাভাইরাস থেকে নিউমোনিয়াও হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রেই এটা প্রাণঘাতি। মালয়েশিয়ার বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধে চীন থেকে আসা সব যাত্রীকে স্ক্রিনিং (শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা) আরও জোরদার করা হয়েছে।
করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলো হলো জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট। সিভিয়ার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম (সার্স) ঘরানার এই ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হচ্ছে।
গত ডিসেম্বরের শেষের দিকে চীনের হুবেই প্রদেশের রাজধানী উহানে প্রথমবার করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঘটে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ২৮৭ জন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে ৪১ জনই মারা গেছেন।
উহান শহরে প্রায় ৮৯ লাখ মানুষের বসবাস। মূলত ওই শহরে প্রাদুর্ভাব ঘটার পর ভাইরাসটি বেইজিংসহ চীনের অন্যান্য প্রদেশেও ছড়িয়ে পড়ে।
Advertisement
এদিকে, পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করায় চীনা কর্তৃপক্ষ উহান থেকে চলাচলকারী সকল যানবহন বন্ধ ঘোষণা করেছে। এছাড়া হুবেই প্রদেশে ভ্রমণে কড়া সতর্কতা জারি করেছে দেশটির সরকার। যারা উহান থেকে ফিরেছেন তাদের অন্তত ১৪ দিন বাড়িতে থাকার নির্দেশ দিয়েছে বেইজিং ও সাংহাই কর্তৃপক্ষ।
কেএএ/টিটিএন/জেআইএম