প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেছেন, বড় প্রকল্পে সরকারের অর্থায়নের সক্ষমতা কমে গেলে আগামীতে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির কমে যেতে পারে। তাই ব্যক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার রাজধানীর পল্টনে ইআরএফ কার্যালয়ে আয়োজিত মোয়াজ্জেম হোসেন স্মারক বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। অর্থনৈতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এই বক্তৃতার আয়োজন করে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি সাইফ ইসলাম দিলাল।
এতে সংগঠনের সাবেক সভাপতি ও ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের যুগ্ম সম্পাদক শামসুল হক জাহিদ, দৈনিক সংবাদের ব্যবস্থাপনা সম্পাদক কাশেম হুমায়ুন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক এসএম রাশিদুল ইসলাম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।
ড. মসিউর রহমান বলেন, আমাদেরকে বিনিয়োগের প্রতি বিশেষ নজর দিতে হবে। কারণ বিনিয়োগ বাড়লে উৎপাদন বাড়ে, সেই সঙ্গে সরকারের রাজস্বও বাড়ে। এছাড়া রফতানি বৃদ্ধির কারণে বাড়তি বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসে। তাতে রেমিট্যান্সের ওপর নির্ভরতা একটু কমে।
Advertisement
তিনি বলেন, রেমিট্যান্সের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভরতা বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ সেটি আমাদের এখতিয়ারে থাকে না, অন্য দেশের নিয়ন্ত্রণে থাকে। তেলের দামের উঠা-নামা, ইরান ও অন্যান্য ইস্যুতে মধ্যপ্রাচ্যে সৃষ্ট উত্তেজনা রেমিট্যান্সের জন্য অনিশ্চয়তা তৈরি করে।
ড. মসিউর বলেন, বর্তমানে ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড’ শব্দযুগল বেশ আলোচিত বিষয়। যেকোনো প্রসঙ্গে এটি তুলে আনেন অনেকে। কিন্তু ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের সুফল পাওয়ার জন্য প্রস্তুতি দরকার। সেই প্রস্তুতির কিছু ঘাটতি আছে বলেই মনে হয়। এখানে চাহিদার আলোকে শিক্ষা দেয়া হয় না। আমাদের মূলত মিড লেভেল ও জুনিয়র লেভেলে কাজের উপযোগী লোক বেশি প্রয়োজন। আর এই জনবল তৈরি হতে পারে ভোকেশনাল ও টেকনিক্যাল শিক্ষায়। কিন্তু এখানে সবাই সন্তানকে গ্রাজুয়েট করতে চান। সবাই বিবিএ পড়তে চায়। কিন্তু কোনো বিষয়ের গভীরে যেতে চায় না কেউ।
তিনি বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শুধু বিবিএ পড়ুয়া ছাত্রের ছড়াছড়ি। কিন্তু সেই তুলনায় এমবিএ পড়ুয়ার সংখ্যা নগণ্য। আবার যারা পড়েন, তাদের মধ্যে ইভিনিং এমবিএ, এক্সিকিউটিভ এমবিএ পড়ার দিকেই ঝোঁক বেশি। রেগুলার এমবিএ’র শিক্ষার্থী সে তুলনায় অনেক কম।
উল্লেখ্য, মোয়াজ্জেম হোসেন ছিলেন দেশের প্রথম বিজনেস নিউজপেপার ফিন্যান্সিয়াল এক্সপ্রেসের সম্পাদক। তিনি ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের প্রথম সভাপতি। ২০১৮ সালের ১ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
Advertisement
এমইউএইচ/এমএসএইচ/পিআর