চীনের রহস্যময় প্রাণঘাতী ভাইরাস এবার যুক্তরাজ্যের মানুষের মধ্যেও সংক্রমিত হয়েছে বলে স্বীকার করেছেন দেশটির স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। চীন থেকে এই ভাইরাস এখন এশিয়াজুড়ে ছড়াচ্ছে। প্রতিবেশী জাপান, থাইল্যান্ড, দক্ষিণ কোরিয়া, তাইওয়ান ও অস্ট্রেলিয়ার পর বুধবার যুক্তরাষ্ট্রেও এই ভাইরাসে আক্রান্ত একজনকে শনাক্ত করা হয়।
Advertisement
ব্রিটিশ দৈনিক ডেইলি মেইল এক অনলাইন প্রতিবেদনে জানাচ্ছে, দেশটির বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলছেন, প্রাণঘাতী এই ভাইরাস যেকোনো মানুষকে সংক্রমিত করতে পারে। চীনের উহান শহর থেকে যুক্তরাজ্যে আসা যাত্রীদের জন্য লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর সতর্কতার জারির পর এমন প্রতিবেদন প্রকাশিত হলো।
গত ডিসেম্বরের শেষে চীনের উহান শহরে প্রথম এই ভাইরাসের আবির্ভাব ঘটে। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সামুদ্রিক খাবার বিক্রির একটি বাজার থেকে এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে। সেখান থেকে ওই ভাইরাস চীনের রাজধানী বেইজিংসহ আরও বেশ কিছু শহরে ছড়িয়ে পড়ে। তারই প্রেক্ষিতে হিথ্রো বিমানবন্দরে সতর্কতা জারি করা হয়।
ডেইলি মেইল বলছে, যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান দেশের ভেতরে হুমকির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। মৃতের সংখ্যা যেভাবে বাড়ছে তা ১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ফ্লুর মতোই। স্প্যানিশ ফ্লুতে ৫০ মিলিয়ন মানুষ মারা যায়। বুধবার পর্যন্ত ৯ মৃত্যু ও ৪৪০ জন আক্রান্তের কথা জানিয়েছে চীনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ। নেতৃস্থানীয় বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, চীনের উহানে ফ্লু টাইপের এই করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন, যা অনুমানের তুলনায় দ্বিগুণ। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, পরীক্ষা-নিরিক্ষা করে তাদের মধ্যে মাত্র ৪৮৩ জন ভাইরাসে আক্রান্ত বলে জানানে হয়েছে। তবে চীন বলছে, আরও ২ হাজার ১৯৭ রোগী আছে, যারা আক্রান্ত কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
Advertisement
গতরাতে মার্কিন রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ অধিদফতার জানায়, ওয়াশিংটনের এক বাসিন্দার শরীরে চীনে প্রাদুর্ভাব ঘটা করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি ধরা পড়েছে। সম্প্রতি ওই মার্কিন নাগরিক চীন সফর শেষে সিয়াটলে ফিরলে তার শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি শনাক্ত করা হয়। এছাড়া অস্ট্রেলিয়াতেও একজন এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন।
ভাইরাসটি নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছে। বৈঠকে ওই ভাইরাসের সংক্রমণে বিশ্বজুড়ে জরুরি স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি হবে কিনা তা পর্যালোচনা করা হবে। এদিকে কয়েকদিন অতিবাহিত হওয়ার পরও চীন ভাইরাসটির উৎস সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেনি।
চীনের অন্তত ১৫ জন মেডিকেল কর্মীও এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, এই ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলো হলো জ্বর, কাশি ও শ্বাসকষ্ট। সেভার অ্যাকিউট রেসপিরেটরি সিনড্রোম (সার্স) ঘরানার এই ভাইরাস মানুষ থেকে মানুষে সংক্রমিত হয়, যা থেকে নিউমোনিয়াও হতে পারে।
এসএ/এমএস
Advertisement