জাতীয়

দিনে ছাপানো হবে ২৫ হাজারের বেশি পাসপোর্ট

নানা জল্পনা-কল্পনা আর চড়াই-উতরাই পেরিয়ে অবশেষে বাস্তবে রূপ পেলো চার হাজার ৫৬৯ কোটি টাকার ই-পাসপোর্ট প্রকল্প। আজ (বুধবার) বেলা ১১টায় ঢাকায় এর কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়। 

Advertisement

বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতর জানায়, বাংলাদেশে ‘ই-পাসপোর্ট বাস্তবায়ন ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার কন্ট্রোল ব্যবস্থাপনা’ শীর্ষক প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয় চার হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা। প্রকল্পমূল্যের মধ্যে জার্মানির ভেরিডোস জিএমবিএইচ কোম্পানির সঙ্গে চুক্তি তিন হাজার ৩৩৮ কোটি টাকার। কাস্টম ডিউটি, ভ্যাট ও এআইটি এক হাজার ২৪ কোটি টাকা। প্রকল্পের অন্যান্য খরচ ধরা হয় ২০৭ কোটি টাকা।

প্রকল্পে উল্লেখ করা হয়, ভেরিডোস জিএমবিএইচ কোম্পানি তিন কোটি ই-পাসপোর্ট বুকলেট সরবরাহ করবে। সফটওয়্যার, হাডওয়্যার ও নেটওয়ার্ক ১০ বছরের জন্য রক্ষণাবেক্ষণও করবে ভেরিডোস।

পাশাপাশি ঢাকায় নতুন স্বয়ংসম্পূর্ণ ডাটা সেন্টার, ডিজাস্টার রিকভারি সেন্টার এবং অত্যাধুনিক পার্সোনালাইজেশন সেন্টার নির্মাণ করার কথা ছিল, যা ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে।

Advertisement

পার্সোনালাইজেশন সেন্টারে আটটি প্রিন্টিং মেশিন বসানোর কথা থাকলেও এখনো সবগুলো বসেনি। পুরোদমে মেশিনগুলো কাজ করলে দিনে প্রায় ২৫ হাজারের বেশি পাসপোর্ট প্রিন্ট করা যাবে।

প্রকল্পের আওতায় দেশের ৭২টি পাসপোর্ট অফিস, বিদেশে ৮০টি মিশন, ৭২টি এসবি/ডিএসবি অফিস, ২২টি ইমিগ্রেশন চেকপোস্টসহ সব অফিসে সংশ্লিষ্ট যন্ত্রপাতি, সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার ও নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হবে। এছাড়া বাংলাদেশের ১০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীকে জার্মানিতে নিয়ে সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারের ওপর বিশেষ প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা উল্লেখ রয়েছে প্রকল্পে।

কেন এত বিলম্ব

২০১৮ সালের নভেম্বর মাসে আসার কথা ছিল ই-পাসপোর্ট। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী জার্মানির ভেরিডোস জিএমবিএইচ কোম্পানি চুক্তির বিচ্যুতি ঘটাতে চাইলে দেখা দেয় জটিলতা। দীর্ঘসূত্রতা পায় এর বাস্তবায়নে।

Advertisement

সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের জুলাই মাসে জার্মানির ভেরিডোসের সঙ্গে ই-পাসপোর্টের চুক্তি করে অধিদফতর। এরপর ওই বছরের ডিসেম্বরে পাসপোর্ট দেয়ার কথা থাকলেও অধিদফতর সেই সিদ্ধান্তে কিছুটা পরিবর্তন আনে। মূলত ই-পাসপোর্ট প্রকল্প বাস্তবায়নে জার্মানির দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে জটিলতা দেখা দেয় সেসময়।

চুক্তি অনুযায়ী, পাসপোর্টের ইলেকট্রনিক চিপে ১০ আঙুলের ছাপ থাকার কথা ছিল। তবে চুক্তি স্বাক্ষরের পর জার্মান কোম্পানি মাত্র দুটি আঙুলের ছাপ সংরক্ষণ করতে চায়। মাত্র দুই আঙুলের ছাপে ভবিষ্যতে জালিয়াতি হতে পারে, তাই এ প্রস্তাবে রাজি হয়নি পাসপোর্ট অধিদফতর। এ নিয়ে জার্মান প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠক ও চিঠি চালাচালি হয়। অবশেষে সুরাহা হয় জটিলতার। আগের চুক্তি অনুযায়ী ১০ আঙুলের ছাপই থাকছে ই-পাসপোর্টে।

এআর/জেডএ/জেআইএম