জনপ্রিয় অভিনেতাদের একজন তিনি। দীর্ঘদিন ধরেই অভিনয়ের সঙ্গে নিজেকে যুক্ত রেখেছেন। মঞ্চ, টিভি ও চলচ্চিত্র; সবখানেই আরমান পারভেজ মুরাদ প্রিয় এক নাম। একজন আবৃত্তিশিল্পী হিসেবেও সমাদৃত তিনি।
Advertisement
প্রায়ই বিজ্ঞাপনের জিঙ্গেলে শোনা যায় তার ভরাট কণ্ঠ। বহু গুণে গুণান্বিত এই অভিনেতা ২০০৬ সালে কাজী মোর্শেদ পরিচালিত ‘ঘানি’ সিনেমার জন্য সেরা অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন।
ব্যক্তি মানুষ তিনি সদা হাস্যোজ্জ্বল। তবে বুকের ভেতর বয়ে চলেছেন দীর্ঘ দিনের লালিত স্বপ্ন পূরণ না হওয়ার এক নিরব যাতনা। আরমান পারভেজের অনেকদিনের ইচ্ছে সিনেমা বানাবেন। গল্প রেডি তার। তৈরি আছে চিত্রনাট্যও। কিন্তু প্রযোজক না পাওয়ায় কাজ শুরু করতে পারছেন না।
আরমান পারভেজ মুরাদ বলেন, ‘নির্মাণের স্বপ্নটা অনেকদিনের। চেষ্টাও করছি। শাহরিয়ার কবিরের লেখা শিশুতোষ গল্প ‘নিকোলাস রোজারিওর ছেলেরা’ অবলম্বনে চিত্রনাট্য লেখা শেষ হয়েছে বহু আগেই। কিন্তু পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে বানাতে পারছি না।
Advertisement
যে সহযোগিতাটা পাওয়া দরকার সেটা পাচ্ছি না। আমি আমার স্বপ্নের সিনেমাটা নির্মাণ করতে চাই। জানিনা সেটা কবে পারবো বা আদৌ পারবো কী না।’
‘অনেক দিন থেকেই তো অভিনয় করছি। মঞ্চের সঙ্গে জড়িয়ে আছি। নির্মাণের স্বপ্নটা বুনেছি এই শিল্পচর্চার সঙ্গে জড়িয়ে থাকার নেশা থেকেই। ‘নিকোলাস রোজারিওর ছেলেরা’ আমার স্বপ্নের সিনেমা’- যোগ করলেন মুরাদ।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি ছোটবেলায় স্কাউট, রেড ক্রিসেন্টের সঙ্গে জড়িত ছিলাম। সেচ্ছ্বাসেবী কাজগুলো আমাকে গর্বিত করতো। এগুলো দেখে আমি যা শিখেছি, এগুলো মানুষের মধ্যে যখন থাকে তখন সে অনেক চৌকষ হয়। এসবের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ভবিষ্যতে একজন ভালো মানুষ হতে সহায়তা করে। মানুষ কতটা সৎ, মানুষ কীভাবে তার দেশকে শত্রুমুক্ত করছে, ন্যায়ের প্রতিষ্ঠা করছে এমন গল্পই দেখানো হবে আমার ছবিতে।
আমার গুরু এস এম সুলতান শিশুতোষ বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন। তিনি সবসময় আমাকে একটা কথা বলতেন, শিশুরা ছবি আঁকতে শিখলে তারা বড় হয়ে ভালো মানুষ হবে। যে ফুল-ফলের ছবি আঁকবে তারা বড় হয়ে কখনও নষ্ট হবে না। তাই আমি আমার প্রথম সিনেমাটা শিশুদের জন্যই নির্মাণ করতে চাই।’
Advertisement
মনে কষ্ট নিয়ে তিনি বলেন, ‘নাটক-সিনেমা দেখে অনেক কিছু শেখার আছে। এখন অনেক সিনেমাই নির্মাণ হচ্ছে। কমার্শিয়াল সিনেমা বলতে সিনেমাতে অনেক কিছুই দেখানো হচ্ছে। নায়ক-নায়িকা নির্ভর সিনেমাই বেশি হচ্ছে। এসব ছবির জন্য পৃষ্ঠপোষকতার অভাব হয় না। অথচ আমরা যখন ভিন্ন ভাবনা নিয়ে কিছু করতে চাই তখন কোনো প্রযোজক পাইনা।
কষ্ট একটাই ভালোর সঙ্গে থেকেও, সারাদিন ভালো করতে চাই মুখে বলা মানুষগুলোও কিন্তু দিনশেষে ভালোকে সাপোর্ট দিচ্ছে না। করলে ইন্ডাস্ট্রির ঠিকই উন্নতি হতো, ভালো কিছু হতো। চারদিকে মানুষ শুধু কথা বলে আর নিজেকে আলোচনায় দেখতে চায়। ভালো কাজের আগ্রহ কমে গেছে যেন।’
আরমান পারভেজ মুরাদ রাজশাহী সাংস্কৃতিক সংঘে টানা ৯ বছর কাজ করেছেন। এরপর ঢাকায় এসে থিয়েটার আরামবাগে যুক্ত হন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারের এ পর্যন্ত অসংখ্য টিভি নাটক ও ১০টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করে দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছেন।
এলএ/এমএস