খেলাধুলা

বোলিংয়ের মুকুট সেই মোস্তাফিজের মাথায়, জয়জয়কার দেশিদের

বিপিএলের শুরুটা করেছিলেন তুমুল সমালোচনা মাথায় নিয়ে। বিশ্বকাপের পর থেকে নিজেকে খুঁজে না পাওয়া, ভারত সফরের তিন টি-টোয়েন্টিতে উইকেটশূন্য থাকা এবং বিপিএলের প্রথম দুই ম্যাচে প্রত্যাশামাফিক বোলিং করতে না পারা- সবমিলিয়ে বাংলাদেশ জাতীয় দলের বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজুর রহমানের সময়টা কাটছিল একদমই যাচ্ছেতাই।

Advertisement

সেই মোস্তাফিজই টুর্নামেন্ট শেষে প্রমাণ করলেন, এতো জলদি ফুরিয়ে যাবার পাত্র নন তিনি। তার দল রংপুর রেঞ্জার্স দলগতভাবে হতাশ করেছে চূড়ান্ত পর্যায়ে। কিন্তু ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে উজ্জ্বল ছিলেন রংপুরের বাঁহাতি পেসার মোস্তাফিজ। ফাইনালের পর দেখা যাচ্ছে, নির্ধারিত ৪৬ ম্যাচ শেষে নিজেকে হারিয়ে খুঁজতে থাকা মোস্তাফিজই অবস্থান করছেন সর্বোচ্চ উইকেট তালিকার শীর্ষে।

রংপুর বাদ পড়ে যাওয়ায় মোস্তাফিজ খেলতে পেরেছেন মাত্র ১২টি ম্যাচ। আর এতেই ছাড়িয়ে গেছেন টুর্নামেন্টের বাকিসব বোলারদের। প্রথম দুই ম্যাচে খরুচে বোলিং করে ২ উইকেট পাওয়া মোস্তাফিজ, পরের ১০ ম্যাচে পেয়েছেন ১৮টি উইকেট। রান খরচেও ছিলেন বেশ কিপটে।

সবমিলিয়ে ১২ ম্যাচে ২০ উইকেট নিয়েছেন মোস্তাফিজ, রান খরচ করেছেন ওভারপ্রতি ৭.০১ করে। টুর্নামেন্টে তার বোলিং গড় মাত্র ১৫.৬০। যা কি না চলতি আসরে কমপক্ষে ৫টি উইকেট নেয়া বোলারদের মধ্যে সেরা বোলিং গড়। আর এ কারণেই, চারজন বোলার সমান ২০টি করে উইকেট পেলেও উইকেট সংগ্রাহকের তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে মোস্তাফিজের নাম।

Advertisement

শুধু মোস্তাফিজ একাই নয়, পুরো আসরজুড়ে দারুণ বোলিং করেছেন দেশিরা। তার সমান ২০টি উইকেট পেয়েছেন চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের ডানহাতি পেসার রুবেল হোসেন। বিপিএলের গত আসরেও দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২২টি উইকেট শিকার করেছিলেন রুবেল। সেই ধারাবাহিকতা বজায় রাখলেন এবারেও।

রুবেল ও মোস্তাফিজের সমান ২০টি করে উইকেট নিয়েছেন খুলনা টাইগার্সের দুই বিদেশি পেসার মোহাম্মদ আমির ও রবি ফ্রাইলিংক। বোলিংয়ের সেরা পাঁচে অন্য নামটি আবার আরেক দেশি পেসার শহীদুল ইসলামের। খুলনা টাইগার্সের হয়ে খেলা এ ডানহাতি বোলারের শিকার ১৯টি উইকেট।

এছাড়া চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের তরুণ বাঁহাতি পেসার মেহেদী হাসান রানা শিকার করেছেন ১৮টি উইকেট। যার মানে দাঁড়ায় বঙ্গবন্ধু বিপিএলে সেরা ছয় উইকেট শিকারির চারজনই হলেন বাংলাদেশি।

বিপিএলের এবারের আসরে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক

Advertisement

১. মোস্তাফিজুর রহমান (রংপুর রাইডার্স) - ১২ ম্যাচে ২০ উইকেট, সেরা বোলিং ১০ রানে ৩ উইকেট (গড় ১৫.৬০)২. মোহাম্মদ আমির (খুলনা টাইগার্স) - ১৩ ম্যাচে ২০ উইকেট, সেরা বোলিং ১৭ রানে ৬ উইকেট (গড় ১৭.৭৫)৩. রুবেল হোসেন (চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্স) - ১৩ ম্যাচে ২০ উইকেট, সেরা বোলিং ১৭ রানে ৩ উইকেট (গড় ১৭.৮৫)৪. রবি ফ্রাইলিং (খুলনা টাইগার্স) - ১৪ ম্যাচে ২০ উইকেট, সেরা বোলিং ১৬ রানে ৫ উইকেট (গড় ১৯.৬০)৫. শহীদুল ইসলাম (খুলনা টাইগার্স) - ১৩ ম্যাচে ১৯ উইকেট, সেরা বোলিং ২৩ রানে ৪ উইকেট (গড় ২০.৮৪)

চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের তরুণ বাঁহাতি পেসার মেহেদী হাসান রানা ১০ ম্যাচে মাত্র ১৫.৮৩ গড়ে ১৮টি উইকেট শিকার করেছেন। তার সেরা বোলিং ২৩ রানে ৪ উইকেট।

বিপিএলের প্রতি আসরে সর্বোচ্চ উইকেট সংগ্রাহক

১. ইলিয়াস সানি (ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস) - ১২ ম্যাচে ১৭ উইকেট, সেরা বোলিং ১৭ রানে ৩ উইকেট (প্রথম আসর)২. আলফনসো থমাস (ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটরস) - ১২ ম্যাচে ২০ উইকেট, সেরা বোলিং ১৯ রানে ৩ উইকেট (দ্বিতীয় আসর)৩. কেভন কুপার (বরিশাল বুলস) - ৯ ম্যাচে ২২ উইকেট, সেরা বোলিং ১৫ রানে ৫ উইকেট (তৃতীয় আসর)৪. ডোয়াইন ব্রাভো (ঢাকা ডায়নামাইটস) - ১৩ ম্যাচে ১ উইকেট, সেরা বোলিং ১০ রানে ৩ উইকেট (চতুর্থ আসর)৫. সাকিব আল হাসান (ঢাকা ডায়নামাইটস) - ১৩ ম্যাচে ২২ উইকেট, সেরা বোলিং ১৬ রানে ৫ উইকেট (পঞ্চম আসর)৬. সাকিব আল হাসান (ঢাকা ডায়নামাইটস) - ১৫ ম্যাচে ২৩ উইকেট, সেরা বোলিং ১৬ রানে ৪ উইকেট (ষষ্ঠ আসর)৭. মোস্তাফিজুর রহমান (রংপুর রেঞ্জার্স) - ১২ ম্যাচে ২০ উইকেট, সেরা বোলিং ১০ রানে ৩ উইকেট (সপ্তম আসর)

এসএএস/এমএমআর