খেলাধুলা

কে হবেন আসর সেরা পারফরমার? মুশফিক না অন্য কেউ?

ট্রফি জিতবে কে? খুলনা টাইগার্স নাকি রাজশাহী রয়্যালস? আজ রাতে ট্রফি হাতে শেষ হাসি কার, মুশফিকুর রহীম না আন্দ্রে রাসেলের?

Advertisement

পাশাপাশি আরও একটি প্রশ্নও উকি ঝুঁকি দিচ্ছে সবার মনে। তাহলো, এবারের বিপিএলের আসর সেরা পারফরমার হবেন কে? ফাইনাল শেষে মানে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্টের পুরস্কার ‘টিভিএস’ মোটরসাইকেলের চাবি তুলে দেয়া হবে কার হাতে?

তার জবাবও মিলবে আজ রাতেই। তবে ফাইনালের আগের হিসাব-নিকেশ আর পারফরম্যান্সকে মানদণ্ড ধরলে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্টের লড়াইয়ে যে কারো চেয়ে এগিয়ে খুলনার অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম।

শুধু খুলনাকে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে ফাইনালে তুলে আনাই নয়, এখনও পর্যন্ত টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বেশি (১৩ ম্যাচে ৪৭০) রান মুশফিকুর রহীমের ব্যাট থেকে এসেছে।

Advertisement

বলার অপেক্ষা রাখে না, মুশফিক আগেও একবার টপ স্কোরার হয়েছিলেন। সেটা ২০১৩ সালের দ্বিতীয় বিপিএলে। সেবার ১৩ ম্যোচে ৪০.০০ গড় আর ১৩২.৯৩ স্ট্রাইকরেটে ৪৪০ রান করে সর্বাধিক রান সংগ্রহারী তিনি। এবার ফাইনালের আগে তার পরিসংখ্যান হলো ১৩ ম্যাচে ১৩ ইনিংসে ৭৮.৩৩ গড় ও ১৪৭.৩৩ স্ট্রাইকরেটে ৪৭০ রান।

এর মধ্যে আছে চার-চারটি হাফ সেঞ্চুরিও। ওই চার অর্ধশতকের মধ্যে এক ম্যাচে নট আউট থেকেও মাত্র ২ রানের জন্য সেঞ্চুরি করতে না পারার আক্ষেপ আছে।

রান তোলায় মুশফিকের খুব কাছাকাছি আছেন আরও দু’জন। যারা থাকবে ফাইনালেও। একজন তার দল খুলনা টাইগার্সের রাইলি রুশো। এ দক্ষিণ আফ্রিকানের সংগ্রহ ১৩ ম্যাচে ৪৫৮। আর তার পিছনে থেকে দু’জনার ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছেন রাজশাহী রয়ালসের শোয়েব মালিক (১৪ ম্যাচে ৪৫৬ রান)।

যেহেতু কোন অলরাউন্ডারের আহামরি কোনো পারফরমেন্স নেই, তাই মুশফিকুর রহীম, রাইলি রুশো- এই তিনজনার মধ্যেই আসর সেরা পারফরমার জেতার লড়াই সীমাবদ্ধ হয়ে আছে। এদের মধ্যে যে ফাইনালে বেশি রান করবেন এবং যার পারফরমেন্সে দল জিতবে- তার সম্ভাবনা ও সুযোগ অনেক বেশি থাকবে ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্টের পুরস্কার জেতার।

Advertisement

তবে আরও একজন ক্রিকেটার আছেন, যিনি সত্যিকার অলরাউন্ড পারফরমেন্স দেখিয়েছেন। নাম লুইস গ্রেগরি। রংপুর রেঞ্জার্সের এ ইংলিশ অলরাউন্ডার ব্যাট ও বলে সমান নৈপুণ্য দেখিয়ে ২৫০ রান করার পাশাপাশি তখল করেছেন ১৫টি উইকেট।

এছাড়া কুমিল্লা ওয়ারিয়র্সের সৌম্য সরকার ও অনেক লদ্ধ প্রতিষ্ঠিত অলরাউন্ডারদের টপকে ব্যাট ও বলে দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্স করেছেন। সৌম্যর নামের পাশে ৩৩১ রানের সঙ্গে জমা পড়েছে ১২টি উইকেট।

এছাড়া রাজশাহী রয়্যালসকে কোয়ালিফায়ার-২ থেকে ফাইনালে টেনে তোলা অধিনায়ক আন্দ্রে রাসেলও ব্যাট-বলে মোটামুটি সমান নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। এ ক্যারিবীয় অলরাউন্ডার মোট ১৯৮ রান করার পাশাপাশি ১২টি উইকেটও দখল করেছেন। এছাড়া খুলনা টাইগার্সের রবি ফ্রাইলিংক ১৯ উইকেট শিকার করে বোলারদের মধ্যে তিন নম্বরে জায়গা করার পাশাপাশি রান করেছেন ১২১।

এতো গেল ব্যাটনম্যান আর অলরাউন্ডারদের হিসাব-নিকেশ। এর বাইরেও হিসেব আছে। বাংলাদেশের দুই পেসার মোস্তাফিজুর রহমান উইকেট শিকারে দেশি ও বিদেশি সব বোলারকে পিছনে ফেলে সবার ওপরে। রংপুর রেঞ্জার্সের মোস্তাফিজুর রহমান আর চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের রুবেল হোসেন যৌথভাবে ২০টি করে উইকেট শিকারি। তাদের সম্ভাবনাকেও উড়িয়ে দেয়া যায় না।

তবে ঘুরে ফিরে মুশফিকুর রহীমের কথাই উঠবে বার বার। সবচেয়ে বেশি রান করা মুশফিক যে খুলনা টাইগার্সেরও অধিনায়ক। দলের ফাইনালে উঠে আসার পিছনে যার ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। ধারণা করা হচ্ছে, আজ ফাইনালে ম্যাচ সেরা হতে পারলে অনিবার্য্যভাবেই আসর সেরা পারফরমারের পুরস্কার উঠবে তার হাতেই। ম্যাচ জেতানো ইনিংস উপহার দিতে পারলেতো কথাই নেই, রান সংগ্রহে সবার ওপরে থাকতে পারলে হয়ত মুশফিকের হাতেও উঠবে আসর সেরা পারফরমারের পুরষ্কার। তখন দল খুলনা টাইগার্স রানার্সআপ হলেও সমস্যা হবে না তার আসর সেরার পুরস্কার জিততে।

এদিকে ইতিহাস জানাচ্ছে, বিপিএলে সবচেয়ে সফল অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। চার-চারবার বিপিএল চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক ছিলেন মাশরাফি। আর আসর সেরা পারফরমারের পুরস্কার জেতায় সবার ওপরে সাকিব আল হাসান।

নিষেধাজ্ঞার খাঁড়ায় পড়ে এবার খেলতে না পারা সাকিব আগের ৬ বারের মধ্যে তিন বারের আসর সেরা পারফরমারের পুরস্কার জিতেছেন।

এছাড়া বাংলাদেশের পারফরমারদের মধ্যে মুশফিকের ভায়রা ভাই মাহমুদউল্লাহ রিয়াদও একবার টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছেন। বাকি দু’বার দুজন ভিনদেশি; আসহার জাইদি এবং রাইলি রুশো।

দেখা যাক এবার কে হন টুর্নামেন্ট সেরা? মুশফিক হলে একজন বাংলাদেশি ক্রিকেটারের হাতেই উঠবে ব্যক্তিগত সেরার এই সেরা পুরস্কারটি।

এআরবি/আইএইচএস/পিআর