২০১৬ সালে বিজ্ঞানীরা এমন একটি গ্রহের সন্ধান পেয়েছিলেন যেখানে ভিনগ্রহের প্রাণীর (এলিয়েন) অস্তিত্ব থাকতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গ্রহটির নাম রাখা হয় প্রক্সিমা বি। পৃথিবী থেকে মাত্র ৪.২ আলোকবর্ষ দূরে প্রক্সিমা সেনটউরি নামে একটি নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরছে গ্রহটি। আর এবার বিজ্ঞানীরা যে সংকেত পেলেন তাতে তাদের বিশ্বাস জন্মেছে যে, এই নক্ষত্রটিকে কেন্দ্র করেই ঘুরছে আরও একটি গ্রহ; আর এ গ্রহটি সুপার-আর্থ। অর্থাৎ এ গ্রহের ভর পৃথিবীর চেয়ে বেশি তবে ইউরেনাস ও নেপচুনের চেয়ে কম। সেগুলোকে সুপার-আর্থ বলা হয়। এ গ্রহের নাম দেয়া হয়েছে প্রক্সিমা সি।
Advertisement
প্রক্সিমা সেনটউরি হলো আমাদের সূর্যের সবচেয়ে কছের নক্ষত্র এবং এটিকে লাল রঙের বামন নক্ষত্র বলা হয়।
প্রক্সিমা বি গ্রহটির সন্ধান পাওয়ার পর থেকেই বিজ্ঞানীরা ধারণা করছিলেন, প্রক্সিমা সেনটউরিকে কেন্দ্র করে আরও গ্রহ ঘুরতে পারে। চিলির অ্যাটাকামা লার্জ মিলিমিটার/সাব মিলিমিটার অ্যারে অব টেলিস্কোপ ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা এ সংক্রান্ত আলোকসংকেত পেয়েছেন।
১৭ বছরের রেডিয়াল ভেলোসিটি ডেটা বিশ্লেষণ করে এ সিদ্ধান্তে পৌঁঁছেছেন গবেষকরা। বুধবার জার্নাল সায়েন্স অ্যাডভান্সে তাদের এ গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়েছে।
Advertisement
কোনো নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে যদি কোনো গ্রহ ঘুরতে থাকে তখন সেই নক্ষত্রটি একেবারে স্থির থাকতে পারে না। কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকা গ্রহগুলোর মধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রভাবে ওই নক্ষত্র তখন নিজেও ছোট একটি বৃত্তাকার পথে ঘুরতে শুরু করে। এরফলে ওই নক্ষত্রের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য পরিবর্তিত হয় এবং গ্রহের অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে ওই আলো নীল বা লাল দেখায়।
গবেষকরা যে সংকেত পেয়েছেন তা ওই নক্ষত্রের চৌম্বকক্ষেত্রের কারণেও আসতে পারে- এমন সম্ভাবনা মোটেও উড়িয়ে দিচ্ছেন না তারা। তবে গবেষকরা বলছেন, আলোর যে সংকেত তারা পেয়েছেন তা মাত্র ১ হাজার ৯০০ দিন আগের। অর্থাৎ সেখানে যে একটা গ্রহ রয়েছে, এটাই তার শক্ত ইঙ্গিত।
এই গবেষক দলের একজন বলছেন, আমরা এতদিন যা জানতাম প্রক্সিমা সেনটউরির গ্রহগুলোর আসলে তার চেয়ে জটিল কোনো নিয়মে আছে। আর আমরা এখনও জানি না আরও নতুন নতুন কত কিছু সেখান থেকে আমরা জানতে পারবো।
বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, প্রক্সিমা সেনটউরিকে একবার প্রদক্ষিণ করতে নতুন আবিষ্কৃত গ্রহটি পৃথিবীর হিসাবে ৫.২ বছর সময় নেয়। এ গ্রহটিতে পানির অস্তিত্ব যদি থেকেও থাকে তবে বরফ আকারে থাকবে। তবে প্রক্সিমা বিতে তরল পানি থাকা সম্ভব বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের।
Advertisement
এনএফ/এমকেএইচ