বিশ্ব ইজতেমার প্রথম দিন (১০ জানুয়ারি) বাদ মাগরিব বিশেষ বয়ানে তাবলিগের শীর্ষ মুরব্বি মাওলানা ইবরাহিম দেওলা দ্বীনের জিম্মাদারি ও মেহনতের ওপর গুরুত্বপূর্ণ বয়ান পেশ করেন। আল্লাহ তাআলা মানুষকে যেমন দ্বীনের জিম্মাদারি দিয়েছেন আবার সে জিম্মাদারি বাস্তবায়নে মেহনতের দায়িত্বও দিয়েছেন। এ বিষয়ে মাওলানা ইবরাহিম দেওলার বয়ানের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো-
Advertisement
আল্লাহ তাআলা দুনিয়াকে নানান রকম হালাত হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। আর তা কখনো সুস্থতা, কখনো অসুস্থতা, কখনো সুখ ও কখনো পেরেশানিতে আবদ্ধ। বান্দার জন্য এ অবস্থাগুলো আল্লাহ তাআলা কর্তৃক স্বাভাবিক নিয়ম। যে কোনো হালতের হুকুমই মহান আল্লাহর পক্ষ থেকেই আসে।
মুমিন বান্দা যে অবস্থায়ই থাকুক না কেন, সে অবস্থায়ই তার দ্বীনকে পালন করে। দ্বীন মেনে যারা পরিচালিত হয় তারাই সফলকাম।
মানুষের কাছে সবকিছুর ইলম নেই কিন্তু মহান আল্লাহর কাছে সব জিনিসের ইলম আছে। কোন অবস্থা বান্দার জন্য কল্যাণের সে জ্ঞান যেমন আল্লাহর কাছে আছে তেমনি কোন অবস্থা বান্দার জন্য হাতাশার তাও আল্লাহ জানেন। সে হিসেবেই তিনি বান্দাকে কখনো ভালো কখনো খারাপ অবস্থায় পতিত করেন।
Advertisement
আল্লাহ তাআলা বান্দার ভালোর জন্যই সবকিছু করে থাকেন। আবার অনেক বান্দা ইলম বা জ্ঞানের কমতির কারণে আল্লাহর কাছে এমন জিনিস চেয়ে বসে যা তার জন্য খারাপ হবে। সে তা নিজের জন্য ভালো মনে করে৷ আল্লাহ তাআলা তখন বান্দার চাওয়াকে প্রাধান্য না দিয়ে যা তার জন্য ভালো হবে সে ফায়সালাই দান করেন।
বান্দার ভালো ও খারাপ অবস্থা, দুটিই আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা। যে তার এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়, সে কামিয়াব হয়।
একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খুশির মুহূর্ত আসায় তিনি স্বাভাবিক নিয়েমের চেয়েও আমল বাড়িয়ে দিলেন। সাহাবায়ে কেরাম এর কারণ জানতে চাইলে তিনি বললেন-
‘আমি কি আল্লাহর শোকরগুজার বান্দা হবো না?
Advertisement
বুঝা গেলো, সুখের সংবাদে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহর শোকর আদায়ের জন্য আমল বাড়িয়ে দিতেন৷
দ্বীন (ইসলামি) আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি হক রাস্তা। আল্লাহ তাআলা এ সঠিক রাস্তা দেখানোর জন্যই নবিদের পাঠিয়েছেন।
হজরত ইউসুফ রাহমাতুল্লাহি আলাইহি বলতেন, ‘হকের (প্রচারের) শুরু হয় অপছন্দনীয় জিনিসের মাধ্যমে। হক প্রচারের শুরুতেই বিভিন্ন বাঁধার সম্মুখীন হতে হয়। যারা এটাকে (বাঁধা) অতিক্রম করতে পারবে, কামিয়াবি বা সফলতা তাদের জন্য। আর যে কাজ পছন্দনীয় জিনিস দ্বারা শুরু হবে, তার পরিসমাপ্তিও হয় অপছন্দনীয় জিনিস দ্বারা।
আল্লাহর নিয়ম হলো কষ্টের সঙ্গে আসানি বা নিরাপত্তা দান করবেন। আল্লাহ বান্দাকে যখন দ্বীন দিয়েছেন তখন তার জিম্মাদারি মানুষকে দিয়েছেন।
বান্দা নিজের মধ্যে যে পরিমাণ দ্বীন পালনের দায়িত্ব নেবে এবং মেহনত করবে। সে ওই পরিমাণ ভুল থেকে বেরিয়ে দ্বীন তথা বিশুদ্ধ জীবনযাপন করবে। বান্দার জিম্মাদারি ও মেহনতের ফলে দুনিয়াতে দ্বীন জিন্দা হবে এবং দুনিয়ার সব পেরেশানিও দূর হবে। পরকালে ওই বান্দা হবে সফল।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে দ্বীনের (ইসলাম) জিম্মাদারি, প্রচার-প্রসার ও আমলের মাধ্যমে পেরেশানি মুক্ত হয়ে দুনিয়া ও পরকালের সফলতা লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।
এমএমএস/এমএস