গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে স্কুলছাত্র সৌরভ গুলিবিদ্ধ হওয়ার প্রতিবাদ ও সাংসদের গ্রেফতারের দাবিতে রোববার আওয়ামী লীগের একাংশ সুন্দরগঞ্জ উপজেলা বঙ্গবন্ধু চত্বরে মানববন্ধন করেছে। মানববন্ধন কর্মসূচি চলাকালীন আওয়ামী লীগ নেতা ও সুন্দরগঞ্জ পৌর মেয়র আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, অবিলম্বে এমপি মঞ্জুুরুল ইসলাম লিটনের সংসদ সদস্য পদ বাতিল করে আইনের আওতায় নিয়ে এসে বিচার করতে হবে। তিনি আরো বলেন, এমনকি তাকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে। তা না হলে সুন্দরগঞ্জে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। তিনি আরও বলেন লিটন দুটি লাইসেন্সকৃত অস্ত্র জমা দিলেও তার কাছে এবং তার বাহিনীর কাছে আরও অনেক অস্ত্র রয়েছে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি টিআইএম মকবুল হোসেন প্রামাণিক বলেন, সাংসদ মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র করছেন। সাংসদ হওয়ার পর থেকে লিটন একের পর এক ন্যাক্কারজনক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন। পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা শিশু সৌরভকে গুলি করেছেন সাংসদের মত একজন সম্মানীয় ব্যক্তি। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।আওয়ামী লীগ নেতা মাসুদুর রহমান চঞ্চল বলেন, গণতান্ত্রিক দেশে যে সাংসদের কাছে সাধারণ জনগণ নিরাপত্তার আশা করেন, এখন সেই সাংসদের হাতেই গুলিবিদ্ধ হয় নিষ্পাপ শিশু। অবিলম্বে সাংসদ মঞ্জরুল ইসলাম লিটনকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নেয়ার জন্য প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন। এদিকে সাংসদকে গ্রেফতারের দাবিতে ফুঁসে উঠেছেন এলাকার আপামর জনসাধারণ। মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসরাইল হোসেন জাগো নিউজকে জানান, তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ব্যক্তি যত ক্ষমতাধরই হোক না কেন আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। মামলার বাদী গুলিবিদ্ধ শিশু সৌরভের বাবা সাজু মিয়া মামলার সুষ্ঠু বিচারের দাবি জানিয়ে উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। পাশাপাশি তার এবং তার পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ ঘটনায় শনিবার রাতে গুলিবিদ্ধ শিশু সৌরভের বাবা বাদী হয়ে সাংসদ মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। পাশপাশি শনিবার রাতেই সাংসদের লাইসেন্সকৃত একটি শর্টগান ও একটি রিভেলবার থানায় জমা দিয়েছেন সাংসদ লিটনের নিকট আত্মীয় তারিকুল ইসলাম।এদিকে একই দাবিতে বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন ও ছাত্র ইউনিয়নের গাইবান্ধা জেলা সংসদের যৌথ উদ্যোগে শহরের ডিবি রোডের ১নং ট্রাফিকমোড়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। রোববার বিকেল ৩টা থেকে ৪টা পর্যন্ত মানববন্ধন চলাকালে বক্তব্য রাখেন জেলা যুব ইউনিয়নের সভাপতি প্রতিভা সরকার ববি, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড.মুরাদ জামান রব্বানী, জেলা ছাত্র ইউনিয়ন সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফ, সাধারণ সম্পাদক রানু সরকার, সাংগঠনিক সম্পাদক তপন দেবনাথ, সঞ্জয় মোহন্ত প্রমুখ।এছাড়া এই কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানিয়ে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, কৃষক সমিতি,বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতি, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র ,বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের নেতৃবৃন্দ। এসময় বক্তারা বলেন, লিটনের এই অপকীর্তি প্রমাণ করে যে বাংলাদেশের রাজনীতি ও জাতীয় সংসদ এখন দুর্বৃত্ত, মাফিয়া ও কালো টাকার মালিকদের দখলে। এই অবস্থার থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে দেশপ্রেমিক সৎ, আদর্শবাদী ও শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বক্তারা ঘটনার তিনদিন অতিবাহিত হলেও এখনো গ্রেফতার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলন্বে লিটনের গ্রেফতার দাবি করেন।অমিত দাশ/এমজেড/পিআর
Advertisement