ধর্ম

বিখ্যাত ইসলামি ব্যক্তিত্ব ও রাষ্ট্রদূত মুরাদ হফম্যানের ইন্তেকাল

ইউরোপের ক্ষমতাধর দেশ জার্মানির প্রখ্যাত ইসলামি স্কলার ও দাঈ মুরাদ উইলফ্রেইড হফম্যান (৮৯) বার্ধক্যজনিত করণে সোমবার (১৩ জানুয়ারি) ইন্তেকাল করেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। দেশটির সর্বোচ্চ মুসলিম পরিষদ ‘দ্য সুপ্রিম কাউন্সিল অফ মুসলিম ইন জার্মানি- এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

Advertisement

মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরার (আরবি) এক প্রতিবেদনে মুরাদ হফম্যানকে জার্মানির সর্বোচ্চ ইসলামি প্রচারক ও আন্তর্জাতিক ইসলামি ব্যক্তিত্ব হিসেবে তুলে ধরেছেন।

দ্য সুপ্রিম কাউন্সিল অফ মুসলিম ইন জার্মানির ওয়েবসাইটে তার মৃত্যুর কথা ঘোষণা করা হয়। সেখানে তাকে জার্মানিসহ বিশ্বের অনেক মানুষ ও প্রজন্মের অনুপ্রেরণাদানকারী হিসেবে তুলে ধরা হয়।

হফম্যান ১৯৩১ সালে একটি ক্যাথলিক খ্রিস্টান পরিবারে জন্ম গ্রহণ করেন। আলজেরিয়ার যুদ্ধের সময় তিনি খ্রিস্টান মতবাদের বিরোধিতা করেন। মুসলিমদের প্রতি নির্যাতন তার হৃদয়কে ইসলামের দিকে ধাবিত করে। ১৯৮০ সালে তিনি পবিত্র ধর্ম ইসলাম গ্রহণ করেন।

Advertisement

মুরাদ উইলফ্রেইড হফম্যান মিউনিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। ১৯৫৭ সালে তিনি একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমফিল (ডক্টরেট) ডিগ্রি অর্জন করেন।

মুরাদ হফম্যান ১৯৬১ সাল থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত জার্মানির কূটনৈতিক হিসেবে বিভিন্ন দেশে কাজ করেন। তিনি একজন সফল কূটনৈতিক ছিলেন। তিনি মরক্কো, আলজেরিয়াসহ অনেক মুসলিম দেশে জার্মানির বিভিন্ন দাফতরিক ও রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

মুরাদ হফম্যান আলজেরিয়ায় পারমানবিক প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত বিষয়ের বিশেষজ্ঞ হিসেবেও কাজ করেন। ১৯৮৩ থেকে ১৯৮৭ সাল পর্যন্ত ব্রাসেলসে ন্যাটোর তথ্য পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৮৭ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত আলজেরিয়ায় রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯০থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত মরক্কোয় জার্মানির রাষ্ট্রদূতের দায়িত্ব পালন করেন।

Advertisement

তিনি জার্মানির সেন্ট্রাল কাউন্সিল অফ মুসলিম-এর অনারারি সদস্য ও উপদেষ্টা ছিলেন।

এ কূটনৈতিক একজন সফল লেখকও ছিলেন। বিশ্বব্যাপী পরিচিত কয়েকটি বই রয়েছে তার। এর মধ্যে অন্যতম হলো- ‘আল ইসলাম কা-বাদিলিন, আল ইসলাম ফিল আলফিয়্যাতিস সালিছাহ, আত তারিকু ইলা মাক্কাহ এবং দ্য অল্টারনেটিভ।

এছাড়াও তিনি দ্বীন প্রচারে অসংখ্য বই লিখেছেন। মুসলিম-অমুসলিম সবার মাঝে ইসলামের চিন্তা-চেতনা বিস্তার এবং দ্বীনের দাওয়াত দিয়ে ব্যাপক প্রশংসিত হয়েছেন।

ডক্টর মুরাদ উইলফ্রেইড হফম্যানের মৃত্যুতে অনেক দেশ এবং ইসলামিক স্কলাররা শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন। মিসরের আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ব ওলামায়ে কেরামের সর্বোচ্চ সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন অফ মুসলিম স্কলারও শোক জানিয়েছেন।

আল্লাহ তাআলা ইসলামিক স্কলার ও দাঈ মুরাদ উইলফ্রেইড হ্যম্যানকে জান্নাতের মেহমান হিসেবে কবুল করুন। আমিন।

এমএমএস/পিআর