পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি ভৈরব বিএডিসি সার গুদামের ২৩ কোটি টাকার ৯৬ হাজার ২০০ বস্তা সার চুরির ঘটনায় করা মামলার বিচারকাজ। উল্টো মামলার বিচারকাজ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। ১০ বার নোটিশ দিলেও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পাল কমল চন্দ্র অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে দুদকের আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসেননি।
Advertisement
গত বুধবার (০৮ জানুয়ারি) সাক্ষ্য দেয়ার নির্ধারিত তারিখে দশম বারেরমতো আদালতে হাজির হননি পাল কমল চন্দ্র। দুদকের দায়েরকৃত এ মামলার প্রধান আসামি গুদামরক্ষক খোরশেদ আলম ২০১৯ সালের ১৮ মার্চ মৃত্যুবরণ করেন। মামলায় বাদীসহ সাক্ষী রয়েছেন ৩৫ জন। এখন পর্যন্ত সাক্ষ্য দিয়েছেন ৩১ জন।
গত দুই বছর ধরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তার সাক্ষ্য নেয়ার জন্য বার বার তারিখ দেয়া হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত আদালতে হাজির হননি তিনি। এ মামলার আসামি সাতজন। তারা হলেন গুদামরক্ষক খোরশেদ আলম, সহকারী পরিচালক রেজাউল করিম, সাবেক যুগ্ম পরিচালক আহাদ আলী, ডিলার প্রতিনিধি লিটন সাহা, সবুজ মিয়া, হারিছুল হক ও গুদামের সরদার রতন মিয়া।
২০১৪ সালের ১৭ নভেম্বর গুদাম থেকে সার গায়েবের বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হয়। এ নিয়ে বিএডিসির মধ্যে তোলপাড় শুরু হয়। এরপর বিএডিসির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঢাকা থেকে ভৈরব এসে গুদামটি সিলগালা করে দেয়। পরে গুদামরক্ষক খোরশেদ আলম ও গুদামের সহকারী পরিচালক (সার) রেজাউল করিম পালিয়ে যান। এ অবস্থায় সার পরিমাপ করে গুদামে ৯৬ হাজার ২০০ বস্তা সার নেই বলে জানতে পারেন সংশ্লিষ্টরা।
Advertisement
তখন ভৈরব থানায় কিশোরগঞ্জ বিএডিসির যুগ্ম পরিচালক দুজনকে আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার কয়েক দিনের মধ্যে খোরশেদ আলম ও রেজাউলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে মামলার তদন্ত দেয়া হয় ময়মনসিংহের দুদককে।
দীর্ঘ তদন্তের পর ঘটনার সঙ্গে জড়িত সাতজনের বিরুদ্ধে কিশোরগঞ্জ আদালতে চার্জশিট দেয়া হয়। মামলাটি বিচারের জন্য ময়মনসিংহের দুদক আদালতে স্থানান্তর করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৪ সালে ঘটনার পর তদন্ত শেষে মামলার চার্জশিট দিতে সময় লাগে প্রায় এক বছর। এরপর ২০১৬ সালে মামলার বিচার কাজ শুরু হলে সাক্ষীদের সাক্ষ্য নেয়া শুরু হয়। মামলার ৩৫ জন সাক্ষীর মধ্য ৩১ জনের সাক্ষ্য সম্পন্ন করতে সময় লাগে দুই বছর তিন মাস। এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ময়মনসিংহের দুদকের সহকারী পরিচালক পাল কমল চন্দ্র অসুস্থতার কথা বলে প্রায় দুই বছর ধরে আদালতে সাক্ষী দিতে উপস্থিত হননি।
এ বিষয়ে মামলার বাদী বিএডিসির যুগ্ম পরিচালক মো. শহীদুল্লাহ বলেন, দুই বছরের মধ্যে ১০ বার তারিখ দেয়া হলেও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পাল কমল চন্দ্র আদালতে সাক্ষ্য দিতে হাজির হননি। অসুস্থতার কথা বলে বার বার কালক্ষেপণ করছেন তিনি। এরই মধ্যে মামলার প্রধান আসামি খোরশেদ আলম গত মার্চ মাসে মারা গেছেন। এ মামলার বিচার নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
Advertisement
আসাদুজ্জামান ফারুক/এএম/জেআইএম