শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছাত্রলীগের দু`গ্রুপের সংঘর্ষের ঘটনায় সকল ধরণের শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে আজ (রোববার) দুপুর ২টার মধ্যে কলেজের দুটি বয়েজ হোস্টেলের সকল শিক্ষার্থীকে হল ত্যাগের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।এর আগে রোববার শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আনিছুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার হোসেন শান্ত গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কমপক্ষে ৭/৮ জন আহত হয় বলে জানা গেছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।হাসপাতাল, শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পরিচালিত দুটি সাংস্কৃতিক সংগঠন স্ফুরণ ও দ্যা বিটস। এই দুই সংগঠনের কর্মীদের মধ্যে গত শনিবার রাতে কথা কাটাকাটি হয়। সে সময় ওই নেতার মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি সাময়িক নিয়ন্ত্রণে আসে।এ নিয়ে রোববার সকালে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতা কর্মীরা শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠকে বসে। সকাল সাড়ে ১১টায় একাডেমিক কাউন্সিল এ নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। এরমধ্যেই দুপুর ১২টার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসে আবারো সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পরিচালিত দুটি সাংস্কৃতিক সংগঠন স্ফুরণ ও দ্যা বিটস এর কর্মীরা। সংঘর্ষে ৭/৮ জন আহত হয়। এর মধ্যে এনায়েত রমেশ নামে দুজন শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। খবর পেয়ে ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক উপ-সম্পাদক ডা. কাজী মাহবুব ও বুলেট সেন ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে শেরে বাংলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোপাল গণেশ বিশ্বাস, তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার উপস্থিত বিপুল সংখ্যব পুলিশসহ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এদিকে ছাত্রলীগের দুই গ্রুপের নেতা কর্মীদের নিয়ে দুপুর দেড়টায় আবারো বয়েজ হোস্টেলের সামনে বৈঠকে বসে কলেজ ও হাসপতাল পরিচালনার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, হাসপাতালের পরিচালক ডা. উত্তম কুমার বড়ুয়া, কলেজ অধ্যক্ষ ডা. এবিএম মাকসুদুল আলমসহ অন্যান্য শিক্ষকবৃন্দ ও ছাত্রলীগের সদ্য বিদায়ী কেন্দ্রীয় কমিটির ছাত্র বিষয়ক উপ-সম্পাদক ডা. কাজী মাহবুব। একাডেমিক কাউন্সিলের বৈঠকের শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের সকল শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. এবিএম মাকসুদুল আলাম জাগো নিউজকে জানান, মেডিকেল কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়া ও সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার বিষয়টি মাথায় রেখে এবং সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতেই কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এ আদেশে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকবে এবং বোববার দুপুর ২টার মধ্যে শিক্ষার্থীদের হলে ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আনিছুর রহমান বলেন, এটা ছাত্রলীগের মধ্যকার গ্রুপিংয়ের কোনো ঘটনা নয়। ছাত্রলীগ পরিচালিত সাংস্কৃতিক সংঘঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে এ ঘটনার অবতারণা হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক শাহরিয়ার হোসেন শান্ত বলেন, ছাত্রলীগ নয় সাংস্কৃতিক সংগঠনের মধ্যে সমস্যা ছিল। তা মিটিয়ে নেয়া হয়েছে। তবে শিক্ষার্থীদের অধ্যয়নের বিষয়টি বিবেচনায় না নিয়ে হল বন্ধ ও শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। অবিলম্বে তিনি হল খুলে দেয়া ও শিক্ষা কার্যক্রমের অনুরোধ জানান। ডিএমপি’র তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার বিপ্লব কুমার জাগো নিউজকে বলেন, সংঘর্ষের খবর পেয়েই কলেজ ক্যাম্পাসে বিপুল সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়। পরিস্থিতি এখন নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। হল ও শিক্ষা কার্যক্রম স্থগিত করায় শিক্ষার্থীরা এখন হল ছেড়ে চলে যাচ্ছে।# সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগের সংঘর্ষজেইউ/আরএস/এমএস
Advertisement