আরব বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের শাসক ছিলেন ওমানে সুলতান কাবুস বিন সাঈদ। ৫০ বছর ওমান শাসনের পর গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় মারা গেছেন তিনি। তার মৃত্যুর পর নতুন সুলতান নির্বাচিত হয়েছেন তার চাচাতো ভাই হাইথাম বিন তারিক তৈমুর আল-সাঈদ। তার সম্পর্কে কিছু তথ্য জেনে নেয়া যাক।
Advertisement
নতুন সুলতান হাইথাম বিন তারিক তৈমুর আল-সাঈদ সুলতান কাবুস বিন সাঈদের শাসনামলে ছিলেন ওমানের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রী। জন্ম ১৯৫৪ সালে। তবে সুলতান হওয়ার দৌঁড়ে তার সঙ্গে ছিলেন তার আরও দুই চাচাতো ভাই। তারা হলেন উপ-প্রধানমন্ত্রী তারিক আল সাঈদ ও সাবেক নৌকমান্ডার সিহাব বিন তারিক আল সাঈদ।
তবে সবাইকে পাশ কাটিয়ে সুলতান হিসেবে শপথ নিতে যাচ্ছেন হাইথাম বিন সাঈদ। ওমানের সুলতান একই সঙ্গে দেশের প্রধানমন্ত্রী, সামরিক বাহিনীর সর্বোচ্চ কমান্ডার এবং প্রতিরক্ষা, অর্থ ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। সংবিধানের ৬ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তিন দিনের বেশি সুলতান পদ খালি রাখার নিয়ম নেই।
সুলতান হাইথাম বিন তারিক তৈমুর আল-সাঈদ সদ্যপ্রয়াত সুলতান কাবুসের বিশেষ দূত ছিলেন নানা সময়ে। এছাড়া তিনি দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরও বেশ কিছু দায়িত্ব পালন করেন। তিনি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক বিভাগের আন্ডার সেক্রেটারি ছিলেন ১৯৮৬ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত।
Advertisement
এরপর ১৯৯৪ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত একই মন্ত্রণালয়ের সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৯ সালে যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালেয় পররাষ্ট্র সেবা প্রোগ্রামে স্নাতক সম্পন্ন করেন সুলতান হাইথাম। ক্রীড়ামোদি এই শাসক আশির দশকের শুরুতে ওমান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রথম প্রধান নির্বাচিত হন।
ওমানের দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন প্রকল্প ‘ওমান ২০৪০’ বাস্তবায়ন কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন। এছাড়া তিনি ওমান প্রতিবন্ধী অ্যাসোসিয়েশনের সম্মানসূচক প্রেসিডেন্ট। এর বাইরে সম্মানসূচক প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন ওমানি-জাপানিজ ফ্রেন্ডশিপ অ্যাসোসিয়েশনের।
সুলতান নির্বাচনের প্রাথমিক দায়িত্ব অর্পিত ওমান রাজপরিবার প্রায় ৫০ সদস্যের সমন্বয়ে গঠিত পরিষদের ওপর। ব্যক্তিজীবনে অবিবাহিত হওয়ায় নিঃসন্তান আর আপন কোনো ভাই না থাকায় ২০১১ সালে নিজের উত্তরাধিকার ঘোষণার জন্য উত্তরাধিকার প্রক্রিয়া সংশোধন করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন তিনি।
প্রসঙ্গত. রক্তপাতহীন এক অভ্যুত্থানে ১৯৭০ সালে বাবা সাঈদ বিন তৈমুরকে ক্ষমতাচ্যুত করে ক্ষমতায় বসেন কাবুস। ওমানের আল সাঈদ রাজবংশের চতুর্দশ প্রজন্ম ছিলেন তিনি। কাবুস বিন সাঈদ মৃত্যুর আগে ক্যানসারসহ বিভিন্ন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগছিলে ন। ২৯ বছর বয়সে ক্ষমতায় আসা কাবুসের বয়স হয়েছিল ৭৯ বছর।
Advertisement
এসএ/এমকেএইচ