বিজেপি নেতৃত্বাধীন ভারত সরকারের আমন্ত্রণে দুই দিনের সফরে কাশ্মীর গেছেন দিল্লিভিত্তিক ১৫টি দেশের প্রতিনিধিরা। কাশ্মীরিসহ দেশটির বিরোধী দলের নেতারা অভিযোগ তুলেছেন, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ কাশ্মীরের অবস্থা স্বাভাবিক দেখাতে বিদেশি কূটনীতিকদের নিয়ে এই ‘গাইডেড ট্যুরের’ আয়োজন করেছে মোদি সরকার।
Advertisement
এর আগে ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ‘বাছাই করা’ সদস্যদের কাশ্মীর সফর করিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিল ভারতের কেন্দ্রীয় তথা বিজেপি সরকার। বিরোধীরা বলছেন, এই সফর তারই ধারাবাহিকতা। তবে বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া দুদিনের সফরে ইইউভূক্ত দেশগুলোর পার্লামেন্ট সদস্যদের যাওয়ার কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত তারা কাশ্মীরে যায়নি।
সূত্রের বরাতে আনন্দবাজার বলছে, ভারত সরকারের নির্ধারিত সফরসূচিতে (গাইডেড ট্যুর) আপত্তি জানিয়েই ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধিরা অবরুদ্ধ উপত্যকাটি সফরে যায়নি। কাশ্মীরের ‘বন্দি’ তিন সাবেক মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন ইইউ প্রতিনিধিরা। কিন্তু তা প্রত্যাখান করা হলে তারা কাশ্মীরে যেতে অস্বীকৃতি জানান।
তবে কাশ্মীর সফরে যে ১৫ সদস্যের দল গেছে তাদের মধ্যে ভারতে নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত রয়েছেন। আগস্টে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা রদের পর গত অক্টোবরে প্রথমবারের মতো কাশ্মীর সফরে গিয়েছিলেন ইইউ পার্লামেন্টের একদল এমপি। তবে তারা সবাই ছিলেন কট্টর মতাবলম্বী। এ নিয়ে তখন সমালোচনা তৈরি হয়।
Advertisement
ইইউ প্রতিনিধিরা কাশ্মীর সফর বাতিল নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রবীশ কুমার এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেছেন, ‘আমরা চেয়েছিলাম ওই (ইইউ) প্রতিনিধি দলটি যাতে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যায় থাকে। তারা যেন পৃথক না হয়ে যায়। আমরা চেয়েছিলাম অঞ্চলভিত্তিক বিভিন্ন এলাকার প্রতিনিধিরা এই দলে থাক।’
গত ৫ আগস্ট মোদি সরকার ভারতীয় সংবিধানে কাশ্মীরের ‘বিশেষ স্বায়ত্তশাসন’ সংক্রান্ত ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল ঘোষণা করার পর থেকেই উপত্যকাকে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। ইন্টারনেট, মোবাইল ও ল্যান্ডলাইনসহ সকল যোগাযোগ বন্ধ করে হাজার হাজার অতিরিক্ত সেনা পাঠিয়ে সম্পূর্ণ অবরুদ্ধ করে রাখা হয় কাশ্মীরকে।
বিশেষ মর্যাদা বাতিলের আগে থেকেই অধিকাংশ জায়গায় কারফিউ জারি করা হয়। গ্রেফতার করা হয় কাশ্মীরের কয়েক হাজার নেতাকে। এখনও বন্দি রয়েছেন সেখানকার সাবেক তিন মুখ্যমন্ত্রী। মোদি সরকারের এমন সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিকভাবে বিতর্কিত হয়। এছাড়া এই অবরুদ্ধ পরিস্থিতিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন অভিহিত করে কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা।
প্রায় তিন মাস পর গত বছরের অক্টোবরে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘বাছাই করা’ এমপিদের কাশ্মীর সফরের আয়োজন করা হলে সেই সফর নিয়ে গোটা দেশে বিতর্কের ঝড় ওঠে। প্রথমত, সরকারের নির্ধারিত রুটে তারা সফর করার কারণে উপত্যকার প্রকৃত অবস্থা বুঝতে পারবেন না এই অভিযোগ ওঠে। তবে সরকার তাতে পিছপা হয়নি।
Advertisement
বিরোধীরা আরও প্রশ্ন তুলেছিলেন, দেশের কোনো রাজনৈতিক নেতাকে কাশ্মীরে যেতে দেয়া হচ্ছে না, সেখানকার শীর্ষ নেতাদের ‘বন্দি’ করে রাখা হয়েছে, অথচ বিদেশি প্রতিনিধিদের কাশ্মীর ঘুরিয়ে দেখানো হচ্ছে। এছাড়া ওই সফরের আয়োজন যিনি করেছিলেন তিনি সরকারি নয়, ছিলেন মোদির দলের একজন ঘনিষ্ঠ কূটনীতিক।
Raveesh Kumar, MEA: When we approached them they welcomed the decision. Our understanding is that they wanted to visit in a group. You're aware, on many issues they take group position. Invitation wasn't sent to all members because it would have made the delegation too big.(2/2) https://t.co/kOWGZ4T5rP
— ANI (@ANI) January 9, 2020এসএ/পিআর