বিয়ের প্রলোভনে দুই বছর ধরে ধর্ষণের শিকার হয়েছে দশম শ্রেণির এক ছাত্রী। অবশেষে বিয়ে না করায় আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে সে। বৃহস্পতিবার (০৯ জানুয়ারি) নওগাঁ সদর উপজেলার চকবুলাকি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
Advertisement
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ওই ছাত্রীর বাবা দিনমজুর। স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে বার বার প্রেমের প্রস্তাব দেয় ওই গ্রামের প্রভাবশালী ইয়াছিন আলীর ছেলে ইমরান হোসেন ইমন। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এরপর ইমরান হোসেন বিয়ের প্রলোভনে দুই বছর ধরে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করে।
গত ৩ জানুয়ারি রাতে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে ধরা পড়ে যায় ইমরান। এরপর বিষয়টি নিয়ে গ্রামবাসী ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান বৈঠকের মাধ্যমে বিয়ে দিয়ে সমাধানের চেষ্টা করলে ছেলের পরিবার তা অর্থের মাধ্যমে সমাধান করতে চায়। কিন্তু মেয়ের পরিবার টাকার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান না করে বিয়ের কথা বললে অস্বীকার করে ছেলের পরিবার।
এভাবে বৈঠকের নামে তারা সময় পার করায় মঙ্গলবার রাতে থানা পুলিশে অভিযোগ করে ভুক্তভোগীর পরিবার। এমতাবস্থায় মেয়ে লোকলজ্জা থেকে মুক্তির জন্য বৃহস্পতিবার সকালে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে তাকে উদ্ধার করে রানীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া হয়।
Advertisement
ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা অভিযোগ করে বলেন, ৩ জানুয়ারি রাতে ইমরান হোসেন মেয়েকে ধর্ষণ করতে এলে বিষয়টি জানাজানি হয়। আমার মেয়েকে দুই বছর ধরে ধর্ষণ করা হয়েছে। গ্রাম্য সালিশে মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে ছেলে পক্ষ অস্বীকার করে। টাকার বিনিময়ে আপসের প্রস্তাব দেয় তারা। মেয়ে ক্ষোভে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। সুবিচারের আশায় থানায় গেছি। আসামির পরিবার প্রভাবশালী হওয়ায় আমরা সুষ্ঠু বিচার পাচ্ছি না।
চন্ডিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়্যারম্যান বেদারুল ইসলাম মুকুল বলেন, ঘটনার পর একাধিকবার বৈঠকে বিয়ের মাধ্যমে বিষয়টি সমাধাদের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। পরে ভুক্তভোগী পরিবারকে আইনের আশ্রয় নেয়ার পরামর্শ দিয়েছি।
নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়ার্দী হোসেন বলেন, অভিযোগের পর মেয়ের জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। মেয়ের ডাক্তারি প্রতিবেদন পাওয়ার অপেক্ষা রয়েছি। ঘটনার পর থেকে আসামি ইমরান হোসেন ইমন পলাতক থাকায় গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি।
আব্বাস আলী/এএম/পিআর
Advertisement