দেশজুড়ে

বিশ্ব ইজতেমায় ৮৭ খিত্তায় থাকবেন ৬৪ জেলার মুসল্লি

সোনাবানের শহর টঙ্গীর কহর দরিয়াখ্যাত তুরাগ নদীর তীরে আগামী ১০ জানুয়ারি (শুক্রবার) থেকে শুরু হচ্ছে তাবলিগ জামাতের তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা। ইজতেমার প্রথম পর্বে দেশের ৬৪ জেলার মুসল্লিদের জন্য ইজতেমা ময়দানকে ৮৭টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। পাঁচটি অতিরিক্ত খিত্তা রিজার্ভ রাখা হয়েছে। মাদরাসার ছাত্র অথবা কোনো জেলার মুসল্লি বেশি হলে সে সব খিত্তায় তাদের বসার ব্যবস্থা করে দেয়া হবে।

Advertisement

১০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে মাওলানা জুবায়েরের অনুসারী মুসল্লিরা অংশ নেবেন। ১২ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এ পর্ব। পরে চার দিন বিরতি দিয়ে ১৭ থেকে ১৯ জানুয়ারি পর্যন্ত হবে দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমা। এতে মাওলানা সাদের অনুসারী মুসল্লিরা অংশ নেবেন।

ইজতেমার প্রথম পর্বে মুসল্লিরা যে সব খিত্তায় থাকবেন সেগুলো হচ্ছে- ১নং খিত্তায় গাজীপুর, ২নং খিত্তায় টঙ্গী-১, ৩নং খিত্তায় টঙ্গী-২, ৪নং খিত্তায় টঙ্গী-৩, ৫নং খিত্তায় মিরপুর-১, ৬নং খিত্তায় মিরপুর-২, ৭নং খিত্তায় সাভার-১, ৮নং খিত্তায় সাভার-২, ৯নং খিত্তায় মোহাম্মদপুর, ১০নং খিত্তায় কারকরাইল-৩, ১১নং খিত্তায় কেরানীগঞ্জ-১, ১২নং খিত্তায় কেরানীগঞ্জ-২, ১৩নং খিত্তায় কাকরাইল-১, ১৪নং খিত্তায় কাকরাইল-২, ১৫ (ক) খিত্তায় ডেমরা, ১৫ (খ) নং খিত্তা (সংরক্ষিত খিত্তা), ১৬নং খিত্তায় কাকরাইল-৪, ১৭নং খিত্তায় কাকরাইল-৫, ১৮নং খিত্তায় কাকরাইল-৬, ১৯নং খিত্তায় কাকরাইল-৭, ২০নং খিত্তায় রাজশাহী, ২১নং খিত্তায় নওগাঁ, ২২নং খিত্তায় নাটোর, ২৩নং খিত্তায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ২৪ নং খিত্তায় যাত্রাবাড়ী-২, ২৫নং খিত্তায় যাত্রাবাড়ী-১, ২৬নং খিত্তায় সিরাজগঞ্জ, ২৭নং খিত্তায় দোহার, ২৮নং খিত্তায় নবাবগঞ্জ, ২৯নং খিত্তায় মানিকগঞ্জ, ৩০নং খিত্তায় টাঙ্গাইল, ৩১নং খিত্তায় নড়াইল, ৩২নং খিত্তায় ধামরাই, ৩৩নং খিত্তায় রংপুর, ৩৪নং খিত্তায় নীলফামারী, ৩৫নং খিত্তায় কুড়িগ্রাম, ৩৬নং খিত্তায় লালমনিরহাট, ৩৭নং খিত্তায় গাইবান্ধা, ৩৮নং খিত্তায় মুন্সীগঞ্জ, ৩৯ নং খিত্তায় মাগুরা, ৪০নং খিত্তায় ঝিনাইদহ, ৪১নং খিত্তায় বগুড়া, ৪২ নং খিত্তায় নারায়ণগঞ্জ, ৪৩নং খিত্তায় ফরিদপুর, ৪৪নং খিত্তায় যশোর, ৪৫নং খিত্তায় সাতক্ষীরা, ৪৬নং খিত্তায় বাগেরহাট, ৪৭নং খিত্তায় নরসিংদী, ৪৮নং খিত্তায় ভোলা, ৪৯নং খিত্তায় জামালপুর, ৫০নং খিত্তায় ময়মনসিংহ-১, ৫১নং খিত্তায় ময়মনসিংহ-২, ৫২নং খিত্তায় মেহেরপুর, ৫৩নং খিত্তায় চুয়াডাঙ্গা, ৫৪নং খিত্তায় নেত্রকোনা, ৫৫নং খিত্তায় কিশোরগঞ্জ, ৫৬নং খিত্তায় গোপালগঞ্জ, ৫৭নং খিত্তায় বরিশাল, ৫৮নং খিত্তায় রাজবাড়ি, ৫৯নং খিত্তায় শেরপুর, ৬০নং খিত্তায় শরিয়তপুর, ৬১নং খিত্তায় মাদারীপুর, ৬২নং খিত্তায় সিলেট, ৬৩নং খিত্তায় কক্সবাজার, ৬৪নং খিত্তায় রাঙ্গামাটি, ৬৫নং খিত্তায় খাগরাছড়ি, ৬৬নং খিত্তায় বান্দরবান, ৬৭নং খিত্তায় ফেনী, ৬৮নং খিত্তায় নোয়াখালী, ৬৯নং খিত্তায় লক্ষীপুর, ৭০নং খিত্তায় চাঁদপুর, ৭১নং খিত্তায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ৭২নং খিত্তায় খুলনা, ৭৩নং খিত্তায় পটুয়াখালী, ৭৪নং খিত্তায় বরগুনা, ৭৫নং খিত্তায় চট্টগ্রাম, ৭৬নং খিত্তায় কুমিল্লা, ৭৭নং খিত্তায় পিরোজপুর, ৭৮নং খিত্তায় ঝালকাঠি, ৭৯নং খিত্তায় সুনামগঞ্জ, ৮০নং খিত্তায় হবিগঞ্জ, ৮১নং খিত্তায় মৌলভীবাজার, ৮২নং খিত্তায় পাবনা, ৮৩নং খিত্তায় ঠাকুরগাঁও, ৮৪নং খিত্তায় পঞ্চগড়, ৮৫নং খিত্তায় দিনাজপুর, ৮৬নং খিত্তায় জয়পুরহাট এবং ৮৭নং খিত্তায় কুষ্টিয়া। ৮৮ থেকে ৯২ নম্বর খিত্তা সংরক্ষিত থাকবে।

বিশ্ব ইজতেমার ময়দানের জুবায়ের অনুসারী মুরব্বি ইঞ্জিনিয়ার মাহফুজুর রহমান জানান, ময়দানকে মোট ৯২টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। এবার দেশের ৬৪ জেলার মুসল্লিরা অংশ নিচ্ছেন। তাদের জন্য ৮৭টি খিত্তা নির্ধারণ করা হয়েছে। পাঁচটি খিত্তা সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। কোনো জেলার মুসল্লি বেশি হলে অথবা মাদরাসাছাত্রদের ওই খিত্তাগুলোতে দেয়া হবে। বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বে দেশের মুসল্লিদের পাশাপাশি বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা অংশ নেবেন। বিদেশি মেহমানদের জন্য বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের উত্তর-পশ্চিম পাশে নিবাস তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বিদেশি মেহমানদের জন্য গরম পানি, রান্নার জন্য গ্যাস, উন্নত টয়লেটসহ নানা ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

Advertisement

ইতোমধ্যে ইজতেমার সার্বিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের নিরাপত্তায় পাঁচ স্তরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। পুরো ময়দানকে সিটি টিভির আওতায় আনা হয়েছে।

ইজতেমার আয়োজক সূত্র জানিয়েছে, এ বছর ইজতেমার প্রথম পর্বে রেকর্ডসংখ্যক মুসল্লি যোগ দেবেন। এজন্য সারাদেশে ব্যাপক দাওয়াতি কাজ করা হয়েছে।

১৯৬৩ সাল থেকে বাংলাদেশে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে । জানুয়ারির ১০ তারিখ অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ইজতেমা হবে ৫৫তম। তাবলিগের আমির মাওলানা সা’দ কান্ধলভী ও মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীদের মধ্যে বিরোধের কারণে গত বছর থেকে দুই পক্ষ তিন দিন করে আলাদাভাবে ইজতেমার আয়োজন করে।

আমিনুল ইসলাম/আরএআর/এমএস

Advertisement