মতামত

নারীবান্ধব সমাজ চাই

নারীর বিরুদ্ধে ধর্ষণ সবচেয়ে জঘন্য অপরাধ। আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে এই বীভৎসতম নিষ্ঠুর কাণ্ড ঘটেই চলেছে। যেখানে কমার কথা সেখানে বরং ধর্ষণ বেড়েই চলেছে। শিশু থেকে যুবতী কেউ বাদ যাচ্ছে না। সময় সুযোগ বুঝে পাশবিক অত্যাচার চলছে পশুদের। একটি সভ্য সমাজে এই জঘন্যতম কর্মকাণ্ড চলতে দেয়া যায় না। ধর্ষণের বিরুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর অবস্থানের পাশাপাশি সামাজিক প্রতিরোধও অত্যন্ত জরুরি।

Advertisement

এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। রোববার (৫ জানুয়ারি) বিকেল ৫টায় রাজধানীর কুর্মিটোলায় এ ঘটনা ঘটে। ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ওই ছাত্রী সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় ‘ক্ষণিকা’ নামের বিশ্ববিদ্যালয়ের দোতলা বাসে (ঢাবি-টঙ্গী রুট) বাড়ি ফিরছিলেন। রাজধানীর কুর্মিটোলায় বাস থেকে নেমে যাওয়ার পর তাকে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ করেন তিনি।

রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৫টার দিকে ঢাবির নিজস্ব বাসে রওনা দেন তিনি। সন্ধ্যা ৭টার দিকে তিনি কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ডে বাস থেকে নামেন। এরপর একজন অজ্ঞাত ব্যক্তি তার মুখ চেপে ধরে সড়কের পেছনে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। ধর্ষণের পাশাপাশি তাকে নির্যাতনও করা হয়। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের ক্ষতচিহ্ন পাওয়া গেছে। ধর্ষণের এক পর্যায়ে তিনি অজ্ঞান হয়ে যান। রাত ১০টার দিকে নিজেকে একটি নির্জন জায়গায় আবিষ্কার করেন ওই ছাত্রী। পরে সিএনজি নিয়ে ঢামেকে আসেন। রাত ১২টার দিকে ওই ছাত্রীকে ঢামেক হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করান তার সহপাঠীরা। চারদিকে ধিক্কার উঠেছে এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে। থানায় মামলা করা হয়েছে পরিবারের পক্ষ থেকে। ধর্ষকের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির কোনো বিকল্প নেই।

বাংলাদেশ যখন নারীর ক্ষমতায়নে রোল মডেল এবং উন্নয়নশীল দেশের কাতারে তখন খোদ রাজধানীতে নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রী ধর্ষণের মত বর্বরোচিত ঘটনা সমাজে ভুল বার্তা দেবে। তাই আইনের শাসন ও একটি নারীবান্ধব সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে হলে ধর্ষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। ধর্ষণ মামলা তদন্ত ও আসামিদের গ্রেপ্তারের ব্যাপারে পুলিশকে আরো দায়িত্বশীল, কর্তব্যপরায়ণ ও দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার মানসিকতা রাখতে হবে। ধর্ষণ মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি ও অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তিই পারে এই ক্ষতে সামান্য প্রলেপ দিতে। আমরা এ ধরনের বর্বরোচিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি দেখতে চাই না।

Advertisement

এইচআর/জেআইএম