বগুড়ায় এবার শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনে ৬১৯টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। গত বছর জেলায় ৫৯৮টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। আর এ উৎসবকে সামনে রেখে ভীষণ ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন প্রতিমা তৈরি কারিগররা। দিন-রাত কাঁদা-মাটি, খড়-কাঠ আর সুতলি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ করছেন শিল্পীরা। আগামী ১৮ অক্টোবর দেবীর বোধনের মধ্যদিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের এ মহাৎসব শুরু হতে যাচ্ছে। চলবে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত। জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের পরিসংখানে এ তথ্য জানা গেছে।বগুড়া জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দিলীপ কুমার দেব জানান, জেলার ১২ উপজেলায় এবার ৬১৯টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে বগুড়া সদরে ১০১টি, শিবগঞ্জে ৪৯টি, ধুনটে ২৫টি, গাবতলীতে ৬৫টি, সারিয়াকান্দিতে ১৯টি, শাজাহানপুরে ৪৯টি, সোনাতলায় ৩৮টি, শেরপুরে ৭৯টি, আদমদিঘিতে ৬৮টি, কাহালুতে ৩৮টি, নন্দীগ্রামে ৫১টি, দুপচাঁচিয়াতে ৩৭টি মণ্ডপে এবার পূজা অনুষ্ঠিত হবে। সব মিলিয়ে এ বছর জেলার ৬১৯টি মণ্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। গত বছর জেলায় ৫৯৮টি মণ্ডপে পূজা হয়েছিল। তিনি আরো বলেন, ২৩ অক্টোবর শুক্রবার প্রতিমা বিসর্জন ও বিজয় শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। শারদীয় দুর্গাপূজা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। প্রতিমা শিল্পী বগুড়া শহরের চেলোপাড়ার কাজল মালাকার জানান, প্রতিমা ও এর প্রত্যেকটির অনুষঙ্গ তৈরি, নিখুঁতভাবে কাজ ফুঁটিয়ে তুলতেই সর্বোচ্চ মনোযোগ দেয়া হচ্ছে। আষাঢ়ের ২০ তারিখ থেকে তারা প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করছেন, কাজ প্রায় শেষ। তিনি এবার ৩৫টি প্রতিমার তৈরির কাজ করছেন উল্লেখ করে বলেন, এখন কেবল প্রতিমাগুলোর নকশা করা হচ্ছে। আর এক সপ্তাহের মধ্যেই তৈরি করা দুর্গার প্রতিমাগুলোতে রঙ লাগিয়ে সুসজ্জিত করা হবে বলে জানান তিনি।বগুড়ার শিবগঞ্জের পুরোহিত প্রদীপ চক্রবর্তী জানান, আগামী ১৭ অক্টোবর দেবী বোধনের মাধ্যমে সূচনা হবে। আগামী ১৭ অক্টোবর ষষ্ঠিপূজার মধ্যদিয়ে এবার শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হবে। পরদিন ১৯ অক্টোবর সপ্তমী, ২০ অক্টোবর অষ্টমী, ২১ অক্টোবর নবমী, ২২ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনে মধ্যে দিয়ে শেষ হবে পাঁচ দিনের শারদীয় এই উৎসব। সোনাতলা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিকাশ চন্দ্র স্বর্ণকার জানান, এবার সোনাতলায় ৩৯টি মণ্ডপে পূজার আয়োজন চলছে।এদিকে, বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা আর সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপনের লক্ষ্যে বগুড়ায় এরই মধ্যে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। ষষ্ঠিপূজা অর্থাৎ দেবীর বোধনের আগের দিন থেকে ২২ অক্টোবর প্রতিমা বিসর্জনের রাত পর্যন্ত এ বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলবৎ থাকবে। এ জন্য জেলা পুলিশ সুপারের (এসপি) কার্যালয় থেকে এরই মধ্যে থানা পর্যায়ে বিশেষ বার্তা পাঠানো হয়েছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা প্রতিমা ও মণ্ডপ তৈরি থেকে প্রতিমা স্থাপন পর্যন্ত সব কার্যক্রম ও আচার-অনুষ্ঠান যেনো শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন করতে পারেন সে ব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকার্তাদের নজর রাখতে বলা হয়েছে। বগুড়ার সহকারী পুলিশ সুপার গাজীউর রহমান বলেন, প্রতি বছরের মতো এবারও শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা যেনো শান্তিপূর্ণ পরিবেশে তাদের ধর্মীয় উৎসব উদযাপন করতে পারেন সেজন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। লিমন বাসার/এআরএ/আরআইপি
Advertisement