বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষ উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার যথাযথ চিকিৎসা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
Advertisement
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া বার্তা পাঠিয়েছেন তিনি উন্নত চিকিৎসা নিতে আগ্রহী। আমরা তার সাথে দেখা করার জন্য কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি, কিন্তু এখনও কোনো রেসপন্স পাইনি।
রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে আটকে রাখা হয়েছে এমন অভিযোগ করে ফখরুল বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। তার যেকোনো অবস্থার জন্য এই সরকারকেই দায় নিতে হবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। গতকাল তার বোন পুত্রবধূ এবং নাতি-নাতনিরা দেখা করেছেন। তারা বাইরে এসে অঝোরে কান্নাকাটি করছেন। তারা বলেছেন দেশনেত্রী গুরুতর অসুস্থ। খেতে পারছেন না। বমি হচ্ছে।টয়লেটে যেতে দু'জনের সাহায্য নিতে হচ্ছে।
Advertisement
মির্জা ফখরুল দাবি করেন, সম্পূর্ণ মিথ্যা মামলায় তাকে সাজা দেয়া হয়েছে। ন্যূনতম জামিন, যেটা তার প্রাপ্য অধিকার সেটাও দেয়া হচ্ছে না। সরকার এ কাজ করতে গিয়ে বিচার বিভাগকে নিয়ন্ত্রণ করছে। দুঃখের বিষয় উচ্চ আদালতকেও তারা নিয়ন্ত্রণ করছে। এ ধরনের মামলায় প্রায় সবাই জামিনে মুক্ত। ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা থেকে শুরু করে মহীউদ্দীন খান আলমগীর পর্যন্ত সবাই এ ধরনের মামলায় জামিনে মুক্ত।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, তিন মাস আগে যে মেডিকেল রিপোর্ট দেয়া হয়েছে সেখানে ডাক্তাররা বলছেন খালেদা জিয়া পঙ্গু অবস্থায় আছেন। তার উন্নত চিকিৎসা দরকার। তিনি সেটা পাচ্ছেন না।
উন্নত চিকিৎসার জন্য অবিলম্বে খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করেন মির্জা ফখরুল।
এ সময় বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান ডাক্তার এ জেড এম জাহিদ হোসেন অভিযোগ করেন, মেডিকেল বোর্ডের কেউ তাকে দেখতে যাচ্ছেন না। মেডিকেল বোর্ড বলেছে অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্ট দরকার। মেডিকেল বোর্ডে যারা আছেন তারা স্বনামধন্য এটা ঠিক। কিন্তু এখন অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের জন্য অ্যাডভান্স মেডিকেল সেন্টার দরকার, যা বিএসএমএমইউ নয়।
Advertisement
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদের সাহেব তো এখানে ভর্তি হয়েছিলেন। তার অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের জন্য তাকে বিদেশে নিয়ে যেতে হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল জয়নুল আবেদিন সাহেবকে সিএমএইচে ভর্তি থেকে অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের জন্য বিদেশে যেতে হয়েছে। অর্থাৎ অ্যাডভান্স ট্রিটমেন্টের জন্য অ্যাডভান্সড মেডিকেল সেন্টারই দরকার।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, আব্দুল মঈন খান, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
কেএইচ/এনএফ/জেআইএম