ইরানের বিপ্লবী গার্ডের (আইআরজিসি) অভিজাত শাখা কুদস্ বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল কাসেম সোলেইমানি ইরাকে মার্কিন বাহিনীর হামলায় নিহত হওয়ার পর গোটা বিশ্ব কাঁপছে এ আলোচনায়। যদিও মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় সোলেইমানির ভূমিকার কারণে তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের টার্গেট ছিলেন দীর্ঘদিন ধরে। তবে শুক্রবার (৩ জানুয়ারি) ভোরে বিমান হামলায় তার প্রাণহানির বিষয়টি অনেকের কাছেই আকস্মিক ঠেকছে। মার্কিন পর্যবেক্ষকদের ভাষ্যে, ঘটনাটির জের শুরু হয়েছে গত সপ্তাহে রকেট হামলায় এক মার্কিন ঠিকাদারের প্রাণহানির পর। পুরো সপ্তাহের ঘটনাক্রম জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
Advertisement
শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর): সরকারবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল ইরাকে রকেট হামলায় এক মার্কিন ঠিকাদার নিহত হন। ওই হামলায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইরাকের সামরিক বাহিনীর বেশ ক’জন সদস্যও আহত হন।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর): যুক্তরাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনী ইরাক ও সিরিয়ায় বিমান হামলা চালায়। ওই হামলা হয় ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীর পাঁচটি স্থাপনায়। ওয়াশিংটনের ভাষ্যে, ওই সশস্ত্র গোষ্ঠী আমেরিকান সেনাদের আবাস ও কর্মস্থল মার্কিন-ইরাকি সামরিক স্থাপনায় হামলায় জড়িত।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর): বাগদাদে যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসে হামলা চালায় ইরান-সমর্থক বিক্ষোভকারীরা। তারা দূতাবাস লক্ষ্য করে পাথর ছোড়ে। সেখানকার নিরাপত্তা চৌকিতে আগুন দেয়। পরে নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ বাধে। তখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, তিনি ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ চান না, তবে যদি এমন সংঘাত চলেই আসে, ইরান বেশিদিন টিকতে পারবে না।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি): ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে কড়া হুঁশিয়ারি বার্তা দেয় মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগের সদরদফতর পেন্টাগন। প্রতিরক্ষামন্ত্রী মার্ক এসপার বলেন, ইরান-সমর্থিত বাহিনীগুলো যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থবিরোধী বাড়তি উসকানি দিতে পারে। যদি তারা এমনটি করে, তবে তাদের অনুশোচনায় পুড়তে হতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র যদি কোনো আক্রমণ আন্দাজ করতে পারে তবে যথাযথ পদক্ষেপ নেবে।
শুক্রবার (১ জানুয়ারি): যুক্তরাষ্ট্রের বাহিনীর বিমান হামলায় ইরানের সবচেয়ে পরাক্রমশালী মেজর জেনারেল কাসেম সোলেইমানির নিহত হওয়ার খবর দেয় পেন্টাগন। তাদের পক্ষ থেকে বলা হয়, ইরানের ভবিষ্যৎ আক্রমণের পরিকল্পনা ভণ্ডুল করা ছিল এ হামলার লক্ষ্য।
উল্লেখ্য, ইরাকের সরকারবিরোধী ও সরকার-সমর্থকদের বিক্ষোভের মধ্যে ইরানের বিভিন্ন গোষ্ঠী ফায়দা লুটতে চাইছে বলে মনে করে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন দূতাবাসে হামলার পেছনে ইরানের ওই গোষ্ঠীগুলোই জড়িত বলে মনে করে তারা। আর এই গোষ্ঠীগুলোর প্রধান হিসেবে সোলেইমানিকে বহু আগে থেকেই ‘টার্গেট’ করে রেখেছিল শত্রুপক্ষ।
এইচএ/এমকেএইচ
Advertisement