দেশজুড়ে

আরাকান আর্মি নেতা ডা. রেনিনকে খুঁজছে পুলিশ

মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী দল আরাকান আর্মির শীর্ষ নেতা ডা. রেনিন সোয়ে ওরফে রেনেজু মারমাকে হন্যে হয়ে খুঁজছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে বিদেশি নাগরিক অনুপ্রবেশ এবং সন্ত্রাস দমন আইনে পৃথক দুটি মামলা দায়েরের পর তাকে গ্রেফতারে পুলিশ অভিযান শুরু করে।মিয়ানমারের এই বিদ্রোহী নেতার বর্তমান অবস্থান সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া না গেলেও অজ্ঞাত স্থান থেকে সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে এবং ভিডিও আপলোড করে প্রতিনিয়ত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) চিত্ত রঞ্জন পাল। তিনি জানান, মামলার পর তাকে ধরতে সীমান্তরক্ষী চৌকিসহ থানায় থানায় ম্যাসেজ দেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা হয়েছে। মামলা দুটিতে অপর তিন আসামি তার বাড়ি থেকে আটক আরাকান আর্মির সক্রিয় সদস্য অংনু ইয়ং রাখাইন এবং বাড়ির কেয়ারটেকার মংসই অং মারমা ও জসি অং মারমা এখন রাঙামাটি কারাগারে জেলহাজতে রয়েছেন। আটক ওই তিনজনকে কয়েক দফায় নেয়া পুলিশ রিমান্ডে ১৬৪ ধারায় দেয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে নিজেদের আরাকান আর্মির সঙ্গে জড়িত থাকাসহ তাদের নেতা ডা. রেনিন সোয়ে ওরফে রেনেজু মারমা একজন সংগঠনটির শীর্ষনেতা বলে সঠিক তথ্য ও সাক্ষ্য প্রমাণ মিলেছে। ওইসব অপরাধে আদালতে মামলার চার আসামির সাজা নিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে। মূল আসামি ডা. রেনিন সোয়ের অবস্থান সম্পর্কে এখনো কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশে যেখানে পাওয়া যাবে সেখান থেকে তাকে আটক করা হবে বলে জানান সহকারী পুলিশ সুপার চিত্ত রঞ্জন পাল।      এদিকে আটকদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে জেলা পুলিশের অনুরোধে ইতোমধ্যে আরাকান আর্মির নেতা ডা. রেনিন সোয়ের তিনটি এবং তার স্ত্রী হ্লাচিং নু মারমার নামে একটি ব্যাংক হিসেবে লেনদেন বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক এবং ফাস্ট সিকিউরিটি ব্যাংক কাপ্তাই দোভাষী বাজার শাখা। সূত্রগুলোর তথ্য মতে, রাঙামাটির রাজস্থলীতে সুরম্য বাড়ি করে সামাজিক কর্মকাণ্ডের আড়ালে গত প্রায় দেড় দশক ধরে আরাকান আর্মির তৎপরতা চালিয়ে আসছিলেন দলটির শীর্ষ নেতা ডা. রেনিন সোয়ে ওরফে রেনেজু মারমা। মিয়ানমার থেকে রাজস্থলী এসেছিলেন ২০-২৫ বছর আগে। সেখানে স্থানীয় মেয়ে হ্লাচিং নু মারমাকে বিয়ে করেন তিনি। গত প্রায় মাস দেড়েক আগে বান্দরবানের থানচির বড় মদকে বিজিবির একটি টহল দলের ওপর গুলিবর্ষণ করে আরাকান আর্মি হামলা চালালে ২৭ আগস্ট ডা. রেনিন সোয়ের রাঙামাটির রাজস্থলীর সুরম্য বাড়িতে অভিযান চালায় যৌথবাহিনী। ওই সময় বাড়ি থেকে ঘোড়া, মোটরসাইকেল, ল্যাপটপ, ক্যামেরা, আরাকান আর্মির পোশাকসহ বেশ কিছু সরঞ্জাম উদ্ধারসহ আরাকান আর্মির সদস্য অংনু ইয়ং রাখাইনকে আটক করা হয়। এর একদিন পর ২৮ আগস্ট বাড়ির দুই কেয়ারটেকার মংশৈ অং মারমা ও জসি অং মারমাকে আটক করে পুলিশ। ওই ঘটনায় রাজস্থলী থানায় পৃথক দুইটি মামলা করে পুলিশ। একটি বিদেশি অনুপ্রবেশ আইনে এবং অন্যটি সন্ত্রাস দমন আইনে। মামলা দুটির মূল আসামি বাড়ির মালিক ও আরাকান আর্মির শীর্ষ নেতা ডা. রেনিন সোয়ে ওরফে রেনেজু মারমা এখনো পলাতক।সুশীল প্রসাদ চাকমা/এসএস/এমএস

Advertisement