সাহিত্য

মাহফুজা অনন্যার কবিতা

১. হাইফেন

Advertisement

ধর্ষণের মিছিল নেই, প্রতিবাদী পায়ের লংমার্চ দেখি নাশুনি না জোরালো কোনো আল্টিমেটাম ত্রাতা হয় না শহর, রাজপথঅনুসৃত পড়ে থাকে উদার অর্থনীতি, কুতর্ক।

টেরোরিস্টের প্রগাঢ় আবেগ দ্বিতীয় বিদ্যায় ম্লান হয়ে যায়হরিলুট হয়ে যায় ধনাত্মক তুঘলকি আন্দোলনআন্দোলনের ফসল ওঠে না ঘরে,জোছনা চুরি যায় অমাবস্যার অকালে।

ঘৃণার সমুদ্রে সাঁতার কাটে সাবলীল রাজহাঁস জীবন ও কবিতার মাঝে হাইফেন রেখে কবি লিখে চলেন কবিতা।

Advertisement

এত অনিয়ম তবু প্রতিদিন সন্ধ্যা হলেই মানুষ নিয়ম করে ফিরে তাদের আপন মানুষের কাছে দারুণ অভ্যাসেপ্রেমিকার দু’স্তনের মতো ‘লোভ ও ভয়’কে তারা বুকে জড়িয়ে ঘুমায় …

২. সুযোগ্য প্রেমিক

প্রায়ই আমার শরীরের কাপড়গুলো প্রশ্ন করে কীভাবে আমার শরীর থেকে কয়েক টুকরো দেহ ছড়িয়েছে?

বলে, তার মধ্যে তো কোনো প্রেম নেই, মায়া নেইআমাদের সন্তানরাও যেন কেউ কারও নয়ওরা শুধু আছে;কেউ কারও অংশ নয়…

Advertisement

আমিও জানি আমার কেউ নেই‘একাকীত্ব ও অন্ধকার’ আমার সুযোগ্য প্রেমিকআমার আত্মায় কেবলি তাদের বাস

বয়সী চাঁদের মতো আমি অসহায় কিংবা স্তনের তলদেশে মুখরাখা অবুঝ শিশুর মতো ‘একাকীত্ব ও অন্ধকার’ আমাকে জড়িয়ে রাখে মায়ায়…

৩. মৃত্যুর ফ্রি-ভার্স

শহরের ক্ষ্যাপা কুকুরগুলো মাঝেমাঝে গুলি করে নিধন করা হয়ঠিক এমন দু-একটা অমানুষ নিধন করা হলে মনুষ্য-প্রজাতি ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা পেতো

জানি, এমন কথা কবির মুখে বেমানান...কবি বৃক্ষসম, একজনম বৃক্ষ হয়ে নীরব হয়ে কাটিয়ে দেবে…

কবি গায়ে পরে থাকবে সহিষ্ণুতার জামাকবির হৃদয় নিঃসঙ্গতার ম্যানিফিস্টোকবির থাকবে পাহাড়ের মতো স্তব্ধতার দায়...

ক্রোধ, অস্থিরতা কবির শরীরে বেমানাননিতম্বে জলোচ্ছ্বাস কিংবা জোয়ারের মতো উচ্ছ্বাসও কবির মানায় না...

কবির চৌকাঠ, অন্তঃপুর, জানালায় জানালায় নিরন্তর উড়বে মৃত্যুর ফ্রি-ভার্স…

৪. নিপীড়িত জাত

তোমাকে একটি নারীর ছবি আঁকতে বলা হলোতুমি আঁকলে যোনি, জরায়ু ও সম্ভোগের অঙ্গগুলোঅতঃপর তোমাকে ছবিটির শিরোনাম দিতে বলা হলোসম্ভোগের অঙ্গগুলো বাদে তুমি লিখে দিলে ‘বাকিসব অনিষ্ট’

আমি নিজেই ছবির বাকিটুকু শেষ করতে চাইলামছবি আঁকা শেষ হলে একসময় ছবিটির শিরোনাম এসে দাঁড়ালো“মুখ বুজে ঠকে যাওয়া নিপীড়িত জাত”!

এইচআর/বিএ