কবিতা, বয়স ১৩। খুব ছোট থাকতে মা-বাবাকে হারিয়েছে। এখন নানির সঙ্গে রাজধানীর গুলিস্তানের রেল কলোনি বস্তিতে থাকে। ইচ্ছা থাকলেও কবিতার পক্ষে স্কুলে যাওয়া সম্ভব না। তাই অন্যান্য শিশুর মতো নতুন বইয়ের ঘ্রাণও নিতে পারে না সে।
Advertisement
কবিতার সঙ্গেই বেড়ে উঠছে রবিউল। দুজনের বয়স প্রায় একই। তবে রবিউল থাকে মা-বাবার সঙ্গে, গুলিস্তান রেল কেলোনি বস্তিতে। অভাবের কারণে বাবার সঙ্গে ফুটপাতের এক দোকানে কাজ করে সে। তাই তার পক্ষেও স্কুলে যাওয়া সম্ভব না। ফলে রবিউলও শুঁকতে পারেনা নতুন বইয়ের ঘ্রাণ।
কবিতা ও রবিউলের মতো এরকম ২৫ জন সুবিধাবঞ্চিত শিশুর বসবাস গুলিস্তানের রেল কলোনিতে। আর্থিক সঙ্কটের কারণে স্কুলে যেতে পারে না তারা। কিন্ত কবিতা-রবিউলরাও স্বপ্ন দেখে নতুন পোশাক পরে, কাঁধে ব্যাগ নিয়ে স্কুলে যাওয়ার।
তাদের এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে এবং তাদের মাঝে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে গুলিস্তানের রেল কলোনিতে চালু করা হয়েছে ‘এইচএসএফ স্কুল’। বেসরকারি সংগঠন হিউম্যান সেফটি ফাউন্ডেশন (এইচএসএফ) ২০১৮ সালে এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করে।
Advertisement
এইচএসএফ বিশ্বাস করে, শিক্ষাই পরিবর্তনের হাতিয়ার। শিক্ষা উন্নয়ন আর সমৃদ্ধির প্রধান অস্ত্র। শিক্ষা ছাড়া ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করাও অনেক কঠিন।
বাংলাদেশ সরকারও শিক্ষাকে দিয়েছে অধিক গুরুত্ব। তাই প্রতিবছরের শুরুতেই সরকারের পক্ষ থেকে উদযাপন করা হয় পাঠ্যপুস্তক উৎসবের। এ সময় শিশুদের হাতে তুলে দেয়া হয় নতুন বই।
সরকারের এই মহতী উদ্যোগের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে এইচএসএফ বুধবার (১ জানুয়ারি) উদযাপন করে পাঠ্যপুস্তক উৎসবের। বছরের প্রথম দিন গুলিস্তানের রেল কলোনি স্কুলে সরকারের পক্ষ থেকে পাওয়া নতুন বই বিতরণ করা হয় এসব সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে। একই সঙ্গে স্কুলের শিক্ষার্থীদের দেয়া হয় স্কুলের নতুন পোশাক ও শীতের কাপড়। এ সময় শিশুদের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে আনন্দ আর উচ্ছ্বাস।
এগুলো বিতরণের সময় উপস্থিত ছিলেন এইচএসএফ’র চেয়ারম্যান এম এ মুকিত, প্রধান নির্বাহী বোরহানুল আশেকীন, নির্বাহী (অর্থ) অলিভ হোসাইন, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার সাইমা হোসেন।
Advertisement
আরও উপস্থিত ছিলেন এইচএসএফ’র সদস্য সাইফুল ইসলাম, জিনিয়া কবির সূচনা, ইশরাত জাহান ও ফিরোজ হাসান। উপস্থিত ছিলেন এইচএসএফ’র স্কুলের শিক্ষকবৃন্দসহ স্বেচ্ছাসেবকরা।
এম এ মুকিত জানান, পর্যায়ক্রমে এইচএসএফ পরিচালিত অন্য স্কুলেও বই উৎসব উদযাপন করা হবে।
এফএইচ/এমএসএইচ/এমকেএইচ