নিয়মানুযায়ী বছরের প্রথম দিনই উদ্বোধন হয়েছে মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা। এবার মেলার ২৫তম আসর বসেছে। বুধবার (১ জানুয়ারি) বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মেলার উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে আনুষ্ঠানিকভাবে মাসব্যাপী এ মেলা শুরু হলেও এখনো অধিকাংশ স্টল কিংবা প্যাভিলিয়নই প্রস্তুত হয়নি।
Advertisement
উদ্বোধনের পর দুপুরে বাণিজ্য মেলার প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখা যায়, মেলা আয়োজনকারী কর্তৃপক্ষ রফতানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) তাদের নিজেদের কাজই সম্পন্ন করতে পারেনি। অন্যদিকে মেলায় অংশ নেয়া অধিকাংশ স্টল/প্যাভিলিয়নও নিজেদের প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পারেনি।
সরেজমিনে দেখা যায়, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর কর্মকর্তাদের সবার বসার জায়গা এখনো প্রস্তুত হয়নি। বুধবার দুপুরেও চলছিল তাদের বসার জায়গা প্রস্তুতের কাজ। ভোক্তা অধিদফতরের কর্মকর্তার উপস্থিতিও চোখে পড়েনি। ফলে মেলায় কেউ প্রতারিত হলে তাৎক্ষণিকভাবে তারা ভোক্তা অধিকারের সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন।
প্রস্তুত নয় ডিজিটাল তথ্য কেন্দ্রও। যেখান থেকে ডিজিটাল ম্যাপ, ওয়ে ফাইন্ডিং (চলাচলের রাস্তা) ও ডিরেক্টরির (নির্দেশনা) সেবা দেয়া হয়। ডিজিটাল তথ্য কেন্দ্রে কোনো লোক কিংবা প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির উপস্থিতিও দেখা গেল না।
Advertisement
বেশিরভাগ জায়গায়ই কাজ চলমান। আবার কিছু কিছু স্টল/প্যাভিলিয়নে মালামাল গোছাতে ব্যস্ত সময় পার করছিলেন কর্মীরা।
অন্য অনেক প্যাভিলিয়নের মতো এখনো প্রস্তুত নয় ফ্রুটিকাও। সেখানে কর্মরতরা জানান, ভেতরের কাজ শেষ হয়েছে। বাইরের কাজ মাত্র ২৫ শতাংশের মতো হয়েছে। বাকি ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ করতে আরও চার-পাঁচ দিন লেগে যাবে।
আরও দেখা যায়, মেলার ভিআইপি ফটক প্রস্তুত। অন্যদিকে স্মৃতিসৌধ ও মেট্রোরেলের আদলে করা মূল ফটকও সম্পন্ন হয়েছে।
এসব বিষয়ে কথা বলতে আজ ও গতকাল ( বুধবার ও মঙ্গলবার) মেলার সদস্য সচিব ও রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর উপ-পরিচালক (ফাইন্যান্স) মো. আবদুর রউফকে মোবাইলফোনে কল দেয়া হয়। তিনি রিসিভ করেননি। অবশ্য এর আগে তিনি জাগো নিউজের কাছে দাবি করেছিলেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সব কাজ শেষ করতে পারবেন।
Advertisement
মেলা সূত্র জানায়, নতুন বছরের শুরুর দিন চালু হওয়া এ মেলা আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকবে। টিকিটের দাম বাড়িয়ে এ বছর প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ৪০ টাকা এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য ২০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এবার মেলা মাঠের আয়তন মেলা প্রাঙ্গণ সংশ্লিষ্ট গাড়ি পার্কিংয়ের জায়গাসহ প্রায় ৩২ একর।
এবারের মেলায় মোট স্টল/প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ৪৮৩টি। এর মধ্যে বিভিন্ন ক্যাটাগরির প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ১১২টি, মিনি প্যাভিলিয়নের সংখ্যা ১২৮টি এবং বিভিন্ন ক্যাটাগরির স্টলের সংখ্যা ২৪৩টি। এর মধ্যে বিদেশি প্যাভিলিয়ন ২৭টি, বিদেশি মিনি প্যাভিলিয়ন ১১টি এবং বিদেশি প্রিমিয়ার স্টলের সংখ্যা ১৭টি।
এবারের মেলায় ২১টি দেশ অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ ছাড়াও থাইল্যান্ড, ইরান, তুরস্ক, নেপাল, চীন, মালয়েশিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, পাকিস্তান, হংকং, দক্ষিণ কোরিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, জার্মানি, অস্ট্রেলিয়া, ভুটান, ব্রুনাই, দুবাই, ইতালি ও তাইওয়ান।
পিডি/এফআর/এমএস