মানুষের মন খারাপ হয়। তাতে বিষন্নতা বাড়ে, একাকীত্বে দিন কাটে। অনেক সময় চারপাশে অনেক মানুষ থাকার পরেও কেমন যেন একা একা লাগে। কিন্তু শুধু কি মানুষেরই এমন হয়? মোটেও না। অবাক হলেও সত্যি যে, নিউজিল্যান্ডের জঙ্গলে সম্পূর্ণ একা হয়ে আছে একটি বিশেষ প্রজাতির গাছ। দীর্ঘদিন ধরেই একাকীত্বের বোঝা বয়ে চলেছে এই গাছটি। এ নিয়ে চিন্তিত বিজ্ঞানীরাও।
Advertisement
এই গাছটি পেনানটিয়া করিমবোসা প্রজাতির। স্থানীয় মাওরি উপজাতির ভাষায় যাকে বলা হয় ‘কাইকোমাকো’। শুধু মাওরি উপজাতির নয়, নিউজিল্যান্ডের জীব-প্রজাতির অন্যতম হেরিটেজ এই উদ্ভিদ। এই প্রজাতির একটি মাত্র গাছই এখন টিকে আছে পৃথিবীতে। তাই এই গাছটি এখন একা। এমন পরিস্থিতি বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই শুরু হয়েছে। সেখানকার পরিবেশবিদরা বলছেন সঙ্গী না থাকলে বংশবিস্তার হবে কিভাবে ?
বিজ্ঞানীরা বলছেন, যে অঞ্চলে এই গাছ জন্মেছে সেটা মূলত গবাদি পশুর চারণ ভূমি। তাই গরু, ভেড়া বা ছাগল খেয়ে ফেলায় ধীরে ধীরে গাছের সংখ্যা কমতে শুরু করেছে। এছাড়া প্রকৃতির খামখেয়ালিপনা তো আছেই। তার ওপর এই গাছটি পৃথিবীর একটি বিরল প্রজাতির গাছ। তাই বলা চলে এখন সে একা।
পরিবেশবিদ ও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জ্ঞানেন্দ্র নারায়ণ সেনগুপ্ত জানিয়েছেন, এই গাছটি আসলে একটি ওষধি গাছ। প্রকৃতিতে দূষণের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় এই গাছটির অস্তিত্ব ধীরে ধীরে মুছে যাচ্ছে। বিভিন্ন চর্ম রোগের ওষুধ পাওয়া যায় এই গাছের পাতার নির্যাস থেকে। তাই এই গাছ বিলুপ্তপ্রায় হওয়ায় মানবজাতির জন্যও তা উদ্বেগের।
Advertisement
তবে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞানীদের মতে, খুব শিগগিরই এই প্রজাতির আরও উদ্ভিদ জোগাড় করতে পারবেন তারা। এ নিয়ে গবেষণাও চলছে বিজ্ঞানীদের মধ্যে। তারা একটি নার্সারিতে কৃত্রিমভাবে এই উদ্ভিদ উৎপাদনের চেষ্টা করছেন। তাদের এখন একমাত্র লক্ষ্য গাছটির একাকীত্ব দূর করা অর্থাৎ এই গাছের সংখ্যা বৃদ্ধি করা।
টিটিএন/এমএস