শীতের হিমেল হাওয়ায় সিক্ত হয়ে সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটায় বছরের শেষ সূর্যাস্তকে বিদায় আর নতুন বছরের প্রথম সূর্যোদয়ের রক্তিম আভাকে স্বাগত জানিয়েছেন লক্ষাধিক পর্যটক।
Advertisement
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বছরের শেষ সূর্যাস্ত ও নতুন বছরের প্রথম প্রহরের সূর্যোদয়কে স্বাগত জানাতে পর্যটকদের পদচারণায় মুখরিত সাগরকন্যা কুয়াকাটা। প্রতি বছরের মতো এবারও পর্যটকদের ভিড়ে মুখর সমুদ্র সৈকত।
পাশাপাশি দর্শনীয় স্থানগুলোতে রয়েছে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়। খালি নেই হোটেল-মোটেল-কটেজের কক্ষ। পর্যটকদের আতিথেয়তায় ব্যস্ত সময় পার করছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ, নৌ-পুলিশ ও পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। পর্যটকদের পদচারণা এরই মধ্যে বুঝিয়ে দিয়েছে নতুন বছরকে স্বাগত জানাতে উৎসবের আমেজের কোনো কমতি নেই।
স্থানীয় সূত্র জানায়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ লীলাভূমি সাগরকন্যা কুয়াকাটা। মনোরম নৈসর্গিক দৃশ্যের হাতছানি ভ্রমণবিলাসী মানুষকে বারবার টেনে আনে সমুদ্রের কাছে। প্রতি বছর শীতের আগমনে পর্যটন মৌসুমের শুরু থেকে পর্যটকদের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের বেলাভূমি সাগর কন্যা কুয়াকাটা। বিজয় দিবস, বড়দিন, ইংরেজি নববর্ষের ছুটির আনন্দ উপভোগ করতে দেশি-বিদেশি প্রকৃতি আর সমুদ্রপ্রেমী মানুষের পদচারণায় মুখর হয়ে ওঠে সাগরকন্যার দীর্ঘ বেলাভূমি। এ বছরও পুরনো ইংরেজি ২০১৯ সালকে বিদায় আর ২০২০ সালকে বরণ করতে কুয়াকাটায় জড়ো হয়েছেন লাখো পর্যটক।
Advertisement
সমুদ্রের ঢেউয়ের সঙ্গে ভোরের সূর্যোদয় আর গোধূলি বেলার সূর্যাস্ত দেখে বিমোহিত পর্যটকরা। দর্শনীয় স্থানসহ পর্যটনমুখী ক্ষুদ্র ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়। তবে হোটেল-মোটেল-কটেজের কক্ষ খালি না পেয়ে অনেককেই আশ্রয় নিতে হয়েছে সাত-আট কিলোমিটার দূরের আবাসিক হোটেলে এবং বাসা-বাড়িতে।
ট্যুরিস্ট পুলিশ জানায়, পর্যটকদের জন্য কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কেউ যাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হয় সেজন্য সব ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
বছরের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে ঢাকার তেজগাঁও থেকে আগত পর্যটক রুবেল চৌধুরী বলেন, প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তিকে পেছনে ফেলে ২০১৯ সালের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে এখানে এসেছি। খুব কাছ থেকে সূর্যকে বিদায় জানালাম, সেই সঙ্গে নতুন বছরকে আমন্ত্রণ জানিয়েছি; যেন মঙ্গল বয়ে আনে।
ঢাকা থেকে আসা পর্যটক তানজিলা তালুকদার বলেন, বিয়ের পর প্রথম কুয়াকাটায় এসেছি। পাওয়া না পাওয়া অনেক কিছুই রয়েছে। বিদায় বছরের অনেক স্মৃতি রয়েছে। সব ভুলে পুরোনো বছরের শেষ সূর্যাস্তের সাক্ষী হলাম, নতুন বছরকে স্বাগত জানালাম।
Advertisement
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, থার্টি ফার্স্ট নাইটকে কেন্দ্র করে কুয়াকাটায় প্রচুর পর্যটকের আগমন ঘটেছে। পর্যটকরা যাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন সেজন্য সংশ্লিষ্টদের নিয়ে সভা করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সুন্দর এবং পর্যটকবান্ধব। জেলা পুলিশ, নৌ-পুলিশের সমন্বয়ে পর্যটকদের জন্য সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। পর্যটকদের নিরাপত্তার কোনো কমতি রাখা হয়নি।
মহিব্বুল্লাহ চৌধুরী/এএম/এমকেএইচ