সরকারের ব্যবস্থাপনায় ব্যাংক থেকে পাঁচ শতাংশ সরল সুদে (সুদের ওপর সুদ নয়) সর্বোচ্চ ৭৫ লাখ টাকা পর্যন্ত গৃহনির্মাণ ঋণ পাচ্ছেন সরকারি কর্মচারীরা। এ ঋণের জন্য ব্যাংক মোট ১০ শতাংশ হারে সরল সুদ নিচ্ছে। তবে ঋণগ্রহীতাদের দিতে হচ্ছে পাঁচ শতাংশ। বাকিটা সরকারের পক্ষ থেকে ভর্তুকি হিসেবে পরিশোধ করা হবে।
Advertisement
তবে এ ঋণে সুদহার এক শতাংশ কমাল সরকার। সরকারি কর্মচারীদের জন্য গৃহনির্মাণ ঋণের সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সরল সুদ পুনর্নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ঋণগ্রহীতা ব্যাংক রেটের সমহারে (পাঁচ বা পাঁচ শতাংশের কম বা বেশি হতে পারে) সুদ পরিশোধ করবেন। সুদের অবশিষ্ট অর্থ সরকার ভর্তুকি হিসেবে প্রদান করবে।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) অর্থ বিভাগের উপসচিব দিল আফরোজা স্বাক্ষরিত এ-সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক সরকারি কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহনির্মাণ ঋণের সুদের হার সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ পুনর্নির্ধারণ করা হলো।
Advertisement
এটি হবে সরল সুদ এবং ঋণগ্রহীতা কর্মচারী কেবলমাত্র ব্যাংক রেটের সমহারে সুদ পরিশোধ করবেন। এ পুনর্নির্ধারিত সুদের হার কেবলমাত্র নতুন ঋণগ্রহীতার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে নতুন প্রজ্ঞাপন কার্যকর হবে বলে জানানো হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, আগামী ১ জানুয়ারি থেকে শিল্পঋণে সুদহার ৯ শতাংশে বেধে দেয়া হয়েছে। তাই গৃহনির্মাণ ঋণেও সুদহার ১০ শতাংশ থেকে ৯ শতাংশে নামিয়ে আনা হলো।
তিনি আরও জানান, ১০ শতাংশ সুদ থাকার সময় ঋণগ্রহীতাকে পরিশোধ দিতে হতো পাঁচ শতাংশ আর সরকার দিত পাঁচ শতাংশ। এখন ৯ শতাংশ নির্ধারণ করার পর ঋণগ্রহীতাদের ব্যাংক রেটের সমহারে সুদ পরিশোধ করতে হবে, না কি এটি কমিয়ে সাড়ে চার কিংবা চার শতাংশ করা হবে, সেটি খুব শিগগির বৈঠক করে নির্ধারণ করা হবে।
এর আগে ২০১৮ সালের ৩০ জুলাই অর্থ বিভাগ থেকে ‘সরকারি কর্মচারীদের জন্য ব্যাংকিং-ব্যবস্থার মাধ্যমে গৃহনির্মাণ ঋণ প্রদান নীতিমালা-২০১৮’ প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হয়।
Advertisement
ওই প্রজ্ঞাপনে এসব ঋণের সুদহারের ক্ষেত্রে বলা হয়, এ ঋণের জন্য ব্যাংক ১০ শতাংশ হারে সরল সুদ নেবে। অর্থাৎ চক্রবৃদ্ধি সুদ (সুদের ওপর সুদ) নেয়া হবে না। তবে ঋণগ্রহীতাকে দিতে হবে পাঁচ শতাংশ। বাকিটা সরকারের পক্ষ থেকে পরিশোধ করা হবে ভর্তুকি হিসেবে। তবে প্রজ্ঞাপনে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের শিক্ষক-কর্মচারীরা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না।
তবে সম্প্রতি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের শিক্ষক-কর্মচারীরগের এ ঋণের আওতায় এনে নতুন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য নতুন নীতিমালার আওতায় গৃহনির্মাণ ঋণের সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ সরল সুদ, অর্থাৎ সুদের ওপর কোনো সুদ আদায় করা যাবে না। ঋণগ্রহীতা ব্যাংক রেটের সমহারে (প্রায় ৫ শতাংশ) সুদ পরিশোধ করবেন। সুদের অবশিষ্ট অর্থ সরকার ভর্তুকি হিসেবে প্রদান করবে। সরকার সময়ে সময়ে সুদের এ হার পুনর্নির্ধারণ করতে পারবে। তবে পুনর্নির্ধারণ অনুরূপ সুদের হার কেবলমাত্র নতুন ঋণগ্রহীতার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।
এমইউএইচ/এসআর/পিআর