বিশ্বে প্রথমবারের মতো জিন-সম্পাদনা করে দুই জমজ শিশুর জন্ম দিয়েছেন বলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টিকারী চীনা চিকিৎসক হি জিয়ানকুইকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির একটি আদালত। সোমবার চীনের সরকারি গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, আইন বহির্ভূত উপায়ে মেডিক্যাল পরীক্ষা চালানোর দায়ে সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির এই অধ্যাপককে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।
Advertisement
চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া বলছে, জিন-সম্পাদনা করে মানব শিশুর জন্ম দিয়েছেন বলে দাবি করে গত বছর বিশ্বের বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়কে চমকে দিয়েছিলেন হি জিয়ানকুই। আদালত অনৈতিক মেডিক্যাল পরীক্ষার দায়ে তাকে তিন বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৪ লাখ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার জরিমানা করেছেন।
সিনহুয়া বলছে, পুনরুৎপাদনের উদ্দেশে মানব ভ্রূণের জিন সম্পাদনার দায়ে শেনঝেনের আদালত অধ্যাপক হি জিয়ানকুইকে কারাদণ্ড দিয়েছেন। তার পরীক্ষায় জিন-সংশোধিত তৃতীয় এক শিশুরও জন্ম হয়েছে; যদিও তা আগে নিশ্চিত করেননি এই অধ্যাপক।
গত বছরের নভেম্বরে ইউটিউবে পাঁচটি ভিডিও প্রকাশ করে এই জন্মদান প্রক্রিয়ার বিস্তারিত জানান তিনি। এমআইটি টেকনোলজি রিভিউ ও বার্তা সংস্থা এপি চীনা অধ্যাপকের এই জিন-সম্পাদনার খবর প্রকাশ করে।
Advertisement
অধ্যাপক জিয়ানকুই দাবি করেন, সম্পাদনার মাধ্যমে ডিএনএতে পরিবর্তন আনার কারণে এই দুই যমজ কন্যা শিশুর ভবিষ্যতে এইচআইভিতে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। অথচ তাদের বাবা এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তি।
তিনি জানান, ক্রিসপার/কাস৯ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ডিএনএ সম্পাদনা করা হয়েছে। অধ্যাপক জিয়ানকুইর দাবি সঠিক কিনা তা যাচাই করা না হলেও সেই সময় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে। তবে তিনি যে বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করেন, সেই বিশ্ববিদ্যালয় এক বিবৃতিতে তার কাজের সমালোচনা করে। সেই সময় অধ্যাপক জিয়ানকুইয়ের কাজ অ্যাকাডেমিক নৈতিকতা ও নীতিমালার মারাত্মক লঙ্ঘন বলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানায়। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের জিনতত্ত্বের অধ্যাপক জয়েস হার্পার চীনা অধ্যাপকের এই গবেষণাকে বিপজ্জনক বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। জিন সম্পাদনার মাধ্যমে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত রোগ নির্মূল করা গেলেও প্রক্রিয়াটি নিয়ে বিতর্ক আছে।
সূত্র : এএফপি।
এসআইএস/পিআর
Advertisement