দেশজুড়ে

এমপির গুলিতে শিশু আহতের ঘটনায় এলাকাবাসীর ক্ষোভ

গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে স্থানীয় সংসদ সদস্যের হাতে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র সৌরভ গুলিবিদ্ধ হওয়ার ঘটনায় বিচারের দাবিতে এলাকায় বিক্ষোভ করেছে স্থানীয়রা।এদিকে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ ও পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় শিশুটির গুলিবিদ্ধ হওয়ার সত্যতা স্বীকার করলেও তারা বলেন, তদন্ত শেষে বলা যাবে কে গুলি করেছেন। তারা আরো বলেন, ঘটনার সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক না কেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে এসে সুন্দরগঞ্জ পৌর মেয়র আব্দুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, সুন্দরগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন এর আগেও একাধিকবার মদ্যপ অবস্থায় সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গভীর রাতে ফাকা গুলি ছোঁড়েন। সুন্দরগঞ্জ উপজেলার বামনডাঙ্গা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বিষ্ণু রাম রায় জানান, সংসদ সদস্য লিটন এর আগেও উপজেলার বামনডাঙ্গার চৌরাস্তা মোড়, রেলস্টেশন, শিববাড়ী মোড়, কানার মোড়, পাইটকাপাড়া মোড়সহ বিভিন্ন এলাকায় রাত বিরাতে গুলি ছুঁড়ে মানুষের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করেনতিনি বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যখন দিনরাত পরিশ্রম করে একটি সুখী সমৃদ্ধ দেশ গঠন করছেন তখন একজন সাংসদের এমন আচরণ মানুষের মধ্যে দল সম্পর্কে নেতিবাচক ধারণার জন্ম দিবে। উপজেলা বাসদ (মার্ক্সসবাদী) আহ্বায়ক বিরেন চন্দ্র শীল বলেন, একজন সংসদ সদস্য যিনি মানুষের নিরাপত্তা প্রদান করবেন তার কাছে এমন আচরণ অপ্রত্যাশিত। অবশ্যই তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসা দরকার। শুক্রবার ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে সুন্দরগঞ্জের গোপালচরণ ব্র্যাকমোড়ে ওই শিশুটি গুলিবিদ্ধ হয়। আহত স্কুলছাত্র সৌরভ রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের ১৮ নং বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। শিশুটির বাবা সাজু মিয়া জানায়, সৌরভ ভোরে ঘুম থেকে উঠে রাস্তায় হাঁটাহাঁটি করছিল। এ সময় সংসদ সদস্য লিটন ব্র্যাক মোড়ে গাড়ি থামিয়ে সৌরভকে ডাক দেয়। সৌরভ সাড়া না দিলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে তার দু’পায়ের হাঁটুর নিচে গুলিবিদ্ধ হয়। এ সময় স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে সুন্দরগঞ্জ মেডিকেলে নিলে সকাল ৬.১০ মিনিটে তাকে চিকিৎসকরা রংপুর মেডিকেলে স্থানান্তর করে। মেডিকেলে যাওয়ার পথেও এমপি লিটন ও তার লোকজন সৌরভকে বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটির গতিরোধ করে এবং ড্রাইভারকে গুলি করার ভয় দেখিয়ে তাকে নামিয়ে নেয়। পরে তারা কৌশলে সেখান থেকে রংপুর মেডিকেলে যান। এদিকে পুলিশ ওই ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী তাজুল ইসলাম ও তার স্ত্রী শিউলি বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গেছেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে যেকোন ধরনের সহিংসতা এড়াতে পুলিশ সুন্দরগঞ্জ থানায় একটি জলকামান নিয়ে এসেছে। শুক্রবার দুপুরের পর পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল ইসলামের সঙ্গে আবারো যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, রংপুরে চিকিৎসাধীন শিশুটিকে তিনি দেখেছেন। সে এখন আশঙ্কামুক্ত। তিনি বলেন, পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা দেয়া হলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অমিত দাশ/এসএস/পিআর

Advertisement