ইসলামিক স্টেটস অব ইরাক অ্যান্ড সিরিয়া (আইএসআইএস)। সংক্ষেপে ইসলামিক স্টেটস (আইএস)। আন্তর্জাতিক এই সন্ত্রাসী সংগঠনটি গত মে মাস থেকে বাংলাদেশে নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে বলে জানিয়েছিল ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)। তবে সম্প্রতি ইতালিয়ান নাগরিক সিজার তাবেলার হত্যার দায় স্বীকারের পর বাংলাদেশের আইএসের কোন অস্তিত্ব নেই বলে দাবি করছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।গত মে মাসে বারিধারা ডিওএইচএস এলাকা থেকে আব্দুল্লাহ আল গালিব নামে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী সংগঠন আইএসআইএসের ১ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। যা গত ৩১ মে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছিল ডিএমপি।গালিব ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন সময় আইএসের বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসাবে তার নিজ বাসায় বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান হতে কর্মী সংগ্রহ ও লোকদের আশ্রয় প্রদান করে ও প্রশিক্ষণ দিতেন। সেদিন সাংবাদিক ডেকে সংবাদ সম্মেলনে গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উত্তর বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) শেখ নাজমুল আলম বলেছিলেন, গালিব আইএস বাংলাদেশের সহ-সমন্বয়ক। আইএসের আদলেই বাংলাদেশে নতুন জঙ্গি সংগঠন ‘বাংলাদেশে জুনুদ আল তাওহীদ ওয়াল খিলাফাহ’ তৈরির কাজ করতো সে।এর সপ্তাহখানেক পর আরেক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ডিএমপি জানায়, বনানী ডিওএইচএস এলাকা থেকে আইএসের ১ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে ডিবি। গ্রেফতারকৃতের নাম ফিদা মুনতাসির সাকের।পরে সেদিনই সংবাদ সম্মেলন করে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার (ক্রাইম) কৃষ্ণপদ রায় জানান, সাকের ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিভিন্ন সময়ে আইএস এর বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে তার নিজ বাসায় বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কর্মী সংগ্রহ, আশ্রয় ও প্রশিক্ষণ দেন।তবে এর ৩ মাস পর গুলশানের কূটনৈতিক পাড়ায় খুন হন ইতালিয়ান নাগরিক সিজার তাবেলা (৫০)। হত্যার পর দায় স্বীকার করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠায় আইএস। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে আত্মপ্রকাশের আনুষ্ঠানিক ঘোষণাও দেয় তারা। তবে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলন করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদশের আইএসের কোন অস্তিত্ব নেই। আইএসের দাবি সত্য কি-না খতিয়ে দেখা হচ্ছে।এর আগে আইএসের নামে যাদের গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে তাদের বিষয়ে জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের সন্দেহভাজনভাবে গ্রেফতার করা হয়েছিল।’তবে পুলিশের দেয়া সংবাদ বিজ্ঞপ্তির কোথাও ‘সন্দেহ’ শব্দটি লেখা ছিল না। এমনকি সংবাদ সম্মেলনেও ‘সন্দেহের’ কথাটি উচ্চারণ করেননি দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কেউই।ইতালিয়ান নাগরিক হত্যাকাণ্ড ও আইএসের অস্তিত্ব সম্পর্কে ডিবির যুগ্ম-কমিশনার মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘দায় স্বীকারের বার্তাটির সত্যিই আইএসের কি-না তা যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে।’এদিকে বাংলাদেশে আইএসের উপস্থিতি নিয়ে সম্প্রতি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ভারতীয় দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া। এক জ্যেষ্ঠ ভারতীয় গোয়েন্দা কর্মকর্তার বরাত দিয়ে পত্রিকাটি জানায়, বাংলাদেশে আইএসের সরাসরি উপস্থিতির বিষয়ে কোনো প্রমাণ নেই। তবে দেশটিতে উদ্বেগজনক মাত্রায় উগ্রপন্থী গোষ্ঠীর বিস্তার ঘটছে। এরা সন্ত্রাসবাদের পরিষ্কার হুমকি তৈরি করছে। ইতালিয়ান নাগরিকের হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি হয়তো আইএসের প্রতি সহানুভূতিশীল কারো একাকী বিচ্ছিন্ন হামলা।এআর/আরএস/পিআর
Advertisement