দেশজুড়ে

গাইবান্ধার সাংসদ লিটনের গুলিতে শিশু আহত

গাইবান্ধা-১ (সুন্দরগঞ্জ) আসনের সংসদ সদস্য মো. মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের গাড়ি থেকে ছোড়া গুলিতে শুক্রবার ভোরে সৌরভ মিয়া (৮) নামে এক শিশু গুরুতর আহত হয়েছে। ওই শিশুটি ভোরে রাস্তায় জগিং করছিলো। সুন্দরগঞ্জ পৌরসভার ব্র্যাক মোড় গোপালচরণ এলাকায় শুক্রবার ভোর সাড়ে ৫টায় এ ঘটনা  ঘটে। এলাকাবাসী জানান, সংসদ সদস্যের ছোড়া গুলিতেই ওই ঘটনা ঘটেছে। গুরুতর আহত সৌরভকে প্রথমে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সৌরভ ওই উপজেলার দহবন্দ ইউনিয়নের গোপালচরণ গ্রামের সাজু মিয়ার ছেলে। সে হুড়াভায়া খাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র। এলাকাবাসী জানান, সংসদ সদস্য মঞ্জুরুল ইসলাম লিটন ভোরে গাড়িতে করে বামনডাঙ্গা থেকে সুন্দরগঞ্জ যাচ্ছিলেন। এসময় তিনি বামনডাঙ্গা-সুন্দরগঞ্জ সড়কে ব্র্যাক মোড়ের পশ্চিম পাশে গোপালচরণ এলাকায় পৌঁছে এক ব্যক্তিকে তার গাড়িতে উঠতে জোরাজুরি শুরু করেন। কিন্তু ওই ব্যক্তি তার আচরণে ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে গাড়িতে না উঠে দৌড়ে পালান। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সংসদ সদস্য লিটন তাকে লক্ষ্য করে বন্দুক দিয়ে পরপর দুই রাউন্ড গুলি ছোঁড়েন। কিন্তু তা লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে  রাস্তায় জগিংরত সৌরভের দুই পায়ে গিয়ে লাগে। সে চিৎকার করে রাস্তায় লুটিয়ে পড়ে। আশে পাশের লোকজন ছুটে এলে সংসদ সদস্য গাড়ি নিয়ে দ্রুত সরে পড়েন। প্রথমে তাকে উদ্ধার করে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়া  হয়। তার শারীরিক অবস্থার  অবনতি হলে তাকে সেখান থেকে নিয়ে গিয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সৌরভের চাচা সাজা মিয়া অভিযোগ করে বলেন, প্রতিদিন সকালে তিনি সৌরভকে নিয়ে রাস্তায় হাঁটাহাটি ও ব্যায়াম করেন। শুক্রবার ভোরেও তিনি সৌরভকে নিয়ে রাস্তায় হাঁটছিলেন। কিন্তু সাংসদ লিটন হঠাৎ করে গুলি ছুড়ে কেন ওই ঘটনা ঘটালেন তা তার বোধগম্য নয়।  এদিকে আহত শিশুটিকে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে রংপুর  নিয়ে যাওয়ায় পথে সংসদ সদস্যের নিজ এলাকা বামনডাঙ্গায় তার লোকজন গাড়িটি দীর্ঘক্ষণ আটক করে রাখে। পরে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে শিশুটিকে রংপুর পাঠানোর ব্যবস্থা করে।   সুন্দরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) জিন্নাত আলী গুলিতে শিশু আহতের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও কিভাবে বা কে গুলি করেছে সে বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি। তিনি জানান, খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। পুলিশের পক্ষ থেকে  ঘটনাটি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। সুন্দরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবদুল হাই মিলটন জাগো নিউজকে জানান, শিশুটিকে বহনকারী গাড়ি আটক করার কথা শুনে তিনি ঘটনাস্থলে যান। তবে কিভাবে শিশুর পায়ে গুলি লেগেছে এ বিষয়ে তিনিও নিশ্চিত করে কিছু বলেননি।  খবর পেয়ে গাইবান্ধা থেকে জেলা প্রশাসক মো. আব্দুস সামাদ এবং পুলিশ সুপার মো. আশরাফুল ইসলাম সুন্দরগঞ্জ যান। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত তারা সেখানে অবস্থান করছিলেন। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা কোনো মন্তব্য করেননি। এ ব্যপারে সংসদ সদস্য মো. মঞ্জুরুল ইসলাম লিটনের সঙ্গে তার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়। রংপুর মেডিকেল কলেজের রেজিস্ট্রার ডা. মাহফুজুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, অপারেশন করে শিশুটির ২ পায়ের গুলি বের করতে হবে। বর্তমানে সে ৫নং ওয়ার্ডের ১৮ নম্বর বেডে আছে।অমিত দাশ/এমজেড/এমএস

Advertisement