লাইফস্টাইল

জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল থেকে হতে পারে স্তন ক্যান্সার!

স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত নারীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে দিনদিন। এ নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে সারা বিশ্বে নানা প্রয়াস চালানো হচ্ছে। সচেতন থাকলে এই রোগ থেকে দূরে থাকা সম্ভব হয়। অনেক সময় প্রাথমিক অবস্থায় রোগ শনাক্ত হলে আরোগ্য লাভ করা সম্ভব হয়। আমেরিকার ‘ফ্রেড হোচিনসন ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টার’-এর গবেষকরা সামনে আনলেন স্তন ক্যান্সারের অন্যতম এক কারণ। অধিকাংশ মেয়েই বিয়ের পর জন্মনিয়ন্ত্রক পিল খাওয়ার অভ্যাস করেন। ঘন ঘন এই পিল খাওয়াই স্তন ক্যান্সারের অন্যতম কারণ বলে দাবি বিজ্ঞানীদের।

Advertisement

সম্প্রতি ওই ‘ফ্রেড হোচিনসন ক্যান্সার রিসার্চ সেন্টার’-এর গবেষকদের একটি রিপোর্ট প্রকাশ পেয়েছে আমেরিকার একটি হেলথ ম্যাগাজিনে। সেই তথ্য অনুসারে, ৪০-এর কমবয়সি মেয়েদের শরীরে স্তন ক্যান্সার বাসা বাঁধার অন্যতম কারণ এই বার্থ কন্ট্রোল পিল বা গর্ভনিরোধক বড়ি।

সঙ্গমের পরেই মুড়িমুড়কির মতো কথায় কথায় এই ওষুধ গ্রহণ করেন অনেক মেয়েই। অনেকেই খানিকটা সাবধান হয়ে কম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার পিল খোঁজেন। কিন্তু গবেষণায় দেখা গিয়েছে, প্রায় সবরকম পিল ঘন ঘন ব্যবহারেই স্তন ক্যান্সারের একটা ঝুঁকি থেকেই যায়।

২১ হাজার ৯৫২ জন মহিলাকে নিয়ে পরীক্ষা চালান গবেষকেরা। ১০ বছর ধরে টানা পরীক্ষা চালানোর পর তারা ২০১০-এ গর্ভনিরোধক বড়িকে ‘ভিলেন’ হিসেবে সন্দেহ করেন। সাম্প্রতিক পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে, এই ২১ হাজার ৯৫২ জনের মধ্যে ১১০২ জন স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর অধিকাংশেরই এই ধরনের পিল খাওয়া অভ্যাস ছিল।

Advertisement

গবেষণা চলাকালীন, টানা ১০ বছরে যারা নতুন করে এই পিল নেয়া শুরু করেছিলেন তাদের প্রায় ৬৪ শতাংশের ক্ষেত্রেই এই অসুখ দেখা দিয়েছে। আবার অনেকেই ১০ বছর আগে এই ওষুধ নেয়া বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এতদিন কোনো লক্ষণও ধরা পড়েনি। কিন্তু ১০ বছর পর এই রোগ নতুন করে জানান দিচ্ছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের পিল হরমোনের উপর খুবই প্রভাব ফেলে। জন্মনিরোধক পিলগুলোর কমবেশি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকেই। ইস্ট্রোজেনের মাত্রার তারতম্য ঘটায় এই ওষুধ। ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমে যাওয়ার জন্যও স্তন ক্যান্সার দেখা দিতে পারে। তবে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা সরাসরি কতটা দায়ী তা নিয়ে সারা বিশ্বে এখনও সবিস্তার গবেষণা চলছে। কিন্তু তা নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা না হলেও গর্ভনিরোধক বড়িগুলো যেভাবে হরমোনের তারতম্য ঘটায়, তা নিয়মিত নিলে ক্যান্সারের শঙ্কা খুবই বাড়ে। তাই জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য ঘন ঘন পিল নয়, বরং আস্থা রাখুন কন্ডমে।

গর্ভনিরোধক বড়ি কখনো একান্তই নিতে হলে তা নেয়ার নিয়ম, দু’টি বড়ির মধ্যে ন্যূনতম ব্যবধান কত হওয়া উচিত, হরমোনাল কোনো অসুখ আগে থেকেই থাকলে আদৌ এই ওষুধ চলবে কি না, এগুলো চিকিৎসকের থেকে জেনে তবেই এই ওষুধ নেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা।

আনন্দবাজার/এইচএন/পিআর

Advertisement