গ্যাসের প্রি-পেইড মিটার লাগানোর দায়িত্ব সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাতের হাতে তুলে দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেছেন, ‘এই উদ্যোগটা খুব ভালো। চেষ্টা করছি, যত দ্রুত পারা যায়, গ্রাহকদের কাছে প্রি-পেইড মিটার পৌঁছে দেব।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘আমি আহ্বান করব, যত প্রাইভেট সেক্টর আছে- যারা উৎপাদন করতে পারবেন, যারা ট্রেডার আছেন তারা আমদানি করে প্রি-পেইড মিটার লাগানোর ব্যবস্থা করুন। তার পাশাপাশি আমরা সরকারিভাবে যেটা লাগাচ্ছি, সেটাও অব্যাহত থাকবে।’
সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত পেট্রোবাংলায় ‘আবাসিক পর্যায়ে খোলা বাজার হতে প্রি-পেইড/স্মার্ট গ্যাস মিটার ক্রয় ও স্থাপন নীতিমালা-২০১৯’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এ জন্য ইতোমধ্যে নীতিমালাও তৈরি করেছে সরকার।
আলোচনার শুরুতে মন্ত্রী বলেন, ‘সরকারের সিদ্ধান্ত হলো, বেসরকারি খাতকে কীভাবে এখানে (গ্যাসের প্রি-পেইড মিটার লাগানো) নিয়ে আসতে পারি। এই উদ্যোগে একটা নীতিমালা তৈরি করেছি। তারা আসলে কী নীতিমালায় কাজ করবে, প্রি-পেইড মিটারের ব্যাপারে কী নীতিমালায় তারা ব্যবস্থা নিতে পারবে।’
Advertisement
বেসরকারি খাতে এ দায়িত্ব হস্তান্তরের বিষয়ে নিজের যুক্তি তুলে ধরে নসরুল হামিদ বলেন, ‘২০০৯ সালে বিশেষ আইনকে ব্যবহার করে অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে খুব দ্রুততার সাথে বিদ্যুৎ খাতে নিয়ে আসতে পেরেছি। টেন্ডারের মাধ্যমেও অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি করেছে। এখন অর্ধেকেরও বেশি বেসরকারি খাত থেকে বিদ্যুৎ আসে। অর্থাৎ বিদ্যুৎ পাওয়ার ক্ষেত্রে বেসরকারি খাত একটা বড় ভূমিকা রাখছে। বিদ্যুতের ক্ষেত্রে এখন স্মার্ট প্রি-পেইড ফ্যাক্টরি হয়ে গেছে। এসব চিন্তা করে আমরা গ্যাস সেক্টরেও বেসরকারি খাতকে উদ্বুদ্ধ করতে চাই।’
বর্তমানে গ্যাসের ৪০ লাখ গ্রাহক উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য হলো কত দ্রুত গ্রাহকের কাছে মিটার পৌঁছানো যায়। প্রথমে শুরু করলাম প্রি-পেইড মিটার দিয়ে, এর পরবর্তী ধাপ হলো স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার। যাতে করে আপনারা ঘরে বসেই বিল দিতে পারেন।’
গ্যাস মিটার করলে ব্যবসা হবে কি না- এর জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘যেসব কোম্পানি সারা দুনিয়ায় মিটার বানায়, তারাই কিন্তু একমাত্র মিটার বানায় না। গ্যাস সেক্টরে তিন/চার রকমের মিটার তৈরি হয়। তাছাড়া বিদ্যুৎ, পানি অনেক রকমের মিটার হয়। আমাদের এখানে চালুও আছে। তারা প্রি-পেইড, স্মার্ট প্রি-পেইড মিটার বানাচ্ছে।’
শীত আসার কারণে গ্যাসের প্রেসার কিছুটা কমে গেছে বলে জানান মন্ত্রী। বলেন, ‘তাপমাত্রার জন্য অনেক সময় এ সমস্যা হয়। আমরা যদি প্রেসার বাড়িয়ে দেই, ঢাকা শহরে বড় বড় লিংকেজ আছে। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। প্রেসার বাড়িয়ে দিলে আরও গ্যাস অপচয় হবে। তাই আপনাদের বলব, একটু ধৈর্য ধরুন। আমরা চেষ্টা করছি, কত দ্রুত এর সমাধান করা যায়।’
Advertisement
তিনি বলেন, ‘যারা মিটার উৎপাদন করবে, তাদেরকে এপিআইসহ আরও একটি সার্টিফিকেট নিতে হবে। যদি সেটা থাকে, সেটা যাচাই করবে সরকারের ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি।’
গ্যাসের অপচয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এগুলোর জন্য পেট্রোবাংলা অনেক প্রকল্প নিচ্ছে। হয় তো কিছু ধীরগতি।’
পিডি/আরএস/এমএস