জাতীয়

৭২ ঘণ্টা পরও অধরা সিজারের হত্যাকারীরা

ইতালিয়ান নাগরিক সিজার তাভেল্লা (Cesare Tavella) হত্যাকাণ্ডের ঘটনার ৭২ ঘণ্টা পার হলেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কোনো সংস্থা। এঘটনায় এখন পর্যন্ত খুনিরা শনাক্তও হয়নি। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়েও গোয়েন্দা পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বলছেন, খুনের মোটিভও ধরতে পারছেন না তারা।গত সোমবার গুলশান-২ নম্বর কূটনীতিক এলাকার ৯০ নম্বর সড়কে ইতালিয়ান নাগরিক সিজার তাবেলাকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। হত্যাকাণ্ডের পর ইসলামিক স্টার্ট নামে একটি সংগঠন তাকে হত্যার দায় স্বীকার করলেও এবিষয়টি নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশ।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, আইএস এই ঘটনায় সঙ্গে জড়িত নয়। বাংলাদেশে আইএসের কোনো অস্তিত্বও অস্বীকার করেছেন তিনি। এ সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করে আইএসের অস্তিত্ব অস্বীকারের বিষয়টি জানান দেয়ার চেষ্টা করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।নিহত সিজার নেদারল্যান্ডসভিত্তিক আইসিসিও-বাংলাদেশ নামের একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রুফস প্রকল্পের ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করতেন। এঘটনায় মঙ্গলবার সকালে নিহতের প্রতিষ্ঠানের কান্ট্রি ডিরেক্টর সহকর্মী হেলেন ভেন্দার বিক বাদী হয়ে গুলশান থানায় একটি হত্যা মামলাটি দায়ের (মামলা নং ৬৮) করেন।তবে এঘটনায় এখনো কাউকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি বলে জাগো নিউজকে নিশ্চিত করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংস্থাগুলো।এদিকে সিজার হত্যার ঘটনায় বিশেষ তদন্ত কমিটি গঠন করেছে পুলিশ হেড কোয়ার্টার্স। কমিটির প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মোঃ মনিরুল ইসলামকে। কমিটিকে সহযোগিতা করতে বাংলাদেশ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের বাছাই করা দক্ষ ও চৌকস কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে একটি তদন্ত ইউনিট গঠন করা হয়েছে। সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মো. রেজাউল হায়দারকে এই টিমের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।বৃহস্পতিবার দুপুরে তাবেলা সিজারের হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মনিরুল ইসলাম। পরিদর্শন শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে তৃতীয় কোনো পক্ষ ইতালিয়ান নাগরিক সিজার তাবেলাকে (৫০) হত্যা করেছে কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।মনিরুল ইসলাম বলেন, তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত কাজ চলছে। বিষয় তিনটি হলো তাবেলা সিজারের ব্যক্তিগত কোনো শত্রু ছিলো কি-না, প্রাতিষ্ঠানিক কোনো ঝামেলা ছিলো কি-না এবং আইএস যে বিবৃতি দিয়েছে তার কোনো সত্যতা আছে কি-না। সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে তৃতীয় কোনো পক্ষ এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে কি-না; বিষয়টি আমরা তদন্তে যাচাই-বাচাই করছি।তিনি আরো বলেন, সিজারকে গুলি করার সময় উপস্থিত কোনো প্রত্যক্ষদর্শীকে পাওয়া যায়নি। তবে পরবর্তী সময়ে সেখানে ছিল এমন কয়েকজনের সঙ্গে কথা হয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে গসিপ লিখছে আমরা সেগুলো কানে না দিয়ে তদন্ত কাজ করছি।তদন্তের অগ্রগতির বিষয়ে গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) মোস্তাক আহমেদ বলেন, এঘটনার পর হত্যাকাণ্ড এলাকার আশপাশের ক্লোজ সার্কিড ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে।তিনি বলেন, সিসিটিভির ক্যামেরা ফুটেজেও অন্ধকার ছবি আসছে। যে কারণে খুনিদের শনাক্ত করাও কঠিন হয়ে পড়েছে। খুনিরা পরিকল্পনা করেই এ কাজ করেছে। তাদের শনাক্তকরণ ও গ্রেফতারে সর্বোচ্চ চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।জেইউ/বিএ

Advertisement