জাগো জবস

চাকরির জন্য নিজের দক্ষতা বাড়াতে হবে

মো. রওশন আলী বুলবুল। সদা হাস্যোজ্জ্বল মানুষটি পেশায় এইচআর কর্মকর্তা। বর্তমানে কর্মরত আছেন ওয়ালটন গ্রুপের মানবসম্পদ উন্নয়নে। বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানিতে ১১ বছরেরও বেশি সময় কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। এই পেশার নানা দিক নিয়ে তিনি কথা বলেছেন জাগো নিউজের সঙ্গে। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বেনজির আবরার—

Advertisement

শুরুতেই আপনার ক্যারিয়ার সম্পর্কে বলুন—মো. রওশন আলী বুলবুল: দীর্ঘদিন ধরে এইচআর ও অন্যান্য সেক্টরে কাজ করছি। প্রশিক্ষক, বিভিন্ন বিষয়ের পরামর্শক, কলাম লেখক এবং পাবলিক স্পিকার হিসাবে কাজ করছি। বর্তমানে ওয়ালটন গ্রুপের উপ-পরিচালক (এইচআরএম) হিসাবে কর্মরত আছি। এর আগে প্রাইম ফাইন্যান্সিয়াল গ্রুপ, বেঙ্গল গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজসহ বিভিন্ন বহুজাতিক কোম্পানিতে ১১ বছরেরও বেশি সময় কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। একটি কোম্পানির চেঞ্জ ম্যানেজমেন্ট, সাংগঠনিক সংস্কৃতি, সাংগঠনিক উন্নয়ন, পারফরম্যান্স ম্যানেজমেন্ট, রিক্রুটমেন্ট, ট্রেনিং অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট ও কর্পোরেট রিলেশনের ওপর কাজের অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমি এক ভাই ও এক বোনের মধ্যে ছোট। আমার বাবা সরকারি ব্যাংকে কর্মরত ছিলেন।

গ্রিন এইচআর প্রফেশনালসের মূল লক্ষ্য কী?মো. রওশন আলী বুলবুল: অ্যালায়েন্স অব গ্রিন এইচআর প্রফেশনালস বাংলাদেশের (জিএইচআরপিবি) প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আমি। বাংলাদেশ নিয়ে অনেক বড় স্বপ্ন দেখি। আমি মনে করি, বড় স্বপ্ন দেখার মাধ্যমেই সমাজকে পরিবর্তন করা সম্ভব। দৃঢ়ভাবে সবার আগে একজনকে ভালো মানুষ হতে হবে। নিজের দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে সবাইকে দেখলে হবে না। অন্যের দৃষ্টিতেও নিজেকে দেখতে হবে।

তরুণদের দক্ষতা উন্নয়নে কী কী করছেন?মো. রওশন আলী বুলবুল: তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থানের উপযোগী করে গড়ে তুলতে এবং যারা ইতোমধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে কাজ করছেন, তাদের দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে গ্রিন এইচআর প্রফেশনালস বাংলাদেশ। গ্রিন এইচআর প্রফেশনালস মানুষকে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষতা বাড়াতে কাজ করে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি প্রতি মাসে একটি করে কর্মশালার আয়োজন করছে। ভবিষ্যতে আমাদের পরিকল্পনা হলো, নতুন চাকরিপ্রার্থীদের কাউন্সিলিং করে ক্যারিয়ার ডেভেলপ করতে সহায়তা করা। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, দেশের প্রত্যেক প্রতিষ্ঠানে গ্রিন এইচআরের গ্রাউন্ড তৈরি করা। এছাড়া নতুন নতুন আইডিয়া ও জ্ঞান আহরণ করা। পাশাপাশি পেশাগত জীবনে দক্ষতা অর্জন করা। এ সংগঠনের যাত্রা শুরু হয় ২০১৬ সালে। আমাদের পরবর্তী উদ্দেশ্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে যুক্ত হওয়া। কারণ স্টুডেন্টরা যদি তাদের শিক্ষাজীবনে গ্রিন এইচআর সম্পর্কে ধারণা পায়, তাহলে কর্মজীবনের শুরুতেই তাদের প্রতিষ্ঠানে এটি কাজে লাগাতে পারবে।

Advertisement

সংগঠনটি পেশাজীবীর জীবনে কেমন ভূমিকা রাখবে?মো. রওশন আলী বুলবুল: আমরা প্রতিটি কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানে গ্রিন এইচআর প্রতিষ্ঠা করার জন্য কাজ করছি, যাতে মালিকপক্ষ ও চাকরিজীবী—সবাই উপকৃত হয়। এছাড়া বিভিন্ন সামাজিক কাজেও সংগঠনটি নিয়মিত অংশগ্রহণ করছে। আমরা জীবনে প্রচুর সময় নষ্ট করছি ফেসবুক, ইউটিউব, টেলিভিশন এবং মোবাইলে। আর বলছি আমাদের হাতে সময় নেই। এসব কারণে আমাদের অভ্যাসগুলো দিন দিন নেতিবাচক হয়ে যাচ্ছে। আমরা চাইলে সময়গুলো ইতিবাচক কাজে লাগাতে পারি। সে ভাবনা থেকেই গ্রিন এইচআরের যাত্রা শুরু। এইচআরদের এ ব্যতিক্রমধর্মী প্ল্যাটফর্ম, সব পেশাজীবীর যোগাযোগ তৈরিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তাই প্রতি শুক্রবার সকালে স্টাডি সার্কেলের মাধ্যমে সবাই নতুন নতুন অনেক কিছু শিখতে পারছে। যা আমাদের সবার অফিসিয়াল ও পার্সোনাল লাইফে কাজে লাগবে। ইতোমধ্যে আমরা এ পাঠচক্রের ৫৫তম সপ্তাহ শেষ করেছি।

চাকরিপ্রার্থীদের জন্য আপনার পরামর্শ—মো. রওশন আলী বুলবুল: সবার আগে লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে। প্রতিষ্ঠানগুলো যোগ্য প্রার্থী পায় না। আর তরুণরা বলে আমরা চাকরি পাই না। তাহলে সমস্যা কোথায়? আমি তরুণদের উদ্দেশে বলব, সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে নিজেকে কর্ম উপযোগী হিসাবে গড়ে তুলতে হবে। আর ছোট-বড় যে সুযোগই পান, তা দিয়ে শুরু করতে হবে। যারা ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কাজ করছেন; তাদের সাথে সম্পর্ক রাখতে হবে। অবশ্যই বিনয়ী হতে হবে। চাকরি অনুযায়ী নিজের সিভি তৈরি করতে হবে। শুধু চাকরি চাই চাকরি চাই বললে হবে না। চাকরির জন্য যে দক্ষতাগুলো দরকার; সে দক্ষতাগুলো নিজের ভেতর আনতে হবে! তাহলে দেখবেন, আপনার কনফিডেন্স বেড়ে গেছে। ফলে চাকরি পেতেও কোনো সমস্যা হবে না।

এসইউ/এমকেএইচ

Advertisement