মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আটক সংসদ সদস্য এম এ হান্নানের বিষয়ে নিশ্চুপ জাতীয় পার্টি (জাপা)। বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানের নিজ বাসা থেকে ছেলেসহ তাকে গ্রেফতার করে বনানী থানা পুলিশ। সংসদের বিরোধী দলের এ সদস্য গ্রেফতার হলেও এ বিষয়ে দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।জাগো নিউজের এ প্রতিবেদক জাপার শীর্ষ মহলের বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোনো সাড়া মেলেনি। যেন মুখে কুলুপ এঁটেছেন দলের প্রায় সকল নেতাই। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক নেতা বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের সঙ্গে জাপা কোনো প্রকার আপোস করবে না। যে নেতা মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত হবেন তাকেই প্রমাণ করতে হবে তিনি নিরপরাধ।দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য কাজী ফিরোজ রশিদ এবং জিএম কাদেরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা ব্যক্তিগতভাবে এ বিষয়ে কোনো কথা বলতে রাজি নন বলে জানিয়েছেন। শুধুমাত্র তাদের দলীয় প্রধান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদই প্রয়োজন বোধে কথা বলবেন বলে জানান তারা।এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হিসেবে নিযুক্ত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদ বিভিন্ন সময় সরকারবিরোধী কথাবার্তা বললেও মানবতাবিরোধী অপরাধ ইস্যুতে সবসময়ই নীরব ভূমিকা পালন করে আসছেন। ইতোমধ্যে এ অভিযোগে দলের সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী সৈয়দ মোহাম্মদ কায়সার, সাবেক এমপি ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল জব্বার ও মোবারক হোসেন আটক হলেও দলের পক্ষ থেকে কোনো কথা বলা হয়নি।বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় এরশাদের ব্যক্তিগত মোবাইলে কল করা হলে তিনি তা রিসিভ করেননি। পরে তার একান্ত সচিব মেজর (অব.) খালেদ আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, স্যার এ মুহূর্তে কোনো কথা বলবেন না। পরে এরশাদের বনানী অফিসের প্রেস উইংয়ের সদস্য আবদুর রহিমের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান এখন পর্যন্ত কোনো সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানোর নির্দেশনা পাইনি। এর আগেও জাপার একাধিক নেতা মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলা ও সাজাভোগ করলেও কোনো কথাই বলা হয়নি দলের পক্ষ থেকে। তবে দায় এড়ানোর জন্য গ্রেফতারকৃতরা দলের সক্রিয় সদস্য ছিলেন না বলে জানানো হয়। এবার সংসদ সদস্য গ্রেফতার হলেও একই পথে হাঁটবে হাইকমান্ড বলে মনে করছেন অনেকেই। উল্লেখ্য, গত ১৯ মে হান্নানসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে মামলা করেন শহীদ মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুর রহমানের স্ত্রী রহিমা খাতুন। ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ১নং আমলি আদালতে আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনালস) আইন’ ১৯৭৩ এর ৩ (২) ধারায় এ মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলাটি আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠিয়ে দেন আদালতের বিচারক আহসান হাবিব। প্রসিকিউশনের আবেদনের ভিত্তিতে এমপি এম এ হান্নানসহ ময়মনসিংহের আট আসামির বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। পরোয়ানা জারির পর পরই গ্রেফতার অভিযানে নামে পুলিশ।এএম/এএইচ/পিআর
Advertisement