তথাকথিত অনুপ্রবেশের নামে জাতীয় নাগরিক নিবন্ধন (এনআরসি) আর মুসলিমবিরোধী নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের (সিএএ) বিষয়ে এবার মুখ খুললেন কলকাতার টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের পরিচিত মুখ সায়নী ঘোষ। তার প্রশ্ন-এনআরসিতে নিজের নাগরিকত্ব প্রমাণ করতে হবে। আর সিএএ-তে নিজেকে প্রমাণ করতে হবে উদ্বাস্তু! একসঙ্গে দুটো কী করে সম্ভব? তিনি আরও জানতে চেয়েছেন, নাগরিকত্ব প্রমাণের জন্য জন্মনিবন্ধন সনদ, ভেটার কার্ড, আধার কার্ড, প্যান কার্ড রয়েছে। কিন্তু ধর্মীয় কারণে আমি এদেশে শরণার্থী, সেটা কী করে প্রমাণ করব।
Advertisement
রোববার বিকেল ৫টা ২৭ মিনিটে ফেসবুক লাইভে আসেন অভিনেত্রী সায়নী। লাইভে ‘ভারত হামকো জান সে পেয়ারা হেইন’ পোস্ট দিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
চলতি মাসে ভারতে পাস হয়েছে বিতর্কিত নাগরিকত্ব (সংশোধন) বিল। ১৯৫৫ সালের ভারতীয় নাগরিকত্ব আইনে এই সংশোধনের ফলে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত হয়ে চলে আসা হিন্দু, শিখ, খ্রিষ্টান, জৈন, পারসি ও বৌদ্ধধর্মাবলম্বীরা ভারতের নাগরিকত্ব পাবেন। শুধু এ সুযোগ পাবেন না মুসলমানরা। অন্যদিকে, কয়েক মাস আগে আসামে এনআরসির তালিকা প্রকাশ করার মাধ্যমে ১৯ লাখের বেশি মানুষের নাগরিকত্ব হরণ করা হয়েছে। নাগরিকত্ব হারানো মানুষের অধিকাংশই হলেন বাংলাভাষী হিন্দু-মুসলিম। বিজেপি সরকার ঘোষণা দিয়েছে, ক্রমান্বয়ে অন্য রাজ্যগুলোতেও এনআরসির তালিকা প্রকাশ করা হবে।
অভিনেত্রী বলেন, ‘সিএএর অন্তর্ভুক্ত হবেন হিন্দু, জৈন, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ, পার্সিসহ সমস্ত ধর্মাবলম্বী। তালিকা থেকে বাদ কেবল মুসলিমরা। অর্থাৎ, সরকার ভেবেচিন্তেই পদক্ষেপ করছেন। হিন্দু-মুসলিমের ভেদনীতিকে কাজে লাগিয়ে। গো-রক্ষা, গো-মাংস ভক্ষণ নিয়ে গত কয়েক বছর ধরে দেশে হাঙ্গামা ছড়ানোর পর এবার এই নয়া আইন। কিন্তু কেন্দ্র কি জানে না, ভারতের মতো ধর্মনিরপেক্ষ দেশে এমনটা হওয়ার উপায় নেই! আমার তো মুসলিমদের সঙ্গে থাকতে কোনো আপত্তি নেই। অন্যদেরও নেই। তাহলে মুসলিমদের নিয়ে প্রকৃত সমস্যা কার? সাধারণের না সরকারের?’
Advertisement
এর আগে ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের কড়া সমালোচনা করে সাড়া জাগানো বার্তা দিয়ে দেশটিতে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসেন ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ডের (বিসিসিআই) সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলির মেয়ে সানা গাঙ্গুলি।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে তিনি লেখেন, ‘আজ যারা আমরা নিজেদের নিরাপদ মনে করছি, ভাবছি আমরা তো মুসলমান বা খ্রিষ্টান নই, তারা মূর্খের স্বর্গে বাস করছি।’
এসআর/পিআর
Advertisement