ক্যাম্পাস

ভিপি নুরের ওপর হামলা, বিএনপিপন্থী শিক্ষকদের প্রতিবাদ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্রসংসদ ভবনে ঢুকে ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুর ও ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর সন্ত্রাসীদের হামলার ঘটনার প্রতিবাদ ও বিচারের দাবি জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাদা দলের শিক্ষকরা। সাদা দল হলো- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএনপি ও জামায়াতপন্থী শিক্ষকদের একটি সংগঠন।

Advertisement

রোববার (২২ ডিসেম্বর) এক বিজ্ঞপ্তিতে হামলার নিন্দা ও বিচারের দাবি জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ডাকসু ভবনে ভিপির রুমে ঢুকে ডাকসু ভিপি নুরুল হক নুরসহ তার নেতৃত্বাধীন ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ ও ছাত্রলীগ নামধারী সন্ত্রাসীদের ন্যক্কারজনক হামলায় ১৫ জনেরও বেশি শিক্ষার্থী আহত হওয়ার ঘটনার আমরা তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই।

সেখানে উল্লেখ করা হয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা হয় গণতন্ত্রের সুতিকাগার, মুক্তবুদ্ধি চর্চা ও লালনের কেন্দ্র। এখানে ছাত্র-শিক্ষকসহ সব ছাত্র সংগঠন, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন স্বাধীনভাবে তাদের মত প্রকাশ করবে, কার্যক্রম চালাবে, এটাই প্রত্যাশিত এবং ঢাবির ঐতিহ্যও তাই। কিন্তু আমরা অত্যন্ত পরিতাপের সঙ্গে লক্ষ্য করছি যে, জাতীয় রাজনীতিতে যেমন গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়েছে, তেমনি আমাদের প্রিয় ঢাবিতেও। বিশ্ববিদ্যালয়ের গণতান্ত্রিক পরিবেশ বিনষ্ট করে একটি কর্তৃত্ববাদী পরিবেশ কায়েম করা হয়েছে। সরকার ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সমর্থক ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং তাদের সমর্থিত মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজেদের একক আধিপত্য বজায় রাখার অশুভ মানসিকতা নিয়ে প্রতিনিয়তই ভিন্নমতের রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের ছাত্রদের ওপর হামলা ও নির্যাতন চালাচ্ছে।

Advertisement

সাদা দলের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রুমে ঢুকে নির্বাচিত ভিপি নুরুল হক নুরসহ তার নেতৃত্বাধীন ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নেতাকর্মীদের ওপর আজকের হামলা ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের ধারাবাহিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডেরই বহিঃপ্রকাশ। উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো একটি বিশেষ ছাত্র সংগঠনের নয়, বরং দলমত নির্বিশেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষার্থীদের অভিভাবক। তাই সব শিক্ষার্থী ও ছাত্র সংগঠনের নিরাপত্তা, তাদের স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ ও কর্মকাণ্ড পরিচালনার পরিবেশ নিশ্চিত করা প্রশাসনের দায়িত্ব।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের সমালোচনা করে আরও বলা হয়, আমরা দুঃখের সাথে লক্ষ্য করছি যে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাদের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করছেন না। এমনকি একটি বিশেষ ছাত্র সংগঠনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একধরনের পরোক্ষ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক সময়ে ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের দ্বারা বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বেশ কয়েকবার হামলার ঘটনায় কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় আমাদের কাছে তা প্রতীয়মান হয়েছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন একটি পরিবেশ কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আমরা এ ন্যক্কারজনক হামলায় জড়িত ও চিহ্নিত ছাত্র নামধারী সন্ত্রাসীদের দ্রুত দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি। একই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেন সব দলমতের শিক্ষার্থী ও সংগঠন নির্বিঘ্নে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারে, সে পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্যও কর্তৃপক্ষের কাছে জোর দাবি জানাচ্ছি।

উল্লেখ্য, ডাকসু সহ-সভাপতি নুরুল হক নুর ও তার অনুসারীদের ওপর ফের হামলা চালিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের একাংশের নেতাকর্মীরা। হামলায় অন্তত ৩২ জন আহত হন। রোববার বেলা পৌনে ১টার দিকে এ হামলা চালানো হয়। এতে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও অংশ নেন বলে জানা গেছে।

এফআর/এমএস

Advertisement