দেশজুড়ে

লেপ-তোশকের কারিগররাও শীতের কবলে

শীতের প্রকোপ যতই বাড়ছে, লেপ-তোশকের চাহিদাও তত বাড়ছে। তাই এর কারিগর বা ধুনকররা এখন ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কিন্তু শীতের তীব্রতায় তারাও জবুথবু। তাই চাহিদা থাকলেও কাজ তেমন একটা করতে পারছেন না তারা।

Advertisement

গাইবান্ধার শতাধিক কারিগর খোলা আকাশের নিচে লেপ-তোশক তৈরির কাজ করেন। শীত আর হিমেল বাতাসে কাজ করতে গিয়ে হাতে সুচ বিদ্ধ হচ্ছে বলে চাহিদা অনুযায়ী লেপ-তোশক তৈরি করতে পারছে না। এ কারণে নতুন কাজের অর্ডার বাতিল করতে বাধ্য হচ্ছেন তারা।

বোনারপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের লেপ-তোশকের কারিগর স্বপন কুমার বলেন, শীতের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় লেপ-তোশক ও জাজিমের চাহিদা বেড়েছে। কিন্তু শীতের কারণে কাজ করতে পারছি না। সুচ দিয়ে সেলাই করতে কষ্ট হচ্ছে, তাই বিপাকে আছি।

তপন কুমার নামে আরেকজন বলেন, চাহিদা অনুযায়ী লেপ-তোশক তৈরি করতে আমরা হিমশিম খাচ্ছি। শীতের তীব্রতায় লেপ-তোশক তৈরির কাজ ব্যাহত হচ্ছে। শীত আরও বাড়লে হয়ত আর নতুন করে অর্ডার নেয়া যাবে না।

Advertisement

কারিগর রঞ্জন বিশ্বাস জানান, শীতের মৌসুম ছাড়া অন্য সময় লেপ-তোশকের চাহিদা কম থাকায় অর্থাভাবে তাদের জীবিকা নির্বাহ করতে অনেক কষ্ট হয়। কিন্তু শীতে প্রকোপ বাড়ার কারণে চাহিদা থাকলেও কাজ করা দুর্বিসহ হয়ে পড়েছে। হাতে সুচবিদ্ধ হচ্ছে বলে চাহিদা অনুযায়ী লেপ-তোশক তৈরি করতে পারছেন না।

সরেজমিনে দেখা যায়, গাইবান্ধা শহরের কেন্দ্রস্থল সাবেক জেলা জজ অফিসের পরিত্যক্ত খোলা মাঠে লেপ-তোশক বানানোর কাজ চলছে জোরেশোরে। অলস বসে থাকার সময় পেরিয়ে এখন হাতে অনেক কাজ জমেছে ধুনকরদের। কিন্তু শীতের কারণে হাত চলছে না। জবুথবু হয়ে আসছে, তাই ব্যাহত হচ্ছে লেপ তৈরির কাজ।

একটি তোশক তৈরি করতে মজুরি, কাপড় এবং তুলাসহ এখন মোট ব্যয় পড়ছে সাত থেকে সাড়ে সাতশ টাকা। আর জাজিম তৈরিতে ব্যয় হয় দেড় হাজার থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা পর্যন্ত। আর লেপ কভারসহ তৈরিতে ব্যয় হয় দেড় হাজার থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা।

ইতিপূর্বে শিমুল তুলায় বালিশ এবং কার্পাস তুলায় লেপ ও তোশক তৈরি হতো। কিন্তু এখন শিমুল এবং কার্পাস তুলার সবররাহ অনেক কম হওয়ায় ব্যয় বেড়েছে। বর্তমানে প্রতিকেজি শিমুল তুলা ২৫০ টাকা এবং কার্পাস তুলা ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। ফলে সংগত কারণেই লেপ-তোশক বানানোর ক্ষেত্রে ক্রেতারা গার্মেন্টের ঝুট কাপড় এবং কাপড়ের টুকরো থেকে তৈরি বিশেষ জাতের তুলা দিয়েই লেপ ও তোশক বানানোর দিকেই ঝুঁকছেন।

Advertisement

গাইবান্ধা জেলা ধুনকর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. মন্টু সর্দারের জানান, একটি লেপ তৈরির জন্য তারা এখন মজুরি নিচ্ছেন ২৫০ টাকা। এছাড়া তোশক ২২০ টাকা, বালিশ প্রতিটি ২৫ টাকা এবং জাজিমের জন্য চারশ টাকা মজুরি নেয়া হচ্ছে। এই মজুরির হার অন্য সময়ের চাইতে কিছুটা বেশি।

জাহিদ খন্দকার/এমএমজেড/পিআর