জাতীয়

শিশুরা নিকট আত্মীয়দের হাতে ধর্ষিত হচ্ছে

উইমেন সাপোর্ট অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশনের উপ-পুলিশ কমিশনার ফরিদা ইয়াসমীন বলেছেন, ছোটরা নিকট আত্মীয়দের হাতে ধর্ষিত হচ্ছে। আর দেয়ালে পিঠ ঠেকলে বিচারের জন্য নির্যাতিতরা আসে। বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ আয়োজিত যৌন হয়রানি ও নিপীড়ন নিরোধ আইন, ২০১০ (খসড়া) প্রস্তাবনা বিষয়ে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব কথা বলেন।তিনি বলেন, বাচ্চারা ফিজিক্যাল গ্রোথ বুঝে না। তারা মামা-খালু-চাচাদের দ্বারা ধর্ষিত হচ্ছে। এমনকি নানা কর্তৃকও ধর্ষিত হচ্ছে। এসব আমরা জানি, আপনারা জানেন, কিন্তু মুখ ফোটে কেউ বলছে না”।তিনি জানান, এ বছর আমরা ১৭টি মামলা দেখছি সেক্সুয়াল হেরেজম্যান্টের। আর আমাদের কাছে যে অভিযোগগুলো আসছে তার একটি শ্রেণি আছে। নিম্ন ও উচ্চবিত্তরা অভিযোগ করছে, মধ্যবিত্ত আসছে না। তারা হজম করছে, যেন তা পাবলিকের সামনে চলে না আসে। তিনি আরো বলেন, নির্যাতনের ফলে তাদের ভবিষৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। এর প্রভাব সুদুরপ্রসারী। নির্দিষ্ট আইন না হলে এসব বন্ধ হবে না। নির্যাতিত বাচ্চাদের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ১৮ এর নীচের বয়সীরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি।তিনি আরো বলেন, শুধু শাস্তি দিয়ে তা বন্ধ হবে না। কারণ যারা এ অপরাধগুলো করছে তারা সুস্থ লোক না, তাদের কারেকশন দরকার। এসময় তিনি মেয়েদের সাহসী হওয়ারও আহ্বান জানান। আলোচনায় ঢাকা মেডিকেল কলেজের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের সমন্বয়কারী ডা. বিলকিস বেগম বলেন, অনেকে যৌন হয়রানীকে খেলাধুলা মনে করছে, একে অপরাধ মনে করে না। আইনের মাধ্যমে এসব অপরাধের শাস্তি দিতে হবে। সরকার ও এনজিও ছাড়াও সবাইকে এসব প্রতিরোধে যার যার জায়গা থেকে এগিয়ে আসতে হবে। তিনি বলেন, যৌন নিযাতন কমে এলে মেয়েরা শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সবক্ষেত্রে এগিয়ে যাবে।মতবিনিময় সভায় বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের পক্ষ থেকে কয়েকটি প্রস্তাব তুলে ধরেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু।তিনি দণ্ডবিধি ১৮৬০ এর ধারা ৫০৯ এবং ঢাকা মহানগর পুলিশ অধ্যাদেশ ১৯৭৬ এর ধারা ৭৬ এ চিঠিপত্র, টেলিফোন, মোবাইল ফোন, ই-মেইল, এমএমএস, আইএম, এসএমএস, বেঞ্চ-চেয়ার-টেবিল বা নোটিস বোর্ড লিখন, নোটিস, কার্টুনের মাধ্যমে নারীকে হেয় করা বা উত্যক্ত করা; অপ্রাসংগিক যৌন বিষয় উত্থাপন করে হয়রানিমূলক আচরণ করাসহ বেশ কয়েকটি বিষয় অন্তর্ভুক্তের দাবি জানান। এছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধন ২০০৩) এর ধারা ১০ এ যৌন উস্কানিমূলক, বিদ্বেষমূলক বা উদ্দেশ্যমূলকভাবে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে কুৎসা রটনা করে সম্মানহানি করা অথবা এ উদ্দেশ্যে চলচ্চিত্র, স্থির চিত্র, ডিজিটাল ইমেজ, ফেসবুক, ব্লগ, পোস্টার, দেয়াল লিখন, চিত্র, কার্টুন, প্রচারপত্র ইত্যাদি প্রদর্শন বা প্রচার এবং স্থির বা ভিডিও চিত্র ধারণ প্রেরণ প্রদর্শণ ও প্রচার করা; যৌন কামনার উদ্দেশ্যে শরীরের যেকোন অংশ কোনভাবে স্পর্শ করা বা আঘাত করাসহ বেশ কয়েকটি বিষয় অন্তর্ভুক্তের দাবি জানান। মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি আয়শা খানম।আএসএস/এসকেডি/পিআর

Advertisement