প্রকৃতিতে এখন শীতকাল। ষড়ঋতুর এই দেশে একেকটি ঋতু একেক রূপ রঙ নিয়ে হাজির হয়। অভ্যস্ত মানুষজন প্রকৃতির এই পালাবদলের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে যান। শীত উৎসবের ঋতু বলা হলেও বয়স্কদের কাছে শীত ব্যথার ঋতু, বিশেষ করে যারা আর্থ্রারাইটিস বা অস্থিসন্ধির ব্যথায় কাবু তাদের জন্য শীত এক আতঙ্কের নাম।
Advertisement
ঠান্ডার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে যেন ব্যথা বাড়ে। তাপমাত্রা যত নামবে ব্যথার তীব্রতা তত বাড়বে। কিন্তু কেন? চিকিৎসকদের মতে, তাপমাত্রা কমলে জয়েন্ট বা অস্থিসন্ধির রক্তনালীগুলি সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে। একই সঙ্গে রক্তের তাপমাত্রাও কমে যায়। ফলে, গাঁট শক্ত হয়ে ফুলে ওঠে। এতে অনেকের ব্যথা বাড়তে থাকে।
বিষয়টির ব্যাখ্যা চিকিৎসকদের কাছ থেকে আসে এভাবে- শীতে আমাদের রক্তও তুলনামূলক ঠান্ডা হয়ে পড়ে। তাই শরীরকে উষ্ণ রাখতে আমরা এই সময় গরম পোশাক গায়ে দিই। ঠান্ডার জন্যই শরীরের অন্যান্য অংশে রক্ত সঞ্চালনের বেগ কমে যায়। ফলে, ঠান্ডা ত্বকে ব্যথার প্রভাব বেশি অনুভূত হয়। এরই আরেক নাম বাত। বয়স ৪০-এর বেশি হলে সাধারণত আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত হন মানুষ। নারীরা এ সমস্যায় পুরুষদের তুলনায় বেশি ভোগেন। আর হাঁটু যেহেতু শরীরের সমস্ত ওজন বহন করে তাই সবার আগে ক্ষতিগ্রস্ত হয় শরীরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এই অঙ্গ। রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস হলে গাঁট বা অস্থিসন্ধির পাশাপাশি শরীরের অন্যান্য অঙ্গ বা পুরো শরীরও অনেক সময় আক্রান্ত হয়। তখন শরীর জুড়ে ব্যথা, ফোলাভাব দেখা দেয়। অনেক ক্ষেত্রে হাত-পা বেঁকেও যায়। পেশি দুর্বল হয়ে পড়ে। জ্বর হয়।
কেন বয়স্করাই বেশি ভোগেন এই সমস্যায়? চিকিৎসকদের কাছে এর ব্যাখ্যা হলো- বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্যালসিয়াম ও অন্যান্য খনিজ পদার্থের ঘাটতি দেখা দেয় শরীরে। ফলাফল, হাড়ের ক্ষয়। এছাড়া, লিগামেন্টগুলোর দৈর্ঘ্য এবং নমনীয়তাও হ্রাস পায়। যার কারণে জয়েন্টগুলো ফুলে যায়।
Advertisement
এ সমস্যা এড়ানোর পরামর্শ হিসেবে প্রথমেই থাকছে রোদের কথা। সকালের নরম রোদে প্রচুর ভিটামিন ডি থাকে। তাই শীতের সকালে রোদে শরীর এলিয়ে দিয়ে বসুন। প্রচুর ভিটামিন ডি শরীরে প্রবেশ করলেই কমবে ব্যথা এবং জয়েন্টের ফোলাভাব। রোদের তাপে উষ্ণ হবে শরীর। রক্ত সঞ্চালন হবে দ্রুত।
এনএফ/এমএস